| শনিবার, ০২ জুলাই ২০২২ | প্রিন্ট
পবিত্র ঈদুল আজহায় বাড়ি ফেরা মানুষের জন্য গতকাল সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও রেলসেবা অ্যাপ থেকে অনলাইনে এবং কাউন্টারে টিকিট বিক্রি চলছে। গতকাল ৫ জুলাইর টিকিট বিক্রি করা হয়। প্রথম দিনে হাহাকার ছিল টিকিটের। ১০-১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও কেউ কেউ চাহিদামাফিক টিকিট পাননি। বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিক্রির কথা থাকলেও দুপুর ১২টার আগেই টিকিট শেষ হয়ে যায়। এর পর থেকে কাউন্টারগুলো বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। চাহিদার তুলনায় টিকিট কম থাকায় বেলা ১১টার পরই দূরদূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের হতাশ হয়ে প্ল্যাটফরম ছাড়তে হয়েছে।
কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনেও ছিল টিকিটের চাপ। টিকিট সিস্টেম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’-এর জনসংযোগ ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরুর পর প্রথম মিনিটে প্রায় ৫ লাখ হিট হয়েছে রেলওয়ের ই-টিকিটিং সার্ভারে (ওয়েবসাইট ও অ্যাপস)। নারীদের জন্য ঈদে বাড়ি ফেরার টিকিট বিক্রির জন্য মাত্র একটি কাউন্টার থাকায় সেখানে দেখা গেছে বিশৃঙ্খলা। নারী যাত্রীদের পোহাতে হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।’
রাজধানীর কমলাপুর প্ল্যাটফরম থেকে উত্তরাঞ্চলগামী সব ট্রেনের, কমলাপুরের ‘শহরতলি প্ল্যাটফরম’ থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের, ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্ল্যাটফরম থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনের, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের; ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জগামী ট্রেনের, ফুলবাড়িয়া প্ল্যাটফরম থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের এবং জয়দেবপুর প্ল্যাটফরম থেকে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনগামী ঈদের স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি চলছে। সাতটি প্ল্যাটফরম থেকে ভিন্ন ভিন্ন রুটের টিকিট বিক্রি করায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ভিড় কম লক্ষ্য করা গেছে প্ল্যাটফরমগুলোয়। সকাল ৮টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিটের জন্য যাত্রীর উপচে পড়া ভিড়। স্টেশনের ১৬টি কাউন্টারের সামনে ছিল দীর্ঘ লাইন। টিকিটের জন্য অনেকেই বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছিলেন। গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট যাওয়ার জন্য টিকিট নিতে এসেছিলেন শামীম হোসেন। তিনি বলেন, ‘পরিবার নিয়ে বাড়ি যাব। তাই ঝুঁকি এড়াতে বৃহস্পতিবার বিকালেই স্টেশনে এসেছিলাম। কাক্সিক্ষত নীলসাগর ট্রেনের চারটি টিকিট পেয়েছি। আগে না দাঁড়ালে হয়তো পেতাম না। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন অনেকে।’ রাজধানীর মগবাজার থেকে পঞ্চগড়গামী ট্রেনের টিকিট নিতে বৃহস্পতিবার রাতে স্টেশনে এসেছিলেন শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাতে এসেই লাইনের পেছনের দিকে দাঁড়িয়েছিলাম। ফলে সকাল ১০টার পর দেখা গেল এসির কোনো টিকিট নেই। শোভন চেয়ারের টিকিট থাকলেও নিইনি।’ কমলাপুর স্টেশনে নারীদের জন্য ঈদের টিকিট বিক্রির মাত্র একটি কাউন্টার থাকলেও চার থেকে পাঁচটি লাইন লক্ষ্য করা গেছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির একপর্যায়ে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতেও জড়িয়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। তারা বলছেন, একাধিক কাউন্টারের ব্যবস্থা থাকলে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আর ভোগান্তি হতো না। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিদিন বিভিন্ন কাউন্টার থেকে ২৬ হাজার ৭৩৯টি টিকিট বিক্রি করা হবে। অর্ধেক অনলাইনে, অর্ধেক কাউন্টার থেকে। কিন্তু টিকিট পেতে আগ্রহী যাত্রীর সংখ্যা অনেক। তাই সবার টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। নারীদের লাইনে শৃঙ্খলা রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সচেষ্ট আছি, কালোবাজারে বিক্রির সুযোগ নেই।’ আজ ৬ জুলাইর টিকিট বিক্রি করা হবে। একইভাবে রবিবার ৭ জুলাইর, সোমবার ৮ জুলাইর ও মঙ্গলবার ৯ জুলাইর টিকিট বিক্রি চলবে।
সূূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিিন
Posted ০৭:১৫ | শনিবার, ০২ জুলাই ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain