ডেস্ক রিপোর্ট | রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট
ধর্ম ডেস্ক :নামাজ হলো একজন মুমিনের জন্য মেরাজস্বরূপ ইবাদত। নামাজের সঠিক হওয়ার জন্য যেমন পবিত্রতা, নির্ধারিত সময় এবং কেবলামুখী হওয়া জরুরি, তেমনি নামাজ আদায়ের স্থানও গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (স.) কিছু বিশেষ স্থানে নামাজ পড়াকে নিষিদ্ধ করেছেন, যেখানে অপবিত্রতা, অশুচিতা বা শিরকের আশঙ্কা থাকে। এই প্রবন্ধে কোরআন ও হাদিসের আলোকে সেই নিষিদ্ধ স্থানগুলো এবং বিশেষ ব্যতিক্রমসমূহ আলোচনা করা হলো।
পৃথিবীর প্রায় যেকোনো স্থান নামাজ আদায়ের জন্য উপযুক্ত হতে পারে, যদি তা পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- ‘সমগ্র পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র স্থান বানানো হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মত যেন যেকোনো স্থানে নামাজের সময় হলে সেখানেই নামাজ পড়ে নেয়।’ (বুখারি: ৪৩৮)
তবুও, শরিয়ত কয়েকটি স্থানে নামাজ পড়াকে নিষিদ্ধ করেছে। সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
১. ময়লা ফেলার স্থান
অপরিচ্ছন্নতা ও নাপাকির সম্ভাবনা: এ ধরনের স্থানে অপবিত্র বস্তু থাকতে পারে, যা নামাজের পবিত্রতা নষ্ট করে।
২. কসাইখানা
রক্ত ও অপবিত্রতার উপস্থিতি: কসাইখানায় সাধারণত রক্ত থাকে। যদি কোনো অংশ সম্পূর্ণ পবিত্র ও পরিষ্কার হয়, তবেই নামাজ পড়া সম্ভব।
৩. কবরস্থান
শিরক ও কবর পূজার সাদৃশ্য: তবে জানাজার নামাজ কবরস্থানে পড়া যায়। যেমনটি রাসুলুল্লাহ (স.) করেছিলেন। (সহিহ বুখারি: ৪৬০)
৪. চলাচলের রাস্তা
মানুষের চলাচল বিঘ্নিত ও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা: রাস্তায় নামাজ পড়লে চলাচলে সমস্যা হয় এবং নামাজীরও ক্ষতি হতে পারে।
৫. গোসলখানা
অপবিত্রতা ও নাপাকি: টয়লেট ও গোসলখানায় সাধারণত নাপাকি থাকে। হাদিসে এমন স্থানে জ্বিনের উপস্থিতির কথাও উল্লেখ আছে।
৬. উটের আস্তাবল
পশুর মল-মূত্রের অপবিত্রতা: উটের আস্তাবল সাধারণত নাপাক থাকে।
৭. বায়তুল্লাহর ছাদ
কেবলা নির্ধারণে অসুবিধা: বর্তমানে কাবা শরিফের ছাদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা নেই।
উপরোক্ত নিষিদ্ধ স্থানগুলো সাধারণ পরিস্থিতির জন্য প্রযোজ্য। তবে, বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন: বিকল্প পবিত্র স্থান না পাওয়া, জরুরি অবস্থায় নিরাপত্তার কারণ, নামাজের সময় শেষ হওয়ার উপক্রম ইত্যাদি অবস্থায় এসব স্থানে নামাজ আদায় করা যেতে পারে। তবে পরবর্তীতে তা পুনরায় পড়ার পরামর্শ রয়েছে ইসলামিক স্কলারদের।
আজকের সময়ে কিছু নতুন স্থানেও সতর্কতা প্রয়োজন। যেমন, শপিং মলের পার্কিং লট, ফ্যাক্টরি বা কারখানার নির্দিষ্ট অংশ, হাসপাতালের বিশেষ ওয়ার্ড এবং গণপরিবহনের নির্দিষ্ট স্থান।
নামাজ আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত। তাই নামাজের স্থান নির্বাচনে আমাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। রাসুলুল্লাহ (স.) যে সাতটি স্থানে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন, সেগুলো থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য। বিশেষ পরিস্থিতিতে এসব স্থানে নামাজ পড়লে তা সহিহ হবে, কিন্তু নিয়মিতভাবে এসব স্থান এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ, নামাজ কবুল হওয়ার জন্য শুধু সঠিক পদ্ধতিই নয়, সঠিক স্থানও গুরুত্বপূর্ণ।
Posted ১১:২১ | রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain