| রবিবার, ৩১ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট
গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশের যে ঐতিহ্য, ১৯৭১ সালের আগে থেকে সব অসম্ভবকে আমরা সম্ভব করেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছি, ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েছি। তারপর ২০০৮ এ যেভাবে আমরা অগ্রসর হয়েছিলাম এগুলো সব ঐক্যের ফসল।
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
রোববার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় অন্য বক্তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বললে তাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকেও আপনাদের মধ্যে যে দাবিগুলো (আন্দোলন ও খালেদা জিয়ার মুক্তি) এসেছে, সে দাবিগুলোকে আমি পুরোপুরিভাবে সমর্থন করি। আমি মনে করি, সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে এটাকে আমরা অর্জন করতে পারবো। দেশে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। এটা হলে জনগণ ক্ষমতার মালিক হিসেবে যে ভূমিকা রাখার কথা তা রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, যাদের অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে তাদের সবাইকে মুক্ত করা হোক। এ ব্যাপারে দ্বিমতের অবকাশ নেই। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আমাদের ঐক্যকে আরও সুসংহত করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘকাল সংগ্রাম করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করে আজ তিনি কারাগারে। তার চিকিৎসার জন্য যে বোর্ড গঠন করা হয়েছে সে বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা দরকার। তার চিকিৎসা অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সত্যিকার অর্থে তিনি গুরুতর অসুস্থ। আর সেই নেত্রীকে আটক করে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে দেওয়া হয় না। আইনগতভাবে তার প্রাপ্য যে জামিন, সেই জামিন না দিয়ে ধীরে ধীরে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ যারা বাকশাল প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছেন, যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে, প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার আয়োজন করেছেন তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। ভয় পায় এই কারণে যে, তিনি বের হয়ে আসলে এই জনগণকে আটকে রাখতে পারবে না, প্রতিরোধ করে রাখতে পারবে না।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই আমরা এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি। সরকার চেষ্টা করছে আমাদের এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে ভাঙতে। সরকারের বিএনপিকে নিয়ে যত চিন্তা, তারা সব সময় শুধু বিএনপিকে নিয়েই কথা বলছে। বিএনপি যদি ব্যর্থ হয়ে থাকে তাহলে বিএনপিকে নিয়ে আপনারা এত কথা বলছেন কেন? বাংলাদেশের মানুষকে সব সময় বোকা বানানো যাবে না। এ দেশের মানুষ সবসময় লড়াই করে এসেছে, তারা তাদের অধিকার আদায় করতে জানে।
শেখ হাসিনাকে আগুনের দেবী উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা বক্তৃতা করেন আমরা সমুদ্র জয় করেছি, নীল অর্থনীতি চালু করেছি, আকাশ জয় করেছি, আমাদের স্যাটেলাইট সারা দুনিয়ায় খবরদারি করছে আর আপনারা এফ আর টাওয়ারের ১০ তলায় উঠতে পারেন না। সারাদেশে আগুন লেগে মানুষ মারা যাচ্ছে। আর উনি খালেদা জিয়াকে, বিরোধী দলকে বলেন আগুন সন্ত্রাস। লজ্জাও করে না। আপনার (শেখ হাসিনা) আমলে, আপনার কারণে, আপনার কর্মফলে মানুষ আগুনে পুড়ে পুড়ে মারা যাচ্ছে। আপনি তো আগুনের দেবী।
আলোচনা সভায় আরও জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ২২:২৩ | রবিবার, ৩১ মার্চ ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain