| শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি, বার্মিংহাম : প্রাণের বিনিময়ে মায়ের ভাষাকে অক্ষুন্ন রাখতে শহীদ হয়েছিলেন সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ নাম না জানা আর অনেকে । সারা বিশ্বের বাংলাদেশীদের পাশা-পাশি বার্মিংহামেও স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর স্মলহিত পার্কে ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় ও গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করা হয়েছে দিবসটি । ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন শহর থেকে আসা রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ।
একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসা মানুষের পদভারে জেগে উঠেছিল বার্মিংহামের স্মলহিথ পার্কের অস্থায়ী শহীদ মিনারটি । শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সেই ভাষা শহীদদের আজ স্মরণ করছে গোটা জাতি। কোথাও আজ কোনো বিভেদ নেই। শিশু থেকে বুড়ো সবার হাতে উঠেছে ফুল। কণ্ঠে একুশের অমর সেই সুর_ ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…।’
গত ২১শে ফেব্রুয়ারী প্রথম প্রহরে রাত ১২টা এক মিনিটে শহীদ মিনারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ্যে পুষ্মস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বার্মিংহামের সহকারী হাইকমিশনার ফয়সল আহমদ । এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ নানা অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ঘোষিত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত বাঙালি রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে হরতালের প্রস্তুতি চলতে থাকে। সরকার ২০শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় একটানা এক মাসের জন্য ঢাকা জেলার সর্বত্র হরতাল, সভা, মিছিলের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছাত্ররা দলে দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েত হয়। ঐতিহাসিক আমতলায় ছাত্রদের সভা থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিকল্পনা করা হয়, চারজন চারজন করে মিছিল নিয়ে বের হওয়ার। ছাত্ররা মিছিল শুরু করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাকে তুলতে থাকে। বেলা তিনটায় গণপরিষদের অধিবেশনের আগেই শুরু হয়ে যায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ। বিকাল চারটায় পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে ছাত্রদের ওপর গুলি চালায়। বুলেট কেড়ে নেয় জব্বার ও রফিকের প্রাণ।
গুলিবিদ্ধ আবুল বরকত রাত পৌনে আটটায় হাসপাতালে মারা যান। তাদের মৃত্যু সংবাদে বাংলা ভাষার প্রাণের দাবি সারা দেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারি অমর ভাষা দিবস হিসেবে পালনের রেওয়াজ চালু হয়। সারা দেশে তৈরি হয় অসংখ্য শহীদ মিনার।
Posted ০৩:২৭ | শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin