| বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
২৯ জানুয়ারি: বহুল আলোচিত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে, যাতে ’৯০ পরবর্তী প্রতিটি সংসদে সরকারি অথবা বিরোধী দলে থাকা বিএনপি নেই।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিদায়ী ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে কোরআন তেলওয়াতের মধ্যদিয়ে অধিবেশন শুরু হয়।
বিদায়ী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবারো ওই পদে প্রার্থী হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তিনি অধিবেশনের শুরুতে সভাপতিত্ব করেননি।
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন। বিএনপির অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় নেতার মর্যাদায় অভিষিক্ত রওশন এরশাদ অধিবেশনে রয়েছেন। যোগ দিয়েছেন তার স্বামী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও। নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর তার শপথ অনুষ্ঠানেও ছিল নাটকীয়তা।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় এই সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ হারায় তারা।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গঠিত এই সংসদকে অবৈধ আখ্যায়িত করে অধিবেশন শুরুর দিন বুধবার কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি, যাতে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষও হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। তবে আবদুল হামিদের ভাষণের আগে অধিবেশনের প্রথম কার্যসূচি অনুযায়ী নতুন স্পিকার নির্বাচন হয়।
স্পিকার পদে শিরীন শারমিন পুনঃনির্বাচিত হন। ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়া। আওয়ামী লীগের মনোনীত এই দুই প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর অধিবেশন ২০ মিনিটের জন্য মুলতবি হয়। নবনির্বাচিত দুজন সংসদ ভবনের সাততলায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে শপথ নেবেন। তাদের শপথ পড়াবেন আবদুল হামিদ।
নতুন স্পিকার শিরীন শারমিন সভাপতির আসনে বসার পর সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেয়া হবে, যারা স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশন পরিচালনা করবেন।
এরপর স্পিকার শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। দশম সংসদের সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহান মারা যাওয়ায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন ও তা নিয়ে আলোচনার পর রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেয়া হবে।
এরপর রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মুলতবি করা হবে।
এই সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ইতোমধ্যে সরকারে যোগ দেয়ায় তাদের কার্যকর ভূমিকার পালন করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অবশ্য এরশাদ নেতৃত্বাধীন দলটির নেতারা বলছেন, মন্ত্রিসভায় থাকলেও সংসদে তারা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন।
দশম সংসদে উপনেতার দায়িত্ব পালন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। প্রধান হুইপ হয়েছেন আওয়ামী লীগের আ স ম ফিরোজ। বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপের দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় পার্টির তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
এবার সামনের সারিতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পাঁচটি আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টিকে পাঁচটি আসন দেয়ার বিষয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “সামনের সারিতে আনুপাতিক হারে যা পাওয়ার কথা তার থেকে একটি বেশি আসন দেয়া হয়েছে।”
মঙ্গলবার রাতেই সংসদ সদস্যদের আসন বণ্টনের তালিকা সংসদ কক্ষে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা রওশনের পাশের আসন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের। তার পাশে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং এ কে এম মাঈদুল ইসলাম বসছেন।
সামনের সারিতে জাতীয় পার্টির পাঁচজনের পাশেই জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর আসন।
এদিকে চলতি সংসদে পাসের জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র একটি বিল জমা পড়েছে। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০১৪ নামের এই বিলটি সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের জবাব দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক প্রশ্ন জমা পড়েছে। তবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো মুলতবি প্রস্তাব পড়েনি।
গত ২৪ জানুয়ারি নবম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি এই সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
দশম সংসদে এ পর্যন্ত ২৯৭ জন সদস্য শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৩১ জন, জাতীয় পার্টির ৩৪ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ছয়জন, জাসদের (ইনু) পাঁচ জন, তরীকত ফেডারেশনের দুই জন, জেপি (মঞ্জুর) দুই জন এবং বিএনফের একজন সদস্য রয়েছেন।
Posted ১৮:০০ | বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin