| বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট
ঢাকা, ২২ জানুয়ারি : সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সৈয়দ আশরাফ মিথ্যাচার করেছেন। তার মুখে এ ধরনের বক্তব্য শোভা পায় না।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাই সরকার দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি অন্যদিকে ধাবিত করতে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সংঘাত সৃষ্টি করছে।
মির্জা আলমগীর বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, সরকার যা শুরু করেছে তার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আপনারাই বলুন, বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে কোথায় দেশদ্রোহিতার ছাপ রয়েছে?
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যৌথবাহিনী দিয়ে মানুষ হত্যা, গুম ও খুন বন্ধ করুন, সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন দিন, দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করুন, জনগণকে মুক্তি দিন। অন্যথায় দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
সরকারকে যৌথবাহিনী দিয়ে মানুষ হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর মাধ্যমে যে সব হত্যাকান্ড ঘটেছে, অবিলম্বে তার সুষ্ঠু তদন্ত করুন। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত দাবি করেন।
সরকার সরাসরি দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে মন্তব্য করে মির্জা আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রের সব যন্ত্রকে দলীয়করণের মধ্যে দিয়ে সরকার দেশের হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপিরা যে ভাষায় বক্তব্য রাখছেন তা বাংলাদেশের নাগরিক অধিকারের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে জনগণের ওপর একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে যে কথা বলবে, তাকে কারাবরণ, হত্যা, গুম ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ফলে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে মানুষ শঙ্কিত।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই নির্বাচন ছিল প্রহসন ও একতরফা নির্বাচন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দল অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে।
সরকার যৌথবাহিনী দিয়ে সারা বাংলাদেশে হত্যা, গুম ও খুন করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশে বিচারবহির্ভুত হত্যাকা- চলছে। গত ৩ দিনে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং সেই ১০ ব্যক্তির লাশও উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ৩ মাসে সরকার যৌথবাহিনী দিয়ে ২২২ জনকে হত্যা এবং ১৮৭ জনকে গুম করেছে।
মির্জা আলগীর বলেন, বিরোধী দলকে নির্মূল করতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশবর্তী হয়ে হত্যা, খুন, গুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগকে আহ্বান জানাচ্ছি এসব হত্যা, গুম, নির্যাতন বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে মানুষের দাবি অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, সালাহউদ্দিন আহমদ, মিজানুর রহমান মিনু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমউদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
Posted ১৩:৫১ | বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin