বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উভয়সংকটে ট্রাম্প

  |   সোমবার, ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট

উভয়সংকটে ট্রাম্প

ভারী বিপদে পড়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের জন্য সমস্যা হলো, এখন যদি মস্কোর সাইবার হামলার কথা তিনি স্বীকার করে নেন, তাহলে নিজের নির্বাচনে জয়লাভ যে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সে কথা মেনে নেওয়া হয়। অন্যদিকে সিআইএ, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স ও এফবিআইয়ের যৌথ সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করার অর্থ দাঁড়াবে নিজ দেশের গোটা গোয়েন্দা সম্প্রদায়কে অগ্রাহ্য করা।
এদিকে, মার্কিন গোয়েন্দাদের যৌথ এ প্রতিবেদনের পর মস্কো মার্কিন নির্বাচন প্রভাবিত করতে সাইবার হামলা করার কথা আবারও অস্বীকার করেছে।
এই অবস্থায় হবু প্রেসিডেন্টের মনোনীত চিফ অব স্টাফ রেইনস প্রিবাস গতকাল রোববার জানিয়েছেন, নির্বাচনে রাশিয়া সাইবার হামলা করেছে—গোয়েন্দাদের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন ট্রাম্প। ফক্স নিউজ সানডে অনুষ্ঠানে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান প্রিবাস বলেন, ট্রাম্প এটা বুঝতে পেরেছেন যে ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে সাইবার হামলার পেছনে মস্কোর হাত ছিল। তিনি বলেন, এই সাইবার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সুপারিশ দেওয়ার জন্য গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। ওই সুপারিশের ভিত্তিকে ‘ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কো ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেছে বলে শুক্রবার মার্কিন গোয়েন্দা মহল সম্মিলিতভাবে কাগজে-কলমে জানিয়ে দিয়েছে তাঁকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। গোয়েন্দাপ্রধানেরা প্রমাণপত্র হাজির করার পর তিনি নিমরাজি হয়ে বলেন, ব্যাপারটা তদন্ত হোক, সেটা তিনি চান। তবে একই সঙ্গে এ দাবিও করেন, নির্বাচনে হ্যাকিং হলেও তাতে ফলাফল প্রভাবিত হয়নি। এক দিন পরই অবশ্য তাঁর সুর বদলে যায়। শনিবার তিনি নতুন এক টুইটার বার্তায় অভিযোগ করেছেন, শুধু ‘বোকা লোকেরাই চায় না মস্কোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক ভালো হোক।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রুশ আইন পরিষদের সিনেটর আলেক্সি পুশকভ বলেছেন, মার্কিন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য মস্কো দায়ী নয়, এর জন্য দায়ী ওবামা প্রশাসন। পুশকভ বলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামা খোলামেলাভাবে হিলারিকে সমর্থন করার ফলে সে প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 সব মিলিয়ে হবু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেশের গোয়েন্দা মহলের মুখোমুখি হওয়ার ছবিটা বদলাচ্ছে না। দুই সপ্তাহ পরই গোয়েন্দা দপ্তরগুলো হবে তাঁর প্রশাসনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের হেয় করা নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অন্যদিকে গোয়েন্দাদের বক্তব্য স্বীকার করলে তাঁর নির্বাচনী বিজয় নিয়ে ইতিমধ্যে ওঠা প্রশ্নের তির আরও তীক্ষ্ণ হয়ে তাঁর দিকে ছুটে আসবে।

নির্বাচনের আগে থেকেই ট্রাম্প পুতিনের পক্ষ নিয়ে শুধু ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে নয়, তাঁর নিজের দলের রক্ষণশীল নেতাদের সঙ্গেও বচসায় লিপ্ত হন। উদারনৈতিক মহল থেকে তো খুব কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের পুতিন-প্রীতির সমালোচনা হচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার নামজাদা কলাম লেখক ক্যাথলিন পার্কার মন্তব্য করেছেন, পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের ভালোবাসা দেখে সন্দেহ জাগে, তিনি রাশিয়ার পক্ষে গোয়েন্দাগিরি করছেন না তো?

শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে মার্কিন গোয়েন্দা মহল যৌথভাবে যে প্রতিবেদন ও ব্রিফ দিয়েছেন, তার মোদ্দাকথা হলো, গত ৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টির কম্পিউটার ডেটাবেইসে যে সাইবার হামলা হয়, তার লক্ষ্য ছিল একদিকে হিলারি ক্লিনটনের ব্যাপারে সন্দেহ জাগিয়ে তোলা, অন্যদিকে ট্রাম্পের বিজয়ে সাহায্য করা। এ কাজ করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৫:১৮ | সোমবার, ০৯ জানুয়ারি ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com