| মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
বিপিএল শেষ হবার পর থেকেই তেমন কোন খেলা নেই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। মাঝে যদিও কয়েকটি প্রথম বিভাগের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী জুলাই-আগস্টে পাকিস্তান সফরে আসার আগ পর্যন্ত কোন খেলাই নেই মিরপুরের হোম অব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
এরই ফাঁকে স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছিল বিসিবি। সে ধারাবাহিকতায় রোববার সংস্কারের কাজ শুরু করা হচ্ছে। পাকিস্তান বিপক্ষে সিরিজের আগেই এর কাজ শেষ হবে বলে আজ জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধরী সুজন।
মিরপুর শেরে বাংলার মাঠের আউটফিল্ডের সংস্কার নিয়ে সাংবাদিকদের সুজন বলেন, ‘মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, আমাদের যে শিডিউল আছে আগস্টে, তার আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। সামনে আমাদের যে সকল সিরিজ আছে সেগুলো মাথায় রেখেই কাজ করছি। কাজের অগ্রগতি আমরা পরবর্তীতে জানাতে পারবো।’
কুইন্সল্যান্ডে ফেরার সময় সঙ্গে করে মিরপুরের মাটি নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে নিজেদের ল্যাবে সেটা পরীক্ষা করেই ক্যাথ ম্যাকলফি ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কাছে।
সুপারিশ করেছিলেন, বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ড্রেনেজ ব্যবস্থার যেটুকু সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা মাঠের আপার লেভেলে। চার থেকে ছয় ইঞ্চি মাটি সরিয়ে সেখানে নতুন করে বালু দিলেই তা ঠিক হয়ে যাবে। সেই সুপারিশ পেয়েই বিসিবি থেকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল সংস্কারকাজের। টেন্ডার বাছাইয়ের পর অনিক কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান মিরপুরের আউটফিল্ড নতুন করে প্রস্তুত করে দেওয়ার কাজ পেয়েছে।
গত রোববার থেকে সেই কাজ শুরুও হয়েছে। মাটি খোঁড়া থেকে নতুন ঘাস গজানো পর্যন্ত মোট চার মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ, নতুন করে সাজতে গিয়ে এই চার মাস আর কোনো খেলা দেখাতে পারবে না শেরেবাংলা স্টেডিয়াম।
‘এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। দেড় থেকে দুই মাস লেগে যেতে পারে, তার বেশি সময়ও লাগতে পারে। আমাদের লক্ষ্য আসলে আগস্টে এই মাঠে খেলা গড়ানোর। অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ ওই প্রতিষ্ঠানটির সুপারিশেই সব হচ্ছে, তবে বুয়েটের শিক্ষকদের সাহায্য নিচ্ছি আমরা। তারাও এ কাজের পর্যবেক্ষণ করবেন।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী মনে করেন, আউটফিল্ডে এই সংস্কারের পর বর্ষা মৌসুমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে।
‘ল্যাবোস্পোর্টস’_ বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনে এই প্রতিষ্ঠানের বেশ সুনাম। সারাবিশ্বের বিভিন্ন খেলার মাঠে এরাই আউটফিল্ড সংস্কারে কাজ করে থাকে। হাইব্রিড ঘাসময় মাঠের ড্রেনেজ ব্যবস্থার নকশাও সাজিয়ে থাকে এরাই। এ প্রতিষ্ঠানেরই অস্ট্রেলিয়ার কর্ণধার ক্যাথ ম্যাকলফি ঢাকায় এসেছিলেন ১৬ জানুয়ারি। তিন দিনে মিরপুর স্টেডিয়ামের ড্রেনেজ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গিয়ে তিনিই জানিয়েছেন সংস্কার প্রয়োজন। তারই সুপারিশ পাওয়ার পর বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বুয়েটের দু’জন শিক্ষকের সঙ্গেও ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করেন।
বুয়েটের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম মিরপুরের মাটি পরীক্ষা করবেন। অস্ট্রেলিয়ান ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ অনুযায়ী আউটফিল্ডের বর্তমান ঘাস তুলে ফেলে সেখানে ছয় ইঞ্চি পরিমাণ সিলেটের মোটা বালু দিতে হবে। সেই বালুর স্ট্যান্ডার্ড মানও লিখে দিয়েছেন নোটে_ ১ দশমিক ৮ এফএম স্ট্যান্ডার্ডের বালু দিতে হবে আউটফিল্ডে। তার ওপরই বারমুডা (দূর্বা) ঘাস রোপণ করতে হবে। তাহলে বৃষ্টির পানি সহজেই মাটি শুষে আউট ফিল্ডের নিচের স্তরে পাইপে পেঁৗছতে পারবে। আপাতত বৃষ্টির পানি মাঠের বেশ কিছু জায়গায় শুষে নিতে পারছে না। সে কারণেই নতুনভাবে সংস্কার করা হচ্ছে এই স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বরটি। আপাতত পুরনো ঘাস তুলে ফেলে মাটি খুঁড়তেই ৩৫ দিন সময় লাগবে। এরপর সেন্টার উইকেট থেকে সূক্ষ্মভাবে ২৬ ইঞ্চি পর্যন্ত ঢালু রাখতে হবে পাশের আউটফিল্ড।
এর আগে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময় নিয়ে সংস্কার করা হয়েছিল আউটফিল্ড। তখন কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার পুরো তত্ত্বাবধানে হয়েছিল কাজটি। সমালোচনাও হয়েছিল, অনুযোগ ছিল আগের মতো আউটফিল্ড দ্রুতগতির ছিল না। সে কারণেই এবার অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে পুরো কাজটি করছে বিসিবি।
Posted ১১:০১ | মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain