| সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
দুঃচিন্তা যেন পিছু ছাড়ছে না বিএনপির। সর্বত্র যখন দলের চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার বিচার নিয়ে শঙ্কায়, তখন দলীয় কার্যালয় নিলামে উঠার খবর নিয়ে নতুন উদ্বেগ দলে। কার্যালয় কীভাবে বাঁচানো যায় সে উপায় খুঁজতে ব্যস্ত দলের নেতারা।
বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ইতিমধ্যে দলটির আইনজীবী নেতারা আদালত থেকে এই মামলার কাগজপত্র দেখা শুরু করেছেন।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের দায়ে নিলামে উঠতে যাচ্ছে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ঢাকার অর্থ ঋণ আদালতের একটি মামলায় নিলামের উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে প্রকাশ পেয়েছে এসব খবরে।
দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বহিষ্কৃত সদস্য চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী অন্য একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ১৯৮০ সালের দিকে ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করেননি। ওই ঋণ নেয়ার জন্য তিনি গুলশানের বাড়ি ও কালিয়াকৈরের নিজ সম্পত্তির দলিলপত্র বের করে এনে বিএনপি কার্যালয়ের দলিল ইকুইটেবল মর্টগেজ হিসেবে জমা দেন।
একসময় তানভীর আহমেদ বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। সেই সূত্রে দলের সব হিসাব-নিকাশ এবং নয়াপল্টনের পাঁচতলা অফিস ভবনের দলিলপত্র তাঁর কাছে ছিল। এ সুযোগে তিনি দলীয় কার্যালয়ের মূল দলিল ব্যাংকে বন্ধক রাখতে সক্ষম হন।
টাকা পরিশোধ না করায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর গুলশানের বাড়িসহ বিএনপি অফিস নিলামে তুলে অর্থ আদায়ের জন্য অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করে, যা বর্তমানে রায়ের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘১৯৭৯ সাল থেকে নয়াপল্টনের এই কার্যালয় বিএনপির। ওই সময় জিয়াউর রহমান এটা কিনলেও তখন দলিল করা হয়নি। পরে ৯৩ সালে ভবনটির আগের মালিক ফখরুদ্দিন কার্যালয়টি দলিল করে দেন। তখন এটি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে দলিল করা হয়। নামজারি থেকে শুরু করে সবকিছুই এ নামে রয়েছে। কিন্তু দলিলের সময় ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়টি গোপন রাখেন ফখরুদ্দিন। তার প্রতারণার দায় এখন বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে।’
জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘এতদিন কোনো খবর ছিলো না, হঠাৎ করেই সামনে নিয়ে নিয়ে আসা হলো। আমরা আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র তুলে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন অবশ্য মনে করেন কার্যালয় বাঁচানো কঠিন কিছু হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেখছি। আমার বিশ্বাস এই মামলায় কোনো সমস্যা হবে না। বিএনপির কার্যালয় বিএনপিরই থাকবে।’
খোকন বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন ও স্থায়ী কমিটির অনুমোদন ছাড়া আইনগতভাবে দলের কার্যালয়ের দলিল বন্ধক রাখার ক্ষমতা রাখেন না। তাই আইনিভাবে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী এটা পারেন না।’ তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আইনগত প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রয়োজনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব।
Posted ০৫:৫৭ | সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain