শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ’লীগ বিএনপির সমঝোতা হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন!

  |   বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

আ’লীগ বিএনপির সমঝোতা হলে মধ্যবর্তী নির্বাচন!

al-bn

বর্তমান ক্ষমতাসীন আ’লীগ চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনসহ দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে।

এ লক্ষে ইতিমধ্যে বিএনপির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে। দফায় দফায় বৈঠকের সমাধান ফলপ্রসু না হলে কি ভাবে সমাধান বের করা যায় তার একটি স্থিতিশীল পথ খুঁজছে আ’লীগ।

এরমধ্যে বিকল্প চিন্তা মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন আ’লীগ। যদি আ’লীগ বিএনপির মধ্যে সমাধানের আলোচনা ফলপ্রসু হয় তা হলে দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদি মধ্যবর্তী নির্বাচন হলে দেশের চলমান পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে সমাধান না হলেদেশের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে বলেমনে করছেন তারা। তাই দেশ ও জনগনের কল্যানের জন্য দু’দলকে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেদের ছাড় দেওয়ার মন মানসিকতা থাকতে হবে বলে ধারনা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এছাড়া এ পরিস্থিতিতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা বৃহত্তর সমঝোতা হতে পারে। নির্বাচনের পর একটু সময় নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি স্থায়ী সমাধান অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে আগামী দশম জাতীয় সংসদ গঠনের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলে পুরো ৫ বছরই ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট। আর বিরোধী দলের আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিতে না পারলে সমঝোতার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে মহোজোট সরকার।

আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারি পর সরকার গঠনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐকমত্যের একটি সরকারের প্রস্তাব করতে পারেন। এতে নির্বাচিত সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সরকারের ৫ বছর পাড়ি দেয়ার পথ সুগম হবে বলে ধারণা করছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকলেও বেশিসংখ্যক মন্ত্রী দিয়ে তাদেরকে সরকারে রাখার কৌশলও নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো সমঝোতার সম্ভাবনা নেই। আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন শেষে নতুন সরকার গঠনের পর পরবর্তী (একাদশ) নির্বাচনের জন্য একটা সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান বের করা হবে।

সেক্ষেত্রে মধ্যবর্তী সময়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন অথবা সমঝোতার ভিত্তিতে অল্প সময়ের মধ্যেও নির্বাচন হতে পারে। এই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের বিষয়টি দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করবে।

সংসদীয় পদ্ধতি অনুসরণ এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে সরবে না আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা আজকের বাংলাদেশকে বলেন, নির্বাচনের পর পরিস্থিতি বেশি প্রতিকূলে চলে গেলে সমঝোতার ভিত্তিতে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করবে তারা।

এজন্য দশম জাতীয় সংসদের পর অল্প সময়ের মধ্যেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে এক রকম প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে আওয়ামী লীগের। তবে নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে তাই এখনই এ বিষয়টি সামনে আনতে চাচ্ছে না বিরোধী দল।

সূত্র জানিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় এবং কোনো ধরনের সরকারের অধীনে তা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন নেতারা। বিএনপি নেতারা যুদ্ধাপরাধীদের কোনো দায়ভার নিতে চান না বলেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক রকম হয়েই গেছে। ইতিমধ্যে ১৫৪ জন প্রতিনিধি সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারিতে বাকি আসনগুলোর নির্বাচনের পরই দশম সংসদ গঠিত হবে। বিএনপি আন্দোলন করেও এ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। কারণ নির্বাচনের আগেই সমঝোতার মাধ্যমে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রতিনিধি ইতিমধ্যেই নির্বাচিত হয়ে গেছে।

তারপরও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন। সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করার লক্ষ্য অটুট রেখেছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনের আগে জরুরি অবস্থা জারির কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ও গোলযোগপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোর আশপাশের এলাকায় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে থেকেই অঘোষিতভাবে জরুরি অবস্থার মতো পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হতে পারে। এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর বাংলাদেশ সফর শেষে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতারা দুই দফা কথা বলেছেন।

১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় আইনগতভাবে এই নির্বাচন পেছানোর যে আর সুযোগ নেই, তা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ্যেই বলেছে। বাস্তবতা মানছেন বিএনপি নেতারাও। গতকাল আওয়ামী লীগের দুই নেতাও প্রকাশ্যে বলেছেন আলোচনা করে কিছু সময়ের ব্যবধানে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নিয়ে আর কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। এখন কথা বলতে হবে একাদশ সংসদ নিয়ে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের যৌক্তিকতা থাকলে তা নিয়েও আলোচনা হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে আলোচনার বিকল্প নেই। সকলে মিলে, নতুন বাস্তবতা মেনে নিয়েই আলোচনায় বসা প্রয়োজন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২২:২০ | বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com