| মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট
ডেস্ক রিপোর্ট : চাকরি না করেই মাসের পর মাস তথ্য গোপন করে বেতন-ভাতাদি তুলে নিয়েছেন সরকারের ২য় শ্রেণির পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা। সেসঙ্গে দাপ্তরিক আদেশ লঙ্ঘন ও সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করার দুঃসাহসিক কাজটিও করেছেন তিনি। ‘ব্রেক অব সার্ভিস’ ও কর্মস্থলে না থেকে সরকারি টাকা ভোগের দায়ে এরমধ্যে বিভাগীয় মামলা রুজু হলেও নতুন করে তাকে বিধিবহির্ভূতভাবে পদায়ন করা হয়েছে। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। অতিদ্রত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চিত ও বেআইনিভাবে নেয়া সরকারি টাকা ফিরিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর চাকরি জীবন শুরুর পর থেকেই দাপ্তরিক নির্দেশনা অমান্য ও লাগাতার চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে আসছেন। এই কর্মকর্তা এক যুগের চাকরি জীবনে যেমন নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত হয়েছেন তেমনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে উপার্জন করেছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর তার প্রভাবে তটস্থ হয়ে পড়েন উর্দ্ধতনরাও। চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে একের পর এক অনিয়ম ও লুটপাট শুরু করেন তিনি। যেকারণে কর্তৃৃপক্ষ ২০১৬ সালের ০৯ অক্টোবর তাকে সাভার গণপূর্ত বিভাগ থেকে খুলনা গণপুর্ত বিভাগে বদলীর আদেশ জারী করে।
অভিযোগ উঠেছে, দাপুটে এই কর্মকর্তা দাপ্তরিক নির্দেশ লঙ্ঘন করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে চার্জ না দিয়ে বানোয়াট মেডিকেল সার্টিফিকেট যুক্ত করে ওইদিনই শারিরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অবগতির জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি দরখাস্ত পাঠান। কিন্তু কোনো ছুটির আবেদন করেননি। ডাক্তারী সনদপত্রে ডাক্তার উল্লেখ করা হয়েছে তিনি একুইট ভারইরাসে আক্রান্ত। ১৫ দিন কমপ্লিট বেড রেস্টে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সার্টিফিকেটে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিংবা ওষুধের বর্ণনা নেই।
বিষয়টি বুঝতে পেরে গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ পরদিন ১০ অক্টোবর তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে আলী আকবর সরকারের শুণ্যপদে ওইদিনই জীবন কুমার ভৌমিককে চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগ থেকে পদায়ন করা হয়। তার যোগদানপত্র ১৩ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী গ্রহণ করে তার বদলি আদেশের পর ওইপদে সাময়িকভাবে পদায়নকৃত উ- সহকারী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিনের নিকট থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার নির্দেশ দেন। এর পরপরই ধূর্ত এই কর্মকর্তা তার বদলির আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। একমাস মামলা চলার পর ২২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নের্তৃত্বে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার রিট খারিজ করে দেন। এরপর তিনি দীর্ঘ ৬ মাস কোথাও যোগদান করেননি। অথচ এই সময়ে তিনি মাসিক বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেছেন।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অভিযোগ, আলী আকবর সরকারের ব্রেক অব সার্ভিস হয়েছে এবং চাকরি না করে বেতন নিয়ে সরকারি চাকরির বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। একই স্থান থেকে একই সময়ে তিনি ও তার স্থলে কর্মরত অপর কর্মকর্তা দুইজনই বেতন উত্তোলন করেন কিভাবে?
এবিষয়ে আলী আকবর সরকার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। তিনি বলেন, এ গুলো অনেক তদন্ত হয়েছে। এবং চলমান আছে। তবে মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং সংসদীয় কমিটিগুলোর একাধিক সদস্য এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটা অনিয়মের অভিযোগ বছরের পর বছর পড়ে থাকতে পারে না। তার বিরুদ্ধে রুজু হওয়া বিভাগীয় মামলার নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। তা না হলে ডিপার্টমেন্টাল অনিয়ম আরও বেশী প্রশ্রয় পাবে। সূত্র: ইনকিলাব
Posted ১৩:৫২ | মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain