
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৩ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, আদালত চত্বরে যারা বিচার পাওয়ার আশায় আসেন তাদের পয়সায় আপনার আমার বেতন হয়। তারা যেন সুবিচার পায় সে বিষয়ে বিচার বিভাগে সংশ্লিষ্ট সকলের খেয়াল রাখা উচিত। বিজ্ঞ বিচারকগণ একটি জিনিস মনে রাখবেন- বিচার বিক্রির জিনিস নয়। বিচার প্রার্থীদের ন্যায়বিচার পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার।
বুধবার (৩ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে বিচারক ও আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিতব্য ছায়াকুঞ্জের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন ও নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের সকল কর্মকাণ্ডে বিচারক ও আইনজীবী একই সুতোয় গাঁথা মালা। আপনারা মনে রাখবেন বিচার যদি একটি পাখি হয় তবে বিচারকগণ সেই পাখির একটি ডানা এবং আইনজীবীগণ আরেকটি ডানা। এই দুইটি ডানা যদি সমান তালে না ঝাপটাতে পারে তবে সেই পাখিটি উড়তে পারে না। ঠিক একইভাবে আপনাদের মাঝে যদি সমন্বয় না থাকে তবে সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার পেতে বেশ বেগ পেতে হবে ও দীর্ঘ মামলাজট দেখা দেবে।
আইনজীবীদের প্রতি আদালত বর্জন না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার কোনো বিচারক যদি অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন, কিংবা তিনি যদি তার দায়িত্বে পালনে গাফিলতি করেন তবে আপনারা আমাকে এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারদের জানাবেন। আপনাদের জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা। একটি জিনিস মনে রাখবেন বিচার বিক্রির জিনিস নয়। যদি কোনো বিচারক বিচার বেচাকেনা করেন তবে আমি তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করব না, এমনকি তার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। আপনারা আইনজীবীরা আদালত বর্জনের মত সিদ্ধান্ত নেবেন না, এতে বিচারিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, গত বছর ২০২২ সালে আপনারা ১৬৩ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এ বছর সেই ধারা যদিও কিছুটা কমেছে তবে যেই ধারা চলমান আছে তা সন্তোষজনক। চলতি বছরে শতকরা ১৩১ শতাংশ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তবে অচিরেই মামলা জট থেকে বিচার প্রার্থীরা রেহাই পাবেন। এ দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারার সঙ্গে বিচারিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। উন্নয়নের এই ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে, কোনোভাবেই যেন বিচারিক কার্যক্রম পিছিয়ে না পড়ে।
এ সময় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী, উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রার মুন্সি মশিয়ার রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আসসামছ জগলুল হোসেন, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মুন্সি মোহসীন মিঞা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৬:৪২ | বুধবার, ০৩ মে ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain