রবিবার ৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

তিনটি কেস ষ্টাডি : সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, মিডিয়ার প্রচার বনাম বাস্তবতা

  |   বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

sonkalogo-1

ছবিঃ রক্ষক যখন ভক্ষক হয়

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। যুগ যুগ ধরে এখানে সব ধর্মের মানুষ পাশাপাশি বসবাস করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে শুধু মাত্র রাজনৈতিক কারনে ব্যবহার করা হচ্ছে এই সাম্প্রদায়িক দাজ্ঞার ইস্যুটি। এক্ষেত্রে, মিডিয়া পালন করছে প্রধান ভুমিকা। ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই কোন রকম তদন্ত, বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই মিডিয়া দায় চাপাচ্ছে এক পক্ষকে। ফলে ধাপা চাপা পড়ে যাচ্ছে প্রকৃত ঘটনা। বেচে যাচ্ছে প্রকৃত অপরাধীরা। থামছে না এই সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প।

নিকট অতীতের ঘটে যাওয়া তিনটি আলোচিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আমরা বিশ্লেষণ করবো এভাবে—-

sonkalogo-2jpg

কেস ষ্টাডি -১  : সাথিয়া, পাবনা

গত নভেম্বর ২০১৩ শুরুর দিকে আলোচিত ছিল এই ঘটনাটি। নানা কারনে আলোচিত হয় সেটি। কারন একদিকে এটি ছিল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর নির্বাচনী এলাকা, অন্যদিকে এটি আবার জামায়াত (যাদেরকে মিডিয়া মুলত দায়ী করে থাকে বেশীরভাগ ঘটনায়) আমীর মতিউর রহমান নিজামীরও নির্বাচনী এলাকা। ফলে ঘটনায় জামায়াত জড়িত, এটা প্রচার করতে মিডিয়ার বেগ পেতে হয়নি।

২ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটার পর অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে ৪ নভেম্বর ২০১৩ ইত্তেফাকযেভাবে রিপোর্ট করে,

২৫ বাড়ি মন্দির ভাংচুর, আগুন , সাঁথিয়ায় হিন্দুপাড়ায় আতংক, গ্রেফতার ১

বিএনপি জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীসহ আসামি তিনশ’

পাবনা জেলার সাঁথিয়ায় হিন্দু পাড়ায় বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের পর এলাকার তিনশ’র বেশি হিন্দু পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গ্রামের বাসিন্দা হেনা সাহা বলেন, ‘রাতে ঘুম হয় নাই। কখন যেন বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়- এই ভয়ে সারা রাত ঘুমাইনি’।

এদিকে এ ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে গতকাল তিনশ’ লোককে আসামি করে পুলিশ মামলা করেছে। এ ঘটনায় রেজাউল করিম নামে বিএনপির এক সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইত্তেফাকের পুরো নিউজটা পড়ুন……………

দৈনিক ইত্তেফারে প্রকাশিত রিপোর্টটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

একই ঘটনার জন্য দেখুন, প্রথম আলোর ৩ নবেম্বর ২০১৩ রিপোর্ট

দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশিত রিপোর্টটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

সার কথা হলো, হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, মন্দিরে হামলা হয়েছে। এর জন্য দায়ী জামায়াত-বিএনপি। ফলে তাদের কয়েকজন নেতা কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

ব্যস, খেলা এখানেই শেষ। থেমে গেল মিডিয়া প্রচার। মনে হয় প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়ে গেছে। না, ধীরে ধীরে বের হতে থাকে প্রকৃত ঘটনা, দেখুন—

sonkalogo-1

ছবিঃ সাথিয়া ঘটনার মুল নায়ক মিঠু (লাল গোল চিহ্ন) স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টুকুর সাথে মিছিলে

ক. ৭ নভেম্বর ২০১৩, The Daily Star,

Some attackers seen with Tuku শিরোনামে লিখেছে,

Mithu, one of the men alleged to have vandalised over 100 Hindu houses and temples, inset, at Bonogram in Santhia of Pabna on Saturday, is seen behind State Minister for Home Shamsul Hoque Tuku when he visited the area yesterday.

