| রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | প্রিন্ট
বেইমানদের ওপর নজর রাখছি’-বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় বেগম খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যে বিএনপিতে বিশ্বাসহীনতার ইঙ্গিত পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া এখন নিজ দলের কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না।
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক আলোচনায় হাছান এ কথা বলেন। এর আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ঢাকা মহানগর শাখা।
আগের দিন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির রায়কে সামনে রেখে নেতাদের দিক নির্দেশনা দেক চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ক্ষমতাসীন দল নানা লোভ-লালসা দেখাবে জানিয়ে নেতাদেরকে যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
‘যারা এক নৌকায় এক পা আর আরেক নৌকায় এক পা রাখে তাদের ওপর লক্ষ্য রাখা হবে’দলের নেতাদেরকে এমন সতর্কবার্তা দিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘যারা বেইমানি করেনি, আমরা যদি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসি, তাদের কথা বিবেচনা করা হবে।’
হাছান মাহমুদ বেশ কিছুদিন ধরে নানা আলোচনায় বলে আসছেন, খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়েই চলতে চান বিএনপির একাংশের নেতারা। এ জন্য তারা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগও করছে। আর এই নেতাদেরকে খুঁজে বের না করার পরামর্শ দিয়ে হাছান সে ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার ‘কম্বল উজার’ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেছেন।
রবিবারের আলোচনায়ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার আশে পাশে যারা আছেন, কাউকে তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।’
হাছান বলেন, ‘খালেদা জিয়ার গতকালের বক্তব্য চূড়ান্ত পতনের আগে গোঙানি ছাড়া আর কিছু না। মৃত্যু বুঝতে পেরে মানুষ যেভাবে আওয়াজ করে, খালেদা জিয়া বুঝতে পেরেছে তার পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির ওই সভাটি হয়েছিল বিলাসবহুল হোটেল লা মেরিডিয়ানে। আর সভার স্থান নির্বাচনের সমালোচনা করে হাছান বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি দলের মিটিং পাঁচ তারকা হোটেলে করবে এটা ভাবতে পারছি না।’
‘খালেদা জিয়া পাঁচ তারকা হোটেলে হস্তি মার্কা কমিটির মিটিং করলেন। তারা নাকি ঢাকায় মিটিং করার জন্য স্থান পেলেন না। কেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে তারা করতে পারতেন। সেটা তো তাদেরই।’
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের বিষয়ে খালেদা জিয়া ও বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেরও জবাব দেন হাছান মাহমুদ। বলেন, ‘খালেদা জিয়া সত্যি অন্যায় করেছেন, তা না হলে কীভাবে তারা বুঝলেন যে শাস্তি হবে?’।
‘খালেদা জিয়া গতকাল বলেছেন, সবার উপরে আল্লাহ আছেন। সত্যি আল্লাহ আছেন, তিনি আছেন বলেই বিচার হচ্ছে। এ জন্য কাউকে আপনি (খালেদা জিয়া) বিশ্বাস করতে পারছেন না।’
খালেদার মামলায় তড়িঘড়ি করে বিচার শেষ করার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন হাছান। বলেন, ‘একটা হত্যা মামলার বিচার পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ হয়। আর এই মামলা চলছে ১০ বছর।’ মামলাটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করার বিষয়টিও বিএনপি নেতাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানে তারেক রহমানেরও সমালোচনা করেন হাছান। বলেন, ‘সে আগে দেশি চোর ছিল, এখন আন্তঃমহাদেশীয় চোর হয়েছেন। লন্ডনে তিনি আয়ের উৎস দেখিয়েছেন জুয়া খেলা। লন্ডনে জুয়া খেলে অর্থ উপাজর্ন করে, এমন একজনকে বিএনপির আগেই বহিষ্কার করা উচিত ছিল।’
সভায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বেগম জিয়া নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় যে সকল শর্ত দিয়েছেন, তার কোনোটা পূরণ হওয়ার নয়। সংবিধানের বাইরে এক চুল নড়ব না। তাতে কারা অংশ নিল, আর কারা নিল না, তা দেখার বিষয় না।’
খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে কামরুল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা কোন ফর্মায়েস দেয় না। ফর্মায়েসি রায় হয়েছে বিএনপির আমলে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছে এই আমলে। খালেদার রায় নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করা হচ্ছে।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা চিত্ররঞ্জন দাশের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা অরুণ সরকার রানা।
Posted ১০:০৭ | রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain