নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
নারায়ণগঞ্জ : পুলিশের অনুমতি না পেলেও সংশয়ের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন আয়োজনে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে গিয়াসউদ্দিন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গনে ওই সম্মেলন হবে।
এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিন হলেও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা মেরুকরণ। এ পদে বর্তমান সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের প্রতিদ্বন্দ্বী অপর যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীবকে ইতোমধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ দলবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশে দিয়েছে। ১৫ জুন রাতে ওই নোটিশের পর বদলে যেতে শুরু করেছে সম্মেলনের মেরুকরণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালের আগস্টে বিএনপি ভেঙে বিএনএফ গঠন করার চেষ্টা করা হয়। ওই সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও সদর উপজেলার কমিটি গঠন করা হয়েছিল। জেলা বিএনএফ এর ১৪ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি নিবন্ধন আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল আবু আল ইউসুফ খানকে। তিনি এখন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব। কমিটির অন্যরা এলন যুগ্ম আহ্বায়ক রহিমা শরীফ, আনোয়ার প্রধান, কামরুল হোসেন। সদস্য সচিব ছিলেন মাসুকুল ইসলাম। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা হলেন কবির প্রধান, কাজী রুবায়েত হোসেন, মাহফুজুর রহমান, আল আমিন, সাখাওয়াত হোসেন, সাফিয়া ইসলাম, মাহবুব সোবহান, কুতুবউদ্দিন ও আবদুল ইউসুফ। এসব নেতাদের সকলেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের ঘনিষ্ঠ অনুগামী হিসেবে নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি করে থাকেন।
১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনের আগে বিষয়গুলো প্রকাশ পেলে ১৫ জুন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এতে বলা হয়, ‘‘আপনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামে একটি ভূঁইফোড় সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন বলে আমরা গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে জানতে পেরেছি। দল আরও অবহিত হয়েছে যে, আপনি শুধুমাত্র উক্ত সংগঠনের সাথে যুক্তই হননি, বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি, নানাবিধ অপপ্রচার ও দলবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত আছেন। আপনার এহেন তৎপরতা শুধু সংগঠন বিরোধীই নয়, বর্তমান দুঃসময়ে দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। সুতরাং উল্লেখিত ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতার জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শিয়ে আগামী ৫ (পাঁচ) দিনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি অতীব জরুরী।’
২০০২ সালে জেলা ছাত্রদলের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হয়ে সম্মেলনের কয়েকদিন পর শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত সরকারি মহিলা কলেজের কমিটি গঠনের সময়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ আরো কয়েকজন নেতাকে কলেজে প্রবেশে বাধা দেয়। এ ঘটনায় রাজীবকে প্রথমাবস্থায় ছাত্রদল থেকে বহিস্কার করা হলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন জানান, আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশেই ভোটগ্রহণ হবে। সম্মেলনটি আমার নিজস্ব স্কুল প্রাঙ্গনে হবে। এ বিষয়ে এর আগেই প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিএনপির কাউন্সিল করার বিষয়ে জেলা বিএনপি আমাদের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেয়নি। এরই মধ্যে স্থানীয় এলাকাবাসী এখানে সম্মেলনের অনুমতি না দিতে আমাদের কাছে আবেদন করেছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন জানান, সম্মেলন হবে উৎসবমুখর। এখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন।
Posted ১০:২৫ | শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin