মঙ্গলবার ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ঢাকায় আ.লীগের থানা-ওয়ার্ড কমিটি হয়নি দুই বছরেও

  |   রবিবার, ২৭ মে ২০১৮ | প্রিন্ট

ঢাকায় আ.লীগের থানা-ওয়ার্ড কমিটি হয়নি দুই বছরেও

ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটি হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু মহানগরের থানা ও ওয়ার্ডগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো হয়নি। নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে দুবার পূর্ণাঙ্গ থানা-ওয়ার্ড কমিটি দিয়েও তা বাতিল করতে হয়েছে মহানগর উত্তরকে। এ ছাড়া কমিটিতে কার কর্মী কতজন ঠাঁই পাবেন এবং কমিটিতে আসা নেতারা ঢাকা মহানগরের, নাকি বরিশালের রাজনীতিবিদ হবেন—এ নিয়ে দুই নেতার দ্বন্দ্বে আটকে আছে মহানগর দক্ষিণ। এ কারণে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে থানা-ওয়ার্ডের নেতাদের। বারবার তাগিদ দিয়ে কোনো ফল না পেয়ে বিরক্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। উত্তরে ঢাকা-১১ আসনের সাংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহকে সভাপতি ও মো. সাদেক খানকে সাধারণ সম্পাদক এবং দক্ষিণে আবুল হাসনাতকে সভাপতি ও শাহে আলম মুরাদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্যের মহানগর কমিটিতে উত্তরে ৬৯ জন এবং দক্ষিণে ৬৯ জনকে বিভিন্ন পদ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। উত্তরের অধীনে ২৬টি থানা, ৪৬টি ওয়ার্ড এবং নয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণে ২৩টি থানা এবং ৫৭টি ওয়ার্ড আছে। এসব থানা ও ওয়ার্ডে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের বিপরীতে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও দুই বছরেও এসব থানা-ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য মহানগর নেতাদের আহ্বান জানান। এরপর দলের একাধিক সংবাদ সম্মেলনেও তিনি ‘শিগগির’ কমিটি হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। মুজিবনগর দিবসের আলোচনায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ছোটখাটো সমস্যা সব দলে থাকে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সদস্য সংগ্রহ অভিযান পুরোপুরি শুরু করতে হবে। কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে করে ফেলতে হবে। যেসব কমিটিতে সমস্যা হয়েছে, তাদের সময় দেওয়া হয়েছে কমিটি ঠিক করে ফেলার জন্য। তিনি আরও বলেন, একটি কমিটিতে এত বেশি পদ, নিচের দিকে নেতা-কর্মীদের জায়গা দিলে ক্ষতিটা কী? ছোট ছোট মনোমালিন্য নির্বাচনের সময় বড় বড় বিভেদের জন্ম দেয়।

এ কে এম রহমতুল্লাহ ও সাদেক খানএ কে এম রহমতুল্লাহ ও সাদেক খানদুবার বাতিল উত্তরের পূর্ণাঙ্গ থানা-ওয়ার্ড কমিটি
গত বছরের ৫ জুলাই প্রথমবার উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পরে নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদের কারণে কমিটি বাতিল করা হয়। এরপর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় থানা ও ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয় মহানগর উত্তর। প্রতিটি থানায় ৭১ সদস্য এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ৬৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করে ‘প্রেস রিলিজ’ দেয় মহানগর উত্তর। উত্তরের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য দ্বিতীয়বার দলের কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু দ্বিতীয়বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার সময় উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেননি বলে অভিযোগ করেন উত্তরের বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। এ ছাড়া কমিটি চূড়ান্ত করার সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের স্বাক্ষর না নেওয়ারও অভিযোগ করেন তাঁরা।

এরপর ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খানের নেতৃত্বে উত্তরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের ১১ জন নেতা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে এই নেতারা অভিযোগ করেন, উত্তরের থানা ও ওয়ার্ডে ত্যাগী ও প্রকৃত রাজনীতিবিদদের বাদ দিয়ে নিজেদের ‘পকেটের লোক’ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এলাকায় ‘বিএনপি-জামায়াত’ হিসেবে পরিচিত, এমন ব্যক্তিদের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে জ্বালাও-পোড়াওয়ে জড়িত ব্যক্তিদেরও কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। এর ফলে দল রাজনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের অভিযোগ শুনে কমিটি বাতিল করেন এবং সমস্যা নিরসন করে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।

দ্বিতীয়বার উত্তরের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিলের কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করতে বারণ করেছেন। যে কারণে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না।

কমিটির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, উত্তর-দক্ষিণে থানা-ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশ অনুযায়ী কমিটি গঠনের কাজ শেষ করেছেন উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। যেসব সমস্যা ছিল, সেগুলো নিরসন করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এরপরও যদি কারও আপত্তি থাকে, তাহলে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে উত্তরের অন্তত ১০টি থানা এবং ১৫টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলছেন, দুবার কমিটি বাতিলের পেছনে বড় কারণ হচ্ছে ‘বিএনপি-জামায়াত’-এর লোক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এ ছাড়া এলাকায় কখনো রাজনীতি করেননি এবং বয়সে কনিষ্ঠ, এমন অনেকে বড় পদ পেয়েছেন। অনেক দিন থেকে এলাকায় রাজনীতি করছেন, এমন ত্যাগী কর্মীকে কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়নি। ‘নিজেদের’ লোক হিসেবে পরিচিত অনেককেও কমিটিতে স্থান দেওয়ায় তাঁরা দুবারই কমিটি বাতিল চেয়েছেন।

এ বিষয়ে বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জসিমউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে করতে জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এত দিনের রাজনৈতিক জীবনে যাঁদের কখনো এলাকায় দেখিনি, এমন অনেকে কমিটিতে নেতা হয়ে গেছেন!’ তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল, অবরোধের সময় চিহ্নিত কিছু বিএনপি-জামায়াতের লোকও কমিটিতে স্থান পেয়েছিল—এসব কারণে তিনি কমিটির বিরোধিতা করেছেন।

কমিটির বিষয়ে শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মোল্লাও একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলছেন, কমিটিতে যদি ত্যাগী নেতারা জায়গা না পান, তাহলে তাঁরা কাকে নিয়ে রাজনীতি করবেন? এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কমিটিতে পরীক্ষিত লোক না থাকলে মাঠ সামলানো কঠিন হবে।

থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতারা যেসব অভিযোগ করেছেন, সেসব সত্য নয়। দলে কোনো মনোমালিন্য নেই। নেতা-কর্মীদের দলে জায়গা দেওয়ার জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে।

সাঈদ খোকন ও শাহে আলম মুরাদসাঈদ খোকন ও শাহে আলম মুরাদমুরাদ-সাঈদ দ্বন্দ্ব, কমিটি আটকা খসড়ায়:

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিন থেকে সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং মেয়র সাঈদ খোকনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা আলোচনা রয়েছে। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নম্বর কার্যকরী সদস্য সাঈদ খোকন। দক্ষিণের মেয়র হওয়ার কারণে মহানগর দক্ষিণের কার্যকরী সদস্য হয়েও দলে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ আছে মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া শাহে আলম মুরাদ দলের সভাপতিকে পাশ কাটিয়ে সব ধরনের দলীয় কাজ করেন বলে দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত নিজেও অভিযোগ করেছেন। ফলে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে মুরাদ-সাঈদ দ্বন্দ্ব সবার সামনে আসে। এই দ্বন্দ্বের মূল কারণ ছিল নিজেদের অনুসারীদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া। এ ক্ষেত্রে শাহে আলম মুরাদ তাঁর নিজের এলাকা বরিশাল এবং তাঁর অনুসারীদের প্রতি বেশি দৃষ্টি দিচ্ছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মহানগরের কিছু কিছু ওয়ার্ড ও থানার নেতারা। মেয়র সাঈদ খোকনও শাহে আলম মুরাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।

মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি তাঁর অনুসারীদের, বিশেষ করে মহানগর ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের অনেক নেতা-কর্মীকে কমিটিতে জায়গা দিতে চান। এ বিষয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্য, নির্বাচন সামনে রেখে বরিশালের কাউকে মহানগর কমিটিতে জায়গা দিলে নির্বাচনের সময় তাঁকে পাওয়া যাবে না। নির্বাচনের সময় তাঁরা বরিশাল থাকবেন, এখানে দলের কার্যক্রম চালাবে কারা? এ কারণে মহানগরে যাঁরা রাজনীতি করেন, এমন ব্যক্তিদের তিনি দলের কমিটিতে দেখতে চান।

সাঈদ খোকনের বাধা আর শাহে আলম মুরাদের চাওয়া—এই দুই বিষয়ের কারণে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ এখনো ঝুলে আছে।

এ ছাড়া গত বছরের ২৬ অক্টোবর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং মেয়র সাঈদ খোকনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। সেদিন অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠা নিয়ে দুজনের নেতা-কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই ঘটনায় শাহে আলম মুরাদকে দায়ী করেন দলের একাধিক নেতা।

আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাবেশ উপলক্ষে গত বছরের ১৮ নভেম্বর মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের একটি প্রস্তুতি সভা ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রম চলছিল আজিমপুরের পার্ল হারবার নামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে প্রস্তুতি সভায় বাধা দেওয়ার জন্য কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ময়লা ফেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ ঘটনায় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমানকে দায়ী করা হয়। তিনি মেয়র সাঈদ খোকনের অনুসারী।

এসব ঘটনায় বিব্রত হয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। পরে গত বছরের ২৮ নভেম্বর প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নগর ভবনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় দুই নেতাকে মিলিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দুই নেতাকে দুপাশে নিয়ে দুজনের দুই হাত উঁচিয়ে সবার সামনে ‘বিবাদ’ মিটিয়ে দেন কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের দুই নেতাকে মিলিয়ে দিলেও ‘দ্বন্দ্ব’ কাটেনি। মেয়র সাঈদ খোকন এবং শাহে আলম মুরাদ দ্বন্দ্বের কারণে এখনো থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঝুলে আছে। আর এখন এই ঝুলে থাকাকে ‘যাচাই-বাছাই’ বলে দাবি করছে মহানগর দক্ষিণ। মূলত কমিটিতে কার কত কর্মী-অনুসারী জায়গা পেলেন, এই বিষয় নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ ছাড়া কমিটিতে যেন ‘বিএনপি-জামায়াত’-এর কেউ জায়গা না পায়, সেটির জন্য এখন যাচাই-বাছাই চলছে বলে দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ দাবি করেন। এই যাচাই-বাছাইয়ের কথা বলা হচ্ছে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে। অথচ এখনো থানা-ওয়ার্ড কমিটির খসড়া তালিকা চূড়ান্তই করতে পারেনি মহানগর দক্ষিণ।

থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ চলছে। কমিটি গঠনের জন্য প্রাথমিক খসড়া প্রতিটি থানায় পাঠানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দিন বা তারিখ সম্পর্কে কিছু জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে দক্ষিণের ১২টি থানার সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় তাঁরা স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারছেন না। সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে তাঁদের বেগ পেতে হচ্ছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করার জন্য কর্মীদের পাওয়া যায় না। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কে জায়গা পাবে আর কে পাবে না, এসব বিষয় নিয়ে কর্মীরা ভাবতে ভাবতে এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। এই কারণে এখন অনেকেই ঠিকমতো রাজনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত হতে চান না।

এ বিষয়ে চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনমুখী কার্যক্রমের জন্য নেতা-কর্মীর প্রয়োজন। এখন থানার কার্যক্রম চলছে পুরোনো কর্মী দিয়ে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাছে কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, হয়ে যাবে। প্রথম আলো

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:০৩ | রবিবার, ২৭ মে ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com