নওগাঁ : নওগাঁর রাণীনগরে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে স্থানীয়রা হাফিজার রহমান নামে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে প্রায় ৫ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পরে সহকারী কমিশার (ভূমি) ও থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আটক শিক্ষক হাফিজার রহমান উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের মেরিয়া গ্রামের মৃত আশোক আলী দেওয়ানের ছেলে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,শিক্ষক হাফিজার রহমান বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নানান ভাবে যৌন হয়রানী করে আসছিল। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককের যৌন হয়রানীর অভিযোগে কয়েক বার মিটিংও করেছেন এলাকাবাসি। এর পরেও শিক্ষকের এমন আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় এবং শিক্ষকের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও গ্রামবাসিরা এক যোগে স্কুল ঘেরাও করে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে রাণীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও স্থানীয়দের চাপের মুখে পরে যান। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজার রহমান বিকেল তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষককে শাস্তির আশ্বাস দিয়ে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযোগকারী ছাত্রী ৫ম শ্রেণীর খুশি বানু (১২), ফাতেমা বানু (১৩), সুখী (১২), হালিমা (১৩) ও রিয়ামুনি (১০) জানায়, হাফিজুর মাষ্টার আমাদেরকে গায়ে হাত দিয়ে জামাকাপড় ধরে টানা হিঁচড়াসহ আমাদেরকে বিরক্ত করতো। এ কথা গুলো আমরা বাবা-মাকে বলেছি এবং তার বিচারের দাবিতে স্কুল ঘেরাও করেছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খুশির চাচা আজিজুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজিকে হাফিজুর মাষ্টার শ্লীলতাহানি করেছে। এর বিচারের দাবিতে আমরা গ্রামবাসী স্কুল ঘেরাও করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার ব্যাপারে আমি মেরেছি কিন্তু শ্লীলতাহানির মতো কোনো ঘটনা আমি ঘটায়নি। এসব মিথ্যা এবং বানোয়াট।
থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সেলিম রেজা বলেন, মেড়িয়া স্কুলের শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগীরা ঘেরাও করে রেখেছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই শিক্ষককে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়েরের পর শিক্ষককে সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাফিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জেনে অবরুদ্ধ অবস্থায় শিক্ষক হাফিজুরকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। বিধিমোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Like this:
Like Loading...
Related