শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চলতি অধিবেশনেই ইসি গঠনে আইন পাসের চেষ্টা থাকবে: আ.লীগ

  |   সোমবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট

চলতি অধিবেশনেই ইসি গঠনে আইন পাসের চেষ্টা থাকবে: আ.লীগ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনার নিয়োগ ও নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশন গঠনে মন্ত্রিসভা যে আইনের খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে তা চলমান অধিবেশনেই পাস হওয়ার সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে দলটি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সংলাপে অংশ নেয়।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, আওয়ামী লীগের দেওয়া প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রপতি নিজস্ব বিবেচনায় উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেবেন এবং সংবিধান অনুযায়ী নিয়োগসংক্রান্ত উপযুক্ত আইন করা যেতে পারে। যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়ার জন্য আইন করার গুরুত্ব রয়েছে। ইসিকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগতভাবে শক্তিশালী করার বিষয়েও সংলাপে গুরুত্ব দিয়েছে দলটি।

 

এর আগে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে বঙ্গভবনে নির্বাচন কমিশন গঠনে সংলাপে অংশ নেয় দলটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দলটি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে নির্বাচন কমিশন গঠনে দলীয় প্রস্তাব তুলে ধরে।

 

প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।

 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বৈঠকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাননীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ‘গণতন্ত্র ও নির্বাচন: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ শিরোনামে দলের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায় নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ, নির্বাচন কমিশনের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব ও সুপারিশ উপস্থাপন করা হয় এবং এই ধরনের অর্থবহ সংলাপ আহ্বানের মধ্য দিয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত যেকোনো ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ আস্থা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মূল বিধানাবলী দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানেই (অনুচ্ছেদ ১১৮-১২৬) উল্লেখ রয়েছে।’

 

ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের বিষয়ে বৈঠকে তারা কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন-

 

(ক) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন।

 

(খ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দান করবেন।

 

(গ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের কোনো আইন না থাকায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান ব্যতিরেকে অন্য কোনো আইন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সাংবিধানিক চেতনা সমুন্নত রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণের লক্ষ্যেই মূলত এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে যেকোনো আইন হবে সাংবিধানিক বিধান মতে একটি বিশেষ ধরনের আইন। এই বিশেষ ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো সুনির্দিষ্ট উদাহরণ ছিল না।

 

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে একটি রাজনৈতিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করতে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি সাংবিধানিক রীতি ও রাজনৈতিক অনুশীলন (Constitutional Convention) প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সাংবিধানিক রীতিটি হলো ‘সার্চ কমিটি/অনুসন্ধান কমিটি’ গঠনের মাধ্যমে সকলের মতামত ও অংশগ্রহণের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন। এই ব্যবস্থাটি এখন পর্যন্ত দুইবার (২০১২ এবং ২০১৭) অনুশীলন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। দুই বারই দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ এই অনুশীলনে অংশগ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায়, এই রীতিটির আলোকে এবং এই প্রক্রিয়ালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের আলোকে একটি আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।

 

(ঘ) সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সকল নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মো. আব্দুর রহমান, মুহাম্মদ ফারুক খান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:০৭ | সোমবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com