শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রাখলেন রিজভী

  |   বুধবার, ২৪ জুন ২০২০ | প্রিন্ট

আন্দোলনের হুমকি দিয়ে রাখলেন রিজভী

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধির আইন পাস হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বছরে কয়েকবার বৃদ্ধির জন্য সংসদে উত্থাপিত বিলের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র তীব্র নিন্দা নয়, ধিক্কার জানাচ্ছি। সংসদে এই আইন পাশ না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এই করোনাকালের মধ্যেও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন’ (সংশোধন) বিল-২০২০ উত্থাপন করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ। গত বছর ডিসেম্বরে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। সংসদে অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত এই বিলটির মাধ্যমে প্রমাণিত হলো- বর্তমান সরকার এক নিষ্ঠুর ও অবিবেচক গণদুশমন।

২০০৩ সালে পাশ হওয়া বিদ্যমান আইনে রয়েছে- কোনো অর্থবছরে একবারের বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু গতকাল সংসদে উত্থাপিত আইন কার্যকর হলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ জ্বালানির দাম পরিবর্তন করতে পারবে। বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিল পাশ মানে গরিবদের সলিল সমাধি রচনা করা।

করোনাভাইরাসের আঘাতে দেশে যখন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, মানুষকে মৃত্যু চিন্তা গ্রাস করছে, চারিদিকে শুধু কর্মহীন মানুষের হাহাকার, ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে তখন জনগণের অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর বারবার মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণকে ফৌত করা। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, সব ব্যবস্থাই করা আছে, তাহলে খাবারের সন্ধানে ও ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ সারি বেধে ঢাকা ছাড়ছে কেন?

দেশের অর্থনীতি আত্মসাৎ করে স্বার্থলোলুপ ক্ষমতাসীনদের সদলবলে টাকা পাচার, বেগম পল্লী কিংবা সেকেন্ড হোম তৈরির কাহিনী নিরেটভাবে গাঁথা। তাই ফাঁকা অর্থভাণ্ডার পূরণ করতে জনগণকে বুলডোজার দিয়ে পিষে এখন বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করে টাকা সংগ্রহ করা হবে। করোনার দুর্যোগকালেও কর্মহীন, আয়হীন মানুষের রক্ত শোষণ করে জনগণকে মৃত লাশ বানিয়ে এরা টাকা আদায় করছে।

এমনিতেই বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের উৎপীড়নে কম আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত আর তার ওপর বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পাশ হলে এক নরকের মধ্যে ঠেলে দেয়া হবে দেশকে। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের কাছ থেকে টাকা চুষে নিতে ড্রাগের নেশার মতো পেয়ে বসেছে সরকারকে।

আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বছরে কয়েকবার বৃদ্ধির জন্য সংসদে উত্থাপিত বিলের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র তীব্র নিন্দা নয়, ধিক্কার জানাচ্ছি। সংসদে এই আইন পাশ না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এই করোনাকালের মধ্যেও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

রিজভী বলেন, গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী আবারও স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অসত্য, অশোভন কথা বলেছেন যা অসুস্থ মনের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার একটাই প্রশ্ন- প্রধানমন্ত্রী বারবার জিয়ার কথা বলেন, জিয়া তখন সরকারি চাকরি করতেন, কোনো মন্ত্রী এমপি ছিলেন না। কিন্তু যারা খন্দকার মোশতাকের সরকারে মন্ত্রী এবং সেই সময়ের পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন তাদের কথা একবারও উল্লেখ করেন না। কারণ তারা সবাই ‘৭৫ এর ১৫ আগষ্টের আগে আপনার মরহুম পিতার নেতৃত্বে সরকারেও খন্দকার মোশতাকসহ তারা মন্ত্রী-এমপি ছিলেন।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আর সে কারণেই কে খন্দকার মোশতাকের কেবিনেটে শপথ পাঠ করিয়েছেন সে কথা আপনি কখনোই উচ্চারণ করেন না। আপনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রী টাঙ্গাইলের আব্দুল মান্নান কীভাবে আপনার অধীনেই রাজনীতি করেছেন এবং এমপি হয়েছেন? মালেক উকিল সাহেব স্পিকার ছিলেন এবং আপনার পরিবারের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর সেটিকে সাফাই গেয়ে বিদেশ থেকে মন্তব্যও করেছিলেন। অথচ সেই মালেক উকিলের গড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

সুতরাং অন্যকে দোষারোপ না করে নিজের দলের লোকদের দিকে তাকালেই আপনি ইতিহাসের বহু মীর জাফর দেখতে পাবেন। স্বাধীনতার ঘোষক ও মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও অপবাদ দেয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধকেই অপমান করা। প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৫৪ | বুধবার, ২৪ জুন ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com