শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে জমিতেই নষ্ট সোনালী স্বপ্ন, দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

  |   বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২ | প্রিন্ট

টানা বৃষ্টিতে জমিতেই নষ্ট সোনালী স্বপ্ন, দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে টানা বর্ষণে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় ধানগাছ হেলে পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পাকাধান নিয়ে উৎকন্ঠা আর আতঙ্কে আছে কৃষকেরা। রোদ না থাকায় এবং বৃষ্টির পানিতে ধান তলিয়ে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে উৎপাদিত খাদ্যের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছিল । এখন বোরো ধান কাটা মারায়ের ভরা মৌসুম, মাঠ থেকে ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করার কথা কৃষক-কৃষাণীদের। কিন্তু কৃষকের সেই ব্যস্ততা নেই, নেই কৃষকের মুখে হাসি।

কৃষকের কপালে এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ধানের উপযুক্ত মূল্য না পাওয়া, বৈরী আবহাওয়া, চড়া দামেও কৃষি শ্রমিক সংকটের কারণে বোরো ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষকেরা। বর্তমানে হাট-বাজার গুলোতে নতুন ধান প্রতিমণ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এবার বোরো ধান চাষাবাদে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও ওঠবে না কৃষকের। ধানের শীষে দোল খাওয়া কৃষকের সোনালী স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

উপজেলার পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের চাষী আল ইমরান রিজু জানান, ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গত সাত দিন থেকে টাকা বৃষ্টি ও রোদ না থাকায় ধান শুকাতে পারিনি। ফলে ধান থেকে চারাগাছ গজিয়েছে। জমির সব খর পঁচে গেছে। পাকা ধানের সোনালী স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

কথা হয় পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল এর সাথে তিনি জানান, এবার ৬ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি আমার সব ধান পানিতে ভাসছে ও দীর্ঘদিন পানির নীচে থাকায় ধান থেকে চারা বের হয়েছে। আমার সব শেষ। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী টাকা দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ কোন ভাবেই উঠবে না।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের কৃষক নাছির উদ্দিন জানান, ধানের বাম্পার ফলন হয়েছিল দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৩২ মণ ধান হওয়ার কথা কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব ধান নষ্ট হয়েগেছে। দেড় বিঘা জমির ধান ৫ হাজার ৫০০ টাকা চুক্তিতে কেটে এনেছি। কিন্তু ধান হয়েছে সাড়ে দশ মণ। এখন লোকসানের ঘানি টানতে হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৗেসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে ১৬ হাজার ১৯৫ হেক্টর জমিতে ইরি -বোরো ধান আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে হাইব্রীড ৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর, উফসি ৭ হাজার ৪২৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষক। আর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৯২.৯২ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের খোঁজ খবর রেখেছি। সময়মত সার কিটনাশক প্রয়োগসহ নানা পরামর্শ দেয়ায় উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছিল । কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষক কিছুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:২২ | বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com