
একে কুদরত পাশা | শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের ৫টি খাল পূণরুদ্ধার ও সংরক্ষণে পরিবেশবিদ সমিতি বেলা কতৃক দায়েরকৃত রিট পিটিশন ১০৮১/২৩ উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে পরিদর্শনে আসেন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়ক ও হাওর বাঁচাও আন্দোলন সিলেট জেলা কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহ্ সাহেদা আখতার।
শনিবার সকাল ১১ টায় কাজীর পয়েন্টে লতিফা কনফারেন্স সেন্টারে ‘বেলা’ কর্তৃক মামলায় উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে, পর্যালোচনা সভা কর বেলা।
সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন ও হাওর এরিয়া আপলিফমেন্ট সোসাইটি হাউস এর আয়োজনে পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি একেএম আবু নাসের এর সভাপতিত্বে ও হাউসের নির্বাহি পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ’র পরিচালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ও হাওর বাঁচাও আন্দোলন সিলেট জেলা কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সাবেক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শেফু, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন, জেলা পরিষদ সদস্য সেলিনা আবেদীন।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আজাদ রুমান, অ্যাডভোকেট শাহিনুর রহমান শাহিন, সাইফুল আলম সদরুল, ফজলুল করিম সাঈদ, শওকত আলী, সাংবাদিক মাসুম হেলাল সাংবাদিক জসিম উদ্দিন, লোকছান মিয়া, গোলাম হোসেন অভি, আব্দুল গনী পাঠান, মসিউর রহমান রাসেল, রুশনা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার মামলায় খাল উদ্ধার অভিযান বর্তমানে চলছে। খালে যখনই উচ্ছেদ অভিযান চলে, শুধু অসহায়দের ভিটে উচ্ছেদ হয় কিন্তু প্রভাবশালীরা দখলেই থেকে যান। খালের পূর্বাবস্হা ফিরিয়ে আনতে হলে সকল দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। খাল উদ্ধার অভিযান মাঝখানে এসে যেন থেমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। খালের অভিযানে প্রবেশদ্বার খোলা হলেও পতিত মুখে এসে বন্ধ হয়ে যায়। এ-সব হলে শহরের দূর্ভোগ কখনো যাবেনা। পতিত মুখের দখলদারদের উচ্ছেদ করা না হলে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা বিপত্তি সৃষ্টি হবে,এবং শহরে জলবদ্ধতা ও দূর্ভোগ আরো বাড়বে।
১৯৫২ সালের ম্যাপ অনুযায়ী খাল চিহ্নিত করে অভিযান শেষ করতে হবে। এবং খাল দখলকারীদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। সত্যিকার দখলবাজদের উচ্ছেদ করা না হলে গণ- আন্দোলন গড়ে তুলবে সাধারণ মানুষ। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী খাল উচ্ছেদ না হলে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করতে হবে। এসময় তারা আরো বলেন, শুধু উচ্ছেদ নয় পাশাপাশি খাল খনন করে সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রধান আলোচক শাহ্ সাহেদা আখতার বলেন, ২০০৫ সাল থেকে খামারখাল নিয়ে কাজ করি। সবকটা খাল উদ্ধারে জেলা প্রশাসক,পৌর মেয়রের সাথে কথা বলি। সুনামগঞ্জ এসে নাগরিক সংলাপ করি। ২০২২ সালে ৫ খাল উদ্ধারে জেলা প্রশাসক,পৌর মেয়রকে নোটিশ পাঠাই। কিন্তু নোটিশ কাজে আসেনি।পরে হাইকোর্টে মামলা করি।আদালতের আদেশ নিয়ে আসায় এখন প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। খামারখালে দখলদারদের তালিকায় ২০০৫ সালে ২৪ জন,২০১৭ সালে ৮৪ জন,২০২২ সালে এসে ৭৯ জন দেখানো হয়েছে। এখানে গড়মিল দেখা যাচ্ছে।আমরা চাই দখলদারদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে। এবং শুধু অসহায়রা যেন উচ্ছেদ না হয়,দখলকারী সকলকেই উচ্ছেদ করতে হবে। আদালতের আদেশ মানা না হলে, বেলার পক্ষ থেকে আবারো আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, শহরের জলাবদ্ধতা দূর করতে এবং পানি প্রবাহ সচল রাখার দায়িত্ব ‘বেলার’ না, এটি জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের। তারা এটি না করায় সুনামগঞ্জবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বেলা হাইকোর্টে যেতে বাধ্য হয়। সুনামগঞ্জের মানুষের সহায়তা পেয়েছি। আদালতের আদেশ নিয়ে এসেছি। আদেশ বাস্তবায়ন কতটুকু সেদিকে খেয়াল রেখে বেলাকে সহায়তা করার আহবান জানান তিনি। পর্যালোচনা সভায় সবার সর্বসম্মতিক্রমে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে খাল উদ্ধারের দাবিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মনির উদ্দিন মনিরকে সমন্বয়ক করে ২১সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পর্যালোচনা সভা শেষে বেলার সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ্ সাহেদা আখতার সুনামগঞ্জের পরিবেশ কর্মী, সাংবাদিক, ও সুশীল সমাজের নাগরিকদের নিয়ে শহরের খামার খাল, বড়পাড়া খাল, তেঘরিয়া খালের উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শন করেন।
Posted ১৭:২৫ | শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin