| বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০১৯ | প্রিন্ট
চলতি রমজান মাসে মাত্রা ছাড়িয়েছে রাজধানীর যানজট। মাত্র দশ মিনিটের পথও পাড়ি দিতে হচ্ছে এক ঘণ্টায়। অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে গরমও বেড়েছে এবার। ফলে যানজটে আর গরমে নাকাল রাজধানীবাসী। একযোগে চলমান বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সরু হয়ে যাওয়া রাস্তা, যানবাহনের আধিক্য ও আগে পৌঁছানোর তাড়াই এই অসহনীয় যানজটের কারণ। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ঈদের কেনাকাটা করতে বাজারমুখী মানুষের আধিক্য।
যানজটের জন্য এসব কারণই উঠে এসেছে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মুখে। রাজধানীর আগারগাঁও সিগন্যালে দায়িত্বরত ট্রাফিক পরিদর্শক সৌরভ বলেন, ঈদের জন্য মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। তাছাড়া প্রতিদিন প্রচুর মানুষ ঢাকা শহর ছেড়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তাও কিছুটা সংকুচিত। এসব কারণেই যানজট বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ঈদের আগে আরও কয়েক দিন গাড়ির এই চাপ থাকবে। ঈদের কাছাকাছি সময়ে আবার ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যাবে। তবে ঈদের আগে এবার চাপটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। সব মানুষ এক সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়ে গেলে চাপ বাড়বেই।
অন্যদিকে এবছর প্রচণ্ড গরম পড়েছে। যানজটে নাকাল নগরবাসীর ভোগান্তিও তাই বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় যানজটে বসে বা হেঁটে যেভাবেই গন্তব্যে যেতে চান না কেন ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন সবাই।
এদিকে বেশি ভুগতে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকেই বহিরাগত মাইক্রোবাস, বাস ও ট্রাকের চলাচলে স্থবির হয়ে থাকে ঢাবি ক্যাম্পাস। নীলক্ষেত, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষা ভবন ও চাঁনখারপুলের দিকের রাস্তায় গাড়ির আধিক্য ও হর্নে শিক্ষার্থীদের কানপাতা দায় হয়ে যায়।
যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাস-ট্রাকের চালকরাও। আগে যেখানে সারাদিনে চারটি ট্রিপ দেওয়া যেত এখন সেখানে একটি, খুব বেশি হলে দুটি ট্রিপ দিতে পারেন তারা। এই কারণে রোজকার ভাড়ার টাকাও ঠিকমতো তুলতে পারেন না বলে তাদের অভিযোগ।
ঈদের কেনাকাটা করতে বের হওয়া মানুষের আনাগোনাও যানজটের আরেক কারণ। গত সাত দিনে নীলক্ষেত থেকে মিরপুর পর্যন্ত অসহনীয় যানজট লক্ষ্য করা গেছে। তার কারণ হিসেবে ফুটপাতে ব্যবসা ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংকে দুষছেন সাধারণ মানুষ।
ঈদ যতই এগিয়ে আসছে ততোই বাটা সিগন্যাল, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাব, নিউ মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, গাউছিয়া, হকার্স মার্কেটে ক্রেতাদের প্রচ- ভিড় বাড়ছে। যে কারণে এই মার্কেটগুলোর আশপাশের সড়কে যানজট দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি, মালিবাগ, মৌচাক, বনানী, গুলশান, ফার্মগেট, উত্তরাসহ ঢাকার প্রায় প্রত্যেকটি এলাকায় অসহনীয় যানজটের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বিকালে গুগলের ট্রাফিক ট্র্যাকিং সাইটে গোটা ঢাকা শহরকে যানজটের কবলে লাল রঙ করে দেখানো হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মোজাম্মেল বলেন, ঢাকার বেশিরভাগ মার্কেটে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা নেই। যেগুলোতে আছে সেখানেও জায়গাও অনেক কম। ফলে ফুটপাথে গাড়ি রাখছেন সবাই, তৈরি হচ্ছে যানজট। লোকজনের সচেতনতার অভাবে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। এসব মার্কেটের সামনে সারাদিন সারি সারি গাড়ি ও রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
Posted ১২:১৪ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain