নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে ৯৫ শতাংশ সফল হওয়ার দাবি করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ অচিরেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মগবাজারের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলডিপি উদ্যোগে নির্বাচনপরবর্তী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অলি আহমদ বলেন, ‘জনগণ সচেতন হয়েছে, দেশের ভালো-মন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। যুবসমাজ এতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তোমাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা। এদেশকে তোমাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘ভোট চোর, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, কৃত্রিমভাবে নিত্যপণ্যের মূলবৃদ্ধিকারী, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী এবং জনগণকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিতকারীদের ওপর গজব নেমে এসেছে। জনগণ তাদের দাঁতভাঙা উচিত জবাব দিয়েছে। সরকারের প্রতি জনগণ অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণ এই পাতানো এবং ভাগাভাগির নির্বাচন বর্জন করেছে। জনগণ তাদেরকে খোলা মাঠে নেংটা করে দিয়েছে।’
নির্বাচেন আগের দেশের একসপ্তাহের তথ্য চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এসময়ে সরকার দলীয় আসল এবং তাদের ডামি প্রার্থীরা ঘরে ঘরে টাকা বিতরণ করেছে, ভোটারদের ওপর তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি, আগুন সন্ত্রাস, ককটেল বিস্ফোরণ, জ্বালাও পোড়াও, হানাহানি এবং মারামারির মাধ্যমে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে, প্রণোদনার নামে বিভিন্ন পদবির কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে সরকারের আসল এবং ডামি প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল এবং কয়েকজন মারাও গেছে। গোপন কক্ষে জাল ভোট দেওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা ছিল, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ৬০ শতাংশ ভোট প্রদান নিশ্চিত করার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, রেজাল্ট সিট আগে থেকেই দস্তখত করা হয় এবং ভোটের রেজাল্ট আগেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল।’
নির্বাচনের দিনের তথ্য তুলে ধরে কর্নেল অলি বলেন, ‘অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল, কোনো কোনো কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে যায়নি, কোনো কোনো কেন্দ্রে শুধু কুকুর ও বানর খেলাধুলা করছে এবং ছোট ছোট শিশুরা ভোট কস্টিং করেছে। হঠাৎ নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সিইসি বললেন, ২৭ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে, পাশ থেকে সচিব বললো না স্যার ৪০ শতাংশ হয়েছে, শতকরা প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে একাধিক নির্বাচনী এজেন্ট ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমরা নিশ্চিত গড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষমতা ছাড়ার পন্থা বের করুন। হাতে সময় খুব বেশি নেই। যতই লাফালাফি করেন না কেন লাভ নাই, বাস্তবতা ভিন্ন, জনরোষে পড়তে পারেন। কারণ নিত্যপণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, পাঠ্যপুস্তক গুলিতে ইসলাম ধর্মবিরোধী বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সুচিকিৎসা নাই বললেই চলে, রফতানি-আমদানি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ এখন বাজারে নেই। তার উপর ২০টি ব্যাংক প্রায় দেউলিয়া, সীমাহীন দুর্নীতি ও টাকা পাচার চলছে, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সংকট ক্রমাগত বাড়ছে এবং ডলার সংকট, বিদেশি ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা নেই।’
Posted ১৫:৫৫ | সোমবার, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain