
| শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | প্রিন্ট
নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাহসী নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সক্রিয় একজন সদস্য শহীদ শহীদুল ইসলাম চুন্নুর ৩২তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ।
১৯৯০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদুল ইসলাম চুন্নু শহীদ হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) ও তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
শহীদুল ইসলাম চুন্নু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তবে শৈশব ও বেড়ে ওঠা গোপালগঞ্জ সদরের ব্যাঙ্গপাড়ায় (বর্তমানে মোহাম্মদপাড়া)।
১৯৯০ সালে স্বৈরচারী সরকার চেয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কোণঠাসা করে রাখতে। যাতে ছাত্রনেতারা কোনো রকম আন্দোলনের সুযোগ না পান। এ কারণে সরকার বেশ কিছু পেটুয়া বাহিনী তৈরি করে রেখেছিল। রাতের ক্যাম্পাস যেন ছিল অস্ত্রের রাজত্ব। গোলাগুলির আয়োজন শুনে ঘুমাতে হতো এবং গুলির আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙত।
এমনটিই বর্ণনা করেছেন শহীদ চুন্নুর রাজনৈতিক বড় ভাই, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাবেক ছাত্রনেতা ও শহীদ চুন্নু স্মৃতি সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য চুন্নু তার জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শহীদ চুন্নু গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবু কাওছার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘১৯৯০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতা তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবের (বর্তমানে বিএনপির নেতা) নেতৃত্বে মিছিল বের হয় হল থেকে। টিচার্স ক্লাবের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল। বর্তমানে যেখানে চুন্নুর স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতি স্মারক করা হয়েছে, সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয় চুন্নু। হল গেইটে শান্তিপূর্ণ মিছিল এগিয়ে যেতে শুরু করলে হঠাৎ গুলি এসে চুন্নুর মাথার পেছনে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
‘বেলা ১১টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে করে চুন্নুর মরদেহ নিয়ে আমরা গোপালগঞ্জে যাই। সেখানে পৌরসভা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।’ বলেন আবু কাওসার।
চুন্নুর স্মৃতি সংরক্ষণ করতে হলের প্রাঙ্গণে নির্মিত হয় একটি স্মৃতি স্মারক। এটি হলের প্রধান প্রবেশপথের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। শহীদ চুন্নু স্মৃতি সংসদের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এটি উদ্বোধন করেন। ম্যুরালটির ডিজাইনার ছিলেন কামরুল হাসান সিপন।
শহীদুল ইসলাম চুন্নুর শাহাদাত দিবস উপলক্ষে বেশ কিছু উদ্যোগ হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শহীদ চুন্নুর বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘শহীদ শহীদুল ইসলাম চুন্নু ছিলেন একজন নির্ভীক নেতা। বর্তমানেও শহীদ চুন্নু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে একজন আদর্শ হয়ে আছেন। আমরা চেষ্টা করব শহীদ চুন্নুর ইতিহাসকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে।
Posted ০৪:৪৫ | শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain