দেশের মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায় উল্লেখ করে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এই দুঃশাসন থেকে মুক্তির সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, জনগণ তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে আওয়ামী দুঃশাসন প্রলম্বিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিজয়নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৪ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়, কিন্তু সেই দুঃশাসন থেকে মুক্তির সংগ্রামে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, জনগণ তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। ফলে আওয়ামী দুঃশাসন প্রলম্বিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের পড়াশোনা করতে হবে, ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতি সফল হয়। আদর্শের কথা মুখে না বলে বাস্তবে প্রমাণ দিতে হবে। রাজনীতি এখন অসৎ লোকের হাতে, সত্যিকারের নির্বাচন এখন প্রায় অসম্ভব। পরিবারতন্ত্র রাজতন্ত্র এসবের পরিবর্তন দরকার। বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব গণতন্ত্রের বিপক্ষে। দেশ শেখ হাসিনা কেন্দ্রিক হয়ে পড়ায় চরম বিপদে।
এছাড়া অন্য বক্তারা এবি পার্টির তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান এবং স্বল্প সময়ে দলের বিস্তৃতি ও অগ্রগতির জন্য নেতৃবৃন্দের প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তারা বলেন, অধিকারভিত্তিক রাজনীতিই হলো আগামী দিনের ঐক্য ও অগ্রগতির সোপান। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এই দুই পরিবারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ দল এবং দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। রাজনৈতিক দলগুলোতে দুই বা তিন মেয়াদের বেশি কাউকে দলীয় প্রধান হিসেবে বহাল রাখা অনুচিত।
বক্তারা বলেন, গঠনতান্ত্রিকভাবে দলে এমন বিধান সংযুক্ত করা দরকার, যাতে কেউ আমৃত্যু দলীয় প্রধানের পদে আসীন থাকতে না পারে। অসীম মেয়াদে একজন দলের পদ আঁকড়ে থাকলে সেখানে পরিবারতন্ত্র কায়েম হতে বাধ্য। বাংলাদেশে প্রতিহিংসা, হানাহানি ও প্রতিশোধপরায়নতার অন্যতম কারণ এই পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি।
এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের পরিচালনায় এ দিন অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। পরে সম্মিলিতভাবে কেক কেটে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল কাশেম ফজলুল হক। এ সময় শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারওয়ার মিলন, সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর, এনডিএম’র সভাপতি ববি হাজ্জাজ, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গৌতম দাস, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল লতিফ মাসুম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক, সাবেক বিএনপি নেতা ও বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, নৈতিক সমাজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমিন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল প্রমুখ।
দলের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কাটার মধ্যদিয়ে চার দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করে এবি পার্টি। এছাড়া আগামী ৩ ও ৪ মে সারাদেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা ছাড়াও থানা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ ৫ মে চতুর্থ দিনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংগঠক সম্মেলন ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।
