| শনিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
ধানমন্ডি ৩/এ তে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার পেছনে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের দায়ী করেছেন ওবায়দুল কাদের। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হামলাকারীরা শিক্ষার্থীদের বেশ ধারণ করে এসেছিল।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে জিগাতলায় একজনের পায়ের রগ কেটে দেয়া এবং কয়েকজনকে হত্যার গুজব ছড়িয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার ছাত্রদের উত্তেজিত করে আনা হয় জিগাতলার দিকে। এক পর্যায়ে লাঠিসোঠা নিয়ে হামলার চেষ্টা হয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে।
এ সময় ছাত্রদের সঙ্গে ইউনিফর্ম ছাড়া লোকজনও ছিল এবং তাদের বেশভুষা ও বয়সও ছাত্রদের মতো নয়।
পরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের কর্মীরাও পাল্টা ধাওয়া দেয় হামলাকারীদের। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এই সময় দুই যুবককে গুলি করতে দেখা যায়। তবে এই যুবক কোন পক্ষে ছিলেন সেটা স্পষ্ট নয়।
ধানমন্ডি কার্যালয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উস্কানিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা করেছে ছাত্ররূপী বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা।’
‘যে পাথরগুলো মারা হয়েছে তা দেখে আমরা বলতে পারি, এই হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক। এই হামলা ছাত্রদের হামলা নয়। এই ধরনের পাথর পথে ঘাটে পাওয়া যায় না। এই পাথর তারা ব্যাগে করে নিয়ে এসেছে, তারা স্কুল ড্রেস ও আইডি কার্ড বানিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে হামলা করেছে।’
‘হামলার ধরণ দেখে আমরা বলতে পারি, এই হামলা বিএনপি-জামায়াতের প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনী দ্বারা চালানো হয়েছে।’
হামলায় আহত আওয়ামী লীগের ১৭ জন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎধীন আছেন বলেও জানান কাদের। জানান, এছাড়া বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও পথচারীও আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে একজন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে সিসিইউতে আছেন বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পরদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন চলতে থাকায় বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ছাত্রবেশে ঢুকে পড়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি বছরের এই সময় স্কুল ড্রেসের চাহিদা না থাকলেও একাধিক বিক্রেতা জানিয়েছেন, হঠাৎ করেই প্রচুর পোশাক বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন, বিক্ষোভে পোশাক সরবরাহের প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা এই অফিসের দিকে তেড়ে আসছে, কোন ছাত্রছাত্রীর এই সাহস আছে? এর স্কুলের ছাত্রছাত্রী নয়, এরা কলেজের ছাত্রছাত্রী নয়। এরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, যারা আজ দেশকে অশান্ত করতে চায়।’
এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ হয়েছে যার মধ্যে একজনের কণ্ঠ হুবহু বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মতো।
এই অডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণকে এই সুযোগে মাঠে নামার পরামর্শ দিচ্ছেন আমির খসরুর মতো কণ্ঠধারী। যদিও এটি তার কণ্ঠই কি না, সেটি নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই।
কাদের অবশ্য গত দুই দিন ধরেই বলে আসছেন, ছাত্রদের আন্দোলনকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে বিএনপি। আজ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অশান্তি কোনোদিনও দূর হবে না, যদি বিএনপি নামক একই দলটির দাপটের অস্তিত্ব থাকে।’
‘সে জন্য বলছি, এদেশের অশান্তি দূর করার জন্য বিএনপির ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সব নেতার পদত্যাগ আহ্বান করছি। এরা না সরলে দেশ শান্ত হবে না। সব অশান্তির মূল এরা।’
‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অশুভ চেষ্টায় ব্যস্ত বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পাঁচ হাজার লোক নিয়ে একটা সভা, সমাবেশ, আন্দোলন, মিছিল তারা করতে পারেনি। তারা তাদের চেয়ারপারসনের জন্য আন্দোলন করতে ব্যর্থ। তারা তাদের ব্যর্থতাকে ঢাকতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন উপর ভর করছে।’
যা দেখবেন তাই লিখতে সাংবাদিকদেরকে অনুরোধ করে কাদের বলেন, ‘কারও শোনা কথায় কান দেবেন না। আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা আপনাদের দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করে যাবেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অপশক্তির মুখোশ উম্মোচন করতে ভূমিকা রাখবেন।‘
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নমনীয়। তাই তারা কিছু করতে পারছে না। তাই বলে, তাদের ব্যর্থ বলা ঠিক হবে না।
Posted ২১:৫০ | শনিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain