| রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | প্রিন্ট
দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা পেয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তৃতীয় দফা কর্মসূচি পালন করছে দলটি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রবিবার ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা প্রশাসকদের কাছে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি।
ঢাকায় বেলা ১২টায় এবং সারাদেশে সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটার মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর এটি বিএনপির তৃতীয় দফা কর্মসূচি। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি, ১০ ফেব্রুয়ারি থানা, উপজেলা, জেলা মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ, ১২ ফেব্রুয়ারি মানববন্ধন, ১৩ ফেব্রুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি অনশন কর্মসূচি পালন করে দলটি।
এছাড়া গতকাল শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ কর্মসূচি চলতে থাকবে বলে জানান তিনি।
বিএনপির স্মারকলিপিতে যা আছে তা নিচে তুলে ধরা হলো
জাল নথির ওপর ভিত্তি করে সাজানো মামলায় প্রতিহিংসামূলক বিচারে বিএনপি চেয়ারপারসন ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। বানোয়াট মামলায় বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে সাজা প্রদান সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাই তার বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়টিও প্রহসনমূলক ও বিস্ময়কর। কারণ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা তছরুপের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। বেগম জিয়ার কোথাও কোনো স্বাক্ষর নেই। কোথাও তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় ও জুলুম অব্যাহত আছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারের আচরণই বলে দেয় তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত দূরভিসন্ধিমূলক রায়টি পেয়ে গেছে। কথিত বিচারের নামে সাজা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো সরকারের হীন সুদূর প্রসারী পরিকল্পনারই অংশ। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য বিদায় করে আগামী নির্বাচন পুনরায় একতরফাভাবে করতে একদলীয় দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী করাই এদের মূল লক্ষ্য। এ ফরমায়েসী রায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এক হিংসাশ্রয়ী পরিকল্পনা।
যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অবিরাম সংগ্রামে অবিচল নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাকে কখনোই তার জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। দেশে এক দুঃসহ অবস্থা বিরাজ করছে বলেই ন্যায়বিচার, ইনসাফ অদৃশ্য হয়ে গেছে। বেগম জিয়াকে কারাগারে বন্দি করেও তার ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক নির্যাতন। দুই শতাব্দীর প্রাচীন জনমানবহীন জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে তাকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। তিনি সেখানে কি অবস্থায় আছেন সেটি নিয়েও পরস্পরবিরোধী কথা বলছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। এক অমানবিক আদিম নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বেগম জিয়ার উপর সকল প্রকার হয়রানি ও হেনস্থার অবসান ও নিঃশর্ত মুক্তির জন্য প্রহর গুণছে দেশবাসী। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল…. জেলা/মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি এবং তার ওপর সব ধরনের নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ড থেকে সরকারকে বিরত থাকার জন্য আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেয় ঢাকার বকশিবাজারে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাছে স্থাপিত বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালত। এছাড়া রায়ে তারেক রহমানসহ মামলার অন্য পাঁচ আসামির ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়।
Posted ০৬:২৪ | রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain