| সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০ | প্রিন্ট
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগে চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরেই থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দারোয়ানকে দিয়ে আনার অনুরোধ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক। পরপর দুদিন দুই জনের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উত্তর টোলারবাগের বাসিন্দাদের মধ্যে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকে টোলারবাগ জনশূন্য হয়ে পড়ে। যারা বাসায় আছেন, তারাও বাসার দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউ বের হচ্ছেন না। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে।
রোববার রাতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে টোলারবাগে আরেকজনের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আসলামুল হক ওই এলাকায় যান। এ সময় তিনি স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন। এরপরই তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আসলামুল হক বলেন, এই এলাকায় মানুষ ও যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ১৪ দিন আগে এই এলাকার বাসিন্দারা ঘর হতে বের হতে পারবেন না। তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দরকার হলে বাসার দারোয়ান এনে দেবেন। প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিরাও এ কাজে সহায়তা করবেন।
তিনি বলেন, মানুষকে সচেতন করার জন্য টোলারবাগে চলাচল সীমিতকরণ করা হয়েছে। তবে লকডাউন করা হয়নি। লকডাউন করার ক্ষমতা এমপির হাতে নেই। লকডাউন করার প্রয়োজন হলে নির্বাহী প্রশাসন এটি করবে।
তিনি আরও বলেন, আমি শুধু মানুষকে সচেতন করার জন্য মসজিদের মাইক দিয়ে মানুষের চলাফেরা সীমিতকরণ করার কথা বলেছি।
শনিবার ও রোববার যে দুই ব্যক্তি মারা গেছেন, তারা যে মসজিদে নামাজ পড়তেন সে মসজিদের মাইকে চলাচল সীমিতকরণের ঘোষণা দেন এমপি আসলামুল হক। এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের রেফারেন্স দিয়ে মসজিদে জমায়েত না হয়ে বাসায় একা একা নামাজ পড়তে মুসল্লিদের প্রতি অনুরোধ করেন আসলামুল হক।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে আসলামুল হক বলেন, রোববার রাতে যে ব্যক্তি মারা গেছেন, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তা বলতে পারবো না। এটি চিকিৎসকের বিষয়।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে টোলারবাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন মারা যান। এরপর রোববার রাতে আরেকজন মারা যান। তারা দুজনেই বন্ধুর মতো চলাফেরা করতেন। একসঙ্গে মসজিদে নামাজ পড়তেন। তাদের দুজনের বাসা পাশাপাশি। এ কারণে তারা দীর্ঘদিন একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছেন। তবে, দ্বিতীয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সেখানকার ওই মসজিদে যাতায়াতকারী কয়েকজন জানিয়েছেন, এই মসজিদে নামাজ পড়েন এমন আরও পাঁচ-ছয়জন অসুস্থ হওয়ায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
দারুস সালাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল হোসেন জানান, রোববার নিহত ব্যক্তির লাশ দাফন কীভাবে করা হবে, তা আইইডিসিআর ভালো বলতে পারবে।’
মৃত্যুর সংবাদের তাদের দেওয়া হয়েছে বলেও ওসি জানান।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব। উহান থেকে এই ভাইরাস এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সারা দুনিয়ায়। ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ১৩ হাজারের অধিক মানুষ। প্রতি মিনিটে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বাংলাদেশেও এ ভাইরাস নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। ২৭ জন আক্রান্ত এবং দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে রোববার দুপুরে জানিয়েছিল সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইইডিসিআর।
Posted ১১:৩৮ | সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain