শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের লিমান শহর রুশ-সমর্থিতদের দখলে!

  |   শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২ | প্রিন্ট

ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের লিমান শহর রুশ-সমর্থিতদের দখলে!

পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে রুশ অভিযান চলতে থাকার মধ্যেই সেখানকার রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীরা বলছে, তারা লিমান নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নিয়েছে। ইউক্রেনের স্লোভিয়ানস্ক শহরে যাবার রাস্তার ওপর এই লিমানের অবস্থান এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল-সংযোগস্থল। রাশিয়া যেভাবে পুরো ডনবাস এলাকার নিয়ন্ত্রণ দখল করার চেষ্টা করছে- সেই প্রয়াসে এ শহরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা ওলেক্সেই আরেস্টোভিচ বলেছেন, তাদের পাওয়া খবর অনুযায়ী তারা লিমান হারিয়েছেন এবং রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এখন শহরটি নিয়ন্ত্রণ করছে।

তিনি আরো বলেন, লিমানের ওপর রুশ বাহিনী যে আক্রমণ চালিয়েছে তা ছিল সুসংগঠিত। তবে লিমানের পতনের খবরটি কতটা সঠিক তা এখনো স্পষ্ট নয়। একজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেছেন, শহরটির উত্তর ও দক্ষিণের কিছু অংশে ইউক্রেনীয়রা এখনো লড়াই করে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সেভারোডোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্ক শহর দুটির চারপাশেও প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব এলাকায় ইউক্রেনীয় বাহিনী শক্ত অবস্থান নিয়ে থাকলেও রুশ বাহিনী বিক্ষিপ্তভাবে কিছু সাফল্য পাচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে।

এই শহর দুটোর ওপর প্রায় সার্বক্ষণিকভাবে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে । শহরটির মেয়র বলেছেন, সেভারোডোনেৎস্কের ৬০ শতাংশ আবাসিক বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। মস্কো সম্প্রতি ডনবাস অঞ্চলকে তাদের যুদ্ধপ্রয়াসের মূল কেন্দ্রে পরিণত করেছে। লুহানস্কের ৯০ শতাংশেরও বেশি এলাকা এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। অন্যদিকে ডোনেৎস্ক অঞ্চলের যুদ্ধেও রাশিয়া সম্প্রতি বড় অগ্রগতি ঘটিয়েছে।

গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন অভিযান শুরু করার পর থেকেই রাশিয়া বলে আসছে যে তার সেনাবাহিনী ডনবাসকে পুরোপুরি মুক্ত করার জন্য লড়াই করছে। রুশ অভিযান শুরুর আগে থেকেই মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে রেখেছিল।

বিবিসির বিশ্লেষক পল কারবি বলছেন, লিমান দখল করাটা রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীদের জন্য একটি বড় মুহূর্ত। গত এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার জন্য এটি দ্বিতীয় বড় সাফল্য। এর আগে তাদের হাতে আরো দক্ষিণের শহর স্ভিটলোডারস্ক শহরটির পতন হয়। আরেক খবরে জানা গেছে, ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলে দনিপ্রো শহরে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর একটি ব্যারাকের ওপর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে এবং তাতে ১০ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আরো বেশি কিছু লোক আহত হয়।

স্থানীয় একটি প্রতিরক্ষা কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা বলছেন, রুশ ভূখণ্ড থেকে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়, যার একটি ওই ব্যারাক ভবনে আঘাত হানে। সেখানে জরুরি সেবাকর্মীরা এখনো কাজ করছে। দনিপ্রো শহরটি ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় শহরগুলোর অন্যতম, তবে দেশটির পূর্বদিকে যে এলাকাগুলোতে যুদ্ধ চলছে সেখান থেকে অনেকটা দূরে।

‘ইউক্রেনের দরকার অব্যাহত সামরিক সাহায্য’ বলছেন জনসন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ চালাতে ইউক্রেনের অব্যাহতভাবে সামরিক সাহায্য পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

জনসন বলেন, ডনবাস অঞ্চলে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী ধীরগতিতে হলেও স্পষ্ট লক্ষণীয় অগ্রগতি ঘটাচ্ছে, তবে এর জন্য তাকে এবং রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।

ইউক্রেন এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বিপুল পরিমাণে সামরিক সহায়তা পেয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অভিযোগ করছেন যে, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র দেয়ার ব্যাপারে দ্বিধা করছে।

কিয়েভের সরকার বলছে, তারা পশ্চিমা মিত্রদের কাছে দূরপাল্লার রকেট চেয়েছেন। কারণ, তাদের মতে- এর ফলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে।

ডনবাসে পাঁচ হাজার ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী
অন্যদিকে ডনবাস অঞ্চলের এক রুশ-পন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ডেনিস পুশিলিন বলছেন, সেখানে পাঁচ হাজার ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীকে আটকে রাখা হয়েছে। তাস বার্তা সংস্থাকে তিনি বলেন, এর অর্ধেককেই ধরা হয়েছে মারিউপোল শহরের আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানা থেকে।

মস্কো-সমর্থক নেতাটির এ দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে রুশ বাহিনীর অবরোধের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর পর প্রায় দু’সপ্তাহ আগে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা ওই কারখানাটি ছেড়ে চলে যায়।

শান্তি আলোচনা নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ
যুদ্ধরত দু’পক্ষের মধ্যেকার শান্তি আলোচনা বেশ কিছুদিন ধরেই বন্ধ আছে। তবে রয়টার্সের সবশেষ খবরে বলা হচ্ছে- প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন, ইউক্রেন ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কথা বলতে উদগ্রীব নয়, তবে শেষ পর্যন্ত আলোচনা করতেই হবে।

অন্যদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শুক্রবার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবার জন্য ইউক্রেনকেই দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, কিয়েভ কী চাইছে তা স্পষ্ট নয়, এবং ইউক্রেনীয় নেতৃত্ব পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। সূত্র : বিবিসি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২৩:০৮ | শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com