শনিবার ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

মানসিক প্রতিবন্ধী পরিচয়হীন রুমার মানবেতর জীবন যাপন

শাহরিয়ার মিল্টন   |   শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট

মানসিক প্রতিবন্ধী পরিচয়হীন রুমার মানবেতর জীবন যাপন

শেরপুর : তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সে বসবাস মধ্যবয়স্ক নারী রুমার। নিজের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেন না তিনি। তীব্র শীতে কোনো গরম কাপড় ছাড়াই সেখানে রাত্রী যাপন করেন তিনি। আবার কখনো বিভিন্ন ভবনের খোলা জায়গায় রাত্রী যাপন করতে দেখা যায় তাকে। সারাদিন বাজার ঘুরে উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়েই কাটে তার সময়।

স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে হাসপাতাল চত্বরে দেখা মেলে রুমার। প্রথমদিকে কারো সঙ্গে কথা না বললেও এখন নাম জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন রুমা। ঠিকানা সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা না দিতে পারলেও কোনো আদালত এলাকার ইঙ্গিত করেন তিনি। স্থানীয় চা দোকানীরা মাঝেমধ্যে চা-বিস্কিট খেতে দেন রুমাকে। তীব্র শীতে তার পরিচয় চেয়ে একটি পোস্ট ছড়িয়ে যায় ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপরই স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভয়েস অব ঝিনাইগাতী এবং শেরপুর ৭১ এর সদস্যরা খাবার, শীতবস্ত্র ও কম্বল নিয়ে রুমার খোঁজ করেন। তাকে পাওয়া যায় পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর।

হাসপাতালের স্টোর কিপার হারুন অর রশীদ বলেন, গত তিন মাস ধরে এখানেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন রুমা। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে তার পরিবারের পরিচয় বের করা জরুরি। তার প্রকৃত চিকিৎসাও প্রয়োজন। তাহলে হয়তো রুমা আবারো সুস্থ হয়ে উঠবে।

স্বাস্থ্য সহকারী খাদিজাতুল জান্নাত বলেন, রুমা মানসিকভাবে অসুস্থ। অনেক কিছুই সে মনে রাখতে পারে না। সকালের কথাও সে বিকেলে বলতে পারে না। তার চিকিৎসা প্রয়োজন। স্থানীয়রা মাঝে মধ্যে রুমাকে খাবার দিলে খুব তৃপ্তি নিয়েই সে খায়। ঝিনাইগাতী সদরের ইউপি সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল হক মনির বলেন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভয়েস অব ঝিনাইগাতীর সদস্যরা নিয়মিত ওই নারীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি, আপাততো তাকে খাবার ও শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। তার পরিচয়ের বিষয়ে শুধু রুমা বাদে আর কিছুই বলতে পারে না। আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা এরইমধ্যে ফেসবুকে রুমার ছবিসহ পরিচয় জানতে চেয়ে পোস্ট করেছেন। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা তার পরিবারের খোঁজ বের করতে পারবো।

ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা বলেন, নারীটি অজ্ঞাত ও মানসিক প্রতিবন্ধী। যেহেতু হাসপাতাল চত্বরে থাকেন আমরা তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি জেলা হাসপাতালের ওসিসি ডিপার্টমেন্টকে জানিয়েছি।

এদিকে শেরপুর জেলা হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলের (ওসিসি) জেলা কর্মকর্তা অমিত শাহরিয়ার বাপ্পী বলেন, আমি ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ওই নারীর সম্পর্কে জানতে পারি। ওই নারী মানসিক প্রতিবন্ধী বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। যেহেতু আমরা অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করি, আমাদের পক্ষ থেকে ওই নারীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে শেরপুরে যেহেতু সেইফ হোম নেই, তাই তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে তার কাছে খাবার ও শীতবস্ত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে আমরা রুমার বিষয়টি জানতে পেরেছি। তার ছবি তুলে পরিচয় জানার চেষ্ট করছি। থানা থেকেও তাকে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৫০ | শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com