পুরো নিউজ দেখুন এখানে,

দ্যা ডেইলী স্টারে প্রকাশিক

খ. আরো কিছু দিন পর ১৩ নভেম্বর ২০১৩, গ্রেফতার হন খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বেয়াই। হিন্দুদের ওপর হামলা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিয়াই তসলিম উদ্দিন খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেখুন সেই নিউজটি,

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল ইসলাম টুকু’র বিয়াই তসলিম উদ্দিন খানকে (৩৫) মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত তসলিম বনগ্রাম মিয়াপাড়ার আলহাজ মোসলেম উদ্দিন খানের ছেলে। তসলিম ছাড়াও আতাইকুলা থানার বনগ্রাম ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান খাঁজা এবং যুবলীগ কর্মী দুলালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত ১০ দিনে ১৫ জন গ্রেপ্তার হলো। 

পরিবর্তন ডট কম থেকে,

পরিবর্তন ডট কম থেকে,

অন্যপত্রিকা গুলো লিখেছে চাপে পড়ে পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিয়াই তসলিম উদ্দিন খানকে ছেড়ে দেয়া হয়।

গ. বিডিনিউজ২৪ লিখেছে,

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় এই ঘটনার অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন হিন্দু নারী।

দেখুন সেই নিউজ,

বিডিনিউজ২৪

. চরম জামায়াত-বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত সিপিবি-বাসদের পর্যবেক্ষণ দেখুন, ‘সাঁথিয়ায় হিন্দুদের ওপর হামলা ছিল টুকুর প্রশ্রয়ে’ শিরোনামে ১০ নভেম্বর, ২০১৩, কালের কণ্ঠ লিখেছে,

পাবনার সাঁথিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর প্রশ্রয় ছিল- এমন অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ রবিবার পুরানা পল্টনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছে সিপিবি-বাসদ। সেইসঙ্গে তারা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান। সিপিবি-বাসদের নেতারা বলেন, ওই ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সেখানে পরিদর্শনে যান। এটি তার নির্বাচনী এলাকা। নিজেদের প্রতিনিধিকে দেখে আশ্বস্ত হওয়া তো দূরের কথা, তার সঙ্গে হামলাকারীদের অনেককে দেখে মানুষ আতঙ্কে মুখ বন্ধ করে বসে আছে।

সাঁথিয়ায় ওই হামলার পর সিপিবি-বাসদ প্রতিনিধিদল সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, পুলিশ সক্রিয় হলে এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। হামলাকারীদের বেশির ভাগই ছিল কিশোর ও তরুণ। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল লুটপাট।

পুরো খবর এখানে

abu sayeed

ছবিঃ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাই্যয়িদ

ঙ. এক কালের ডাক সাইটে মন্ত্রী ঐ এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাই্যয়িদ কি বলেন দেখুন,

“সাঁথিয়ায় হিন্দুদের ওপর হামলার জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দায়ী” শিরোনামে ৯ নভেম্বর ২০১৩, সমকাল লিখেছে,

পাবনার বনগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অথচ ঘটনার সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মাত্র ১০ মাইল দূরে থাকলেও তিনি নিজেও আসেননি, তার পুলিশ বাহিনীকেও পাঠাননি। পুলিশকে দিয়ে দুটি মামলা করিয়েছেন, যার সাক্ষী ১০ বছর আগে মারা গেছেন। মূলত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও তার অনুসারীদের কারণেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন।তিনি আরও বলেন, ঘটনার মূল হোতা এখনও মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উস্কানিদাতা ও ইন্ধনদাতাদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে, তবুও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বনগ্রাম বাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ এ সব কথা বলেন। 

পুরো খবর এখানে,

sonkalogo 3

কেস ষ্টাডি -২ : বরিশাল

পাবনার ঘটনার কয়েকদিন পরেই ঘটে বরিশালের ঘটনাটি। এটিও প্রথমে মিডিয়া হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হিসেবে প্রচারের চেষ্টা চালায়।

“বরিশালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮ ঘরে আগুন, আটক ২৫” শিরোনামে অনলাইন নিউজ সাইট রাইজিং বিডি কি লিখেছে দেখুন,

বরিশাল সদর উপজেলার খানপুরা গ্রামে দুই কলেজ ছাত্রকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের আরো তিন বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ মুসলিম জনতা। এনিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মন্দির ও ঠাকুর ঘরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮টি বসত ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

পুরোটা এখানে,

Click this link

প্রথমে বলা হলো, এটি সামান্য খেলা নিয়ে ক্যাচাল। কিন্তু ধীরে ধীরে বের হতে থাকলো, আসলে এর পিছনেও ছিল রাজনৈতিক কুটচাল।

ঘটনার এক সপ্তাহ পর কালের কন্ঠের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে, প্রকৃত তথ্য। দেখুন ২১ নভেম্বর ২০১৩ কালের কন্ঠের রিপোর্ট, “বরিশালে মন্দির ও বাড়িতে আগুন দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা!”

বরিশাল নগরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী নৌকায় করে সদর উপজেলার চরকাউয়ায় গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ি ও মন্দিরে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানেও এমন কয়েকজনের নাম জানা গেছে, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।যে খুনের ঘটনার জের ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বী ওই পরিবারগুলো হামলার শিকার হয়েছে সেই পারভেজের ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এমনকি খুনের ঘটনার পর ওই রাতে চরআইচা এলাকায় ছাত্রলীগের একজন নেতাও গিয়েছিলেন। সেখানে হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পুরো নিউজ এখানে,

Click this link

অবাক করার বিষয় হলো, এ ঘটনায় আসল অপরাধীরা ধরা না পড়ায় একই এলাকায় আবারো একই ধরনের ঘটনা ঘটে। দেখুন ২৫ নভেম্বর, ২০১৩ কালের কন্ঠেরআরেকটি রিপোর্ট,

জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বরিশালের পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকার অধিবাসী রতন ভৌমিকের বাড়িতে এই হামলার ঘ্টনা ঘটে। হামলাকারীরা এ সময় ওই বাড়িতে মনসা মন্দিরের নির্মাণাধীন মনসা প্রতিমা ভাঙচুর ও ২ নারীকে আহত করে বাড়িতে তিনটি সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেয়। রতন ভৌমিক জানান. গৌরনদী পৌরসভার দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকায় তার পৈত্রিক বাড়ির ২ একর ৭৭ শতক জমি স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফিরোজ আহম্মেদ ও তার স্বজনরা দাবি করে আসছেন। এ নিয়ে বরিশাল আদালতে দেওয়ানি মোকদ্দমা বিচারাধীন রয়েছে। 

পুরো নিউজ এখানে,

Click this link

সারাংশ হচ্ছে, এটি মোটেও হিন্দু-মুসলিম দাজ্ঞা বা জামাতী হামলা ছিল না। ছিল খেলা নিয়ে সঙ্ঘাত যার পিছনে মুল নাটের গুরু ছিল সরকারী দলের ক্যাডাররা।

sonkalogo 4

কেস ষ্টাডি -৩ ঃ যশোর 

এটি এখনকার আলোচিত ঘটনা। আমরা মিডিয়ার কল্যানে আমরা প্রথমে জানতে পারলাম এর জন্য জামায়াত-বিএনপি দায়ী।

প্রথম দিন অর্থাৎ ৬ জানুয়ারী ২০১৪ প্রথম আলোর রিপোটে এমনি জানতে পারছি।

“মনিরামপুরে আতঙ্কে সংখ্যালঘুরা, নির্বিকার পুলিশ” শিরোনামে প্রথম আলো লিখেছে,

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পালপাড়ার একজন বাসিন্দা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিজয়রামপুর গ্রামে হিন্দুদের বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই। চরম আতঙ্কে কাটছে প্রতিটা মুহূর্ত। ভোট দিতে না গিয়েও বিএনপি-জামায়াতের রোষানলে পড়তে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ‘মুখোশধারীরা বলে গেছে, ভোট দিতে গেলে তোদের পাড়ার এক মাথা থেকে জ্বালিয়ে দিতাম। না গিয়েই তোরা জীবনে বেঁচে গেছিস।’

পুরো নিউজ এখানে,

Click this link

৭ জানুয়ারী ২০১৪ পত্রিকাগুলোর ভাষ্য এর ব্যক্তিক্রম কিছু না। অর্থাৎ জামাত-শিবির দায়ী। প্রথম আলোর প্রথম দিনের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে জামাত-বিএনপির উপর চলছে মিডিয়া ঝড়।

৮ জানুয়ারী জামায়াতপন্থি নয়া দিগন্ত লিখেছে একটু ভিন্ন ষ্টোরি,

ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, সহিংস ঘটনার জন্য নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী শেখ আবদুল ওহাবের সমর্থকেরা দায়ী। অপরপক্ষে যশোরের প্রশাসন বলেছে, এ ঘটনার সাথে জামায়াত-শিবির জড়িত। ইতোমধ্যে জামায়াত-শিবিরের ৪০ জনের নাম উল্লেখসহ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।

অভয়নগরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, জাতীয় সংসদের হুইপ শেখ আবদুল ওহাব এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন বাঘারপাড়ার অধিবাসী রণজিত রায় এমপি। এ নিয়ে এক মাস ধরে ওই দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে চলছে প্রকাশ্যে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা। একে অপরের সমর্থকদের মারধর, হত্যাচেষ্টা, অফিস পোড়ানোসহ নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে কয়েক দিনে। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন রণজিত রায় এবং কলস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন বিদ্রোহী প্রার্থী শেখ আবদুল ওহাব। এ নির্বাচনে চেঙ্গুটিয়া-চাঁপাতলা মালোপাড়ার ভোটাররা তাদের নিজ এলাকা অভয়নগরের প্রার্থী শেখ আবদুল ওহাবকে ডিঙিয়ে বাঘারপাড়ার বাসিন্দা রণজিত রায়ের নৌকা প্রতীকে ভোট দেন। এতে পরাজিত শেখ আবদুল ওহাব ও তার সমর্থকেরা প্তি হয়ে মালোপাড়ায় হামলা চালায়।

দেখুন এখানে,

Click this link

sonkalogo 5

ছবিঃ ভোরের কাগজের ৮ জানুয়ারী খবর

পাঠক, এর আগে কোন নিউজ সোর্স হিসেবে আমি জামায়াত-বিএনপির কোন মিডিয়ার রেফারেন্স দেইনি। নয়া দিগন্তের রেফারেন্স দেয়ার কারন একটু পরে বলছি। এখন দেখুন ৮ জানুয়ারী ২০১৪ চরম সরকারপন্থি ভোরের কাগজ কি লিখেছে, “অভয়নগরে জামাতের সঙ্গে ছিল পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরাও” পত্রিকাটি লিখেছে,

এ পাড়ার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক জানান, সন্ত্রাসীরা শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয়, মুসলমানদের বাড়িঘরও ভাঙচুর করে। তিনি জানান, তার বাড়ি ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরো কয়েকজন মুসলমান নেতাকর্মীর বাড়িঘরও রোববার ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই হামলার পেছনে জামাত-শিবির চক্র ছাড়াও নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান সংসদের সরকার দলীয় হুইপ শেখ আব্দুল ওহাবের নেতাকর্মীরাও অংশ নেয়।

দেখুন এখানে,

Click this link

sonkalogo6

ছবিঃ যশোর ঘটনার নাটের গুরু আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল ওহাব

এবার আরেকটু যাই, ৮ জানুয়ারী ২০১৪, মানবজমিন বিষয়টি আরো খোলাসা করেছে এভাবে,

নির্বাচনের আগেই চাপাতলা মালোপাড়ার বাসিন্দাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন হুইপ অধ্যক্ষ আব্দুল ওহাব। নির্বাচনে নৌকার বাইরে বের হতে না পারলে পরিণাম ভাল হবে না বলে শাসিয়েছিলেন সংখ্যালঘুদের। তিনি তাদের বলেছিলেন, তিনি এখনও আওয়ামী লীগে আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। দল তাকে বহিষ্কার করেনি। ফলে এবারের সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় সংখ্যালঘুরা যদি ভেবে থাকেন ওহাব আর আওয়ামী লীগে নেই, তার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেছে, তাহলে তারা ভুল করবেন। নৌকার প্রার্থী রণজিৎ রায় আপনাদের স্বজাতি হওয়ায় যদি ভাবেন তাকে ছাড়া আপনারা অন্য কাউকে ভোট দেবেন না তাহলে ভুল করবেন। ভোটের পরে এর জন্য আপনাদের খেসারত দিতে হবে। হিন্দু সমপ্রদায়ের নেতৃস্থানীয়দের উদ্দেশ্য করে হুইপ ওহাব বলেছিলেন, আপনারা সামপ্রদায়িকতা থেকে বের হতে পারবেন না, আর আমার কাছে অসাম্প্রদায়িক মানসিকতা আশা করবেন- সেটা হবে না। আপনাদের কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করছে ভোটের পরে আমি অসাম্প্রদায়িক থাকবো না সাম্প্রদায়িক আচার-আচরণ করবো। এদেশের জামায়াত-শিবির শুধু সাম্প্রদায়িকতা লালন করে সেটা ঠিক নয়, এদেশের সংখ্যালঘুরাও সাম্প্রদায়িক।

দেখুন এখানে,

Click this link

সরকার বান্দব মানবকণ্ঠ কি লিখেছে দেখুন। ৮ জানুয়ারী ২০১৪,

মালোপাড়ায় হামলা : নেপথ্যে ইন্ধন ছিল মনোনয়নবঞ্চিত ক্ষমতাসীন দলেরই একটি অংশের 

পত্রিকাটি লিখেছে,

যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাঁপাতলা মালোপাড়ায় হামলার নেপথ্যে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। ১৮ দলের নেতাকর্মীরা এ হামলা করলেও তাতে শক্তি জোগান দেন ক্ষমতাসীন দলেরই স্থানীয় একটি অংশ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার চাপাতলার মালোপাড়ায় বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা সবাই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। দেশ স্বাধীনের পর এ গ্রামের সব সম্প্রদায়ের মানুষ ভাই-ভাই হিসাবেই বসবাস করে আসছে। আপদে-বিপদে তারা পরস্পরের পাশে এসে দাঁড়ান। এজন্য এখানে কখনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়নি। এবারের নির্বাচন নিয়েও এখানে এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যে ভোটের পরে তাদের ওপর এমন নির্যাতন নেমে আসবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালোপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এ গ্রামে ৩৬০টি ভোট রয়েছে। প্রায় সব ভোটই নৌকার বাক্সে যায়। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর এটিই কাল হয়েছে তাদের জন্য। এবারের নির্বাচনে যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করেন সাবেক এমপি রণজিত রায়।

অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন এ আসনের বর্তমান এমপি হুইপ শেখ আবদুল ওহাব। গতবার মালোপাড়ার প্রায় সব ভোটই পান তিনি। কিন্তু এবার রণজিত রায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় শেখ আবদুল ওহাব ও তার পক্ষের লোকজন ধরেই নেন মালোপাড়ার ভোটাররা কোনো ভাবেই তাদের ভোট দেবে না। এজন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই মালোপাড়ার ভোটারদের ওপর শেখ আবদুল ওহাবকে ভোট দেয়ার চাপ ছিল। কিন্তু তার পক্ষের লোকজন গোপনে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হন শেখ আবদুল ওহাব নয় ভোট পাবেন রণজিত রায়ই। আর এ কারণেই হুইপ পক্ষের লোকজন মালোপাড়ার বাসিন্দাদের ওপর নির্যাতনের পরিকল্পনা করেন। এজন্য তারা ব্যবহার করে জামায়াত-শিবির এবং ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের। ঠিক এ অবস্থায় রণজিত রায়ের পক্ষের কিছু লোক ভোটের দিন মুসলমানদের সম্পর্কে আপত্তির দু’একটি কথা বলে। এতে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। এ সুযোগটিও কাজে লাগান হুইপ পক্ষ। সন্ধ্যায় যখন ১৮ দলের লোকজন মালোপাড়ায় হামলা চালায় তখন হুইপ পক্ষের লোকজনও তাতে যোগ দেয়।

এ ব্যাপারে একই কথা বলেন এ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি রণজিত রায়। তিনি বলেন, নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ সুকৌশলে হামলার নেপথ্যে শক্তি জুগিয়েছে। তা না হলে দেশ স্বাধীনের পর থেকে এ পর্যন্ত যাদের ওপর হামলা কেন, সামান্য নির্যাতনও করেনি তাদের ওপর এমন বর্বর হামলার সাহস কেউ পেত না।

যদিও এ অভিযোগ স্বীকার করেননি হুইপ শেখ আবদুল ওহাব। ঘটনার ২ দিন পর গতকাল বিকেলে তিনি মালোপাড়ায় এসে ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে না পেরে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্যই এমন বর্বর ঘটনার অবতারণা করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে আবদুল ওহাব বলেন, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ এবং জামায়াত-শিবির তাদের বর্বরতা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপাতেই এমন অপপ্রচার করছে।

দেখুন এখানে,

Click this link

এই তিন-চারটি রিপোর্ট পড়লেই বুঝা যায়। বিষয়টি ছিল, পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থি প্রবল ক্ষমতাধর আব্দুল ওহাব বনাম একই দলের এমপি রনজিতের বিরোধ। ওহাব তার প্রতিপক্ষ বিজয়ী রনজিতের সাথে পেরে না ঊঠে হামলা পরিচালনা করে। যেহেতু ওহাব নাম ধারী মুসলমান, বিজয়ী রনজিত হিন্দু, তাই সহজেই এটাকে হিন্দু-মুসলিম দাজ্ঞা বলে চালিয়ে দেয়া গেছে।

আর মিডিয়ার জন্য কেষ্টা বেটা জামাত-বিএনপি তো রেডি! হায়রে মিডিয়া, হায়রে জাতি!

আসুন আমরা এই সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার নিন্দা জানাই। দাবি জানাই দায়ী ব্যক্তি যে দলেরেই হোক প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হোক। শাস্তি দেয়া হোক, বন্ধ হোক এই মিডিয়া সন্ত্রাস।

সূত্র : বিডিটি

advertisement

Posted ১০:১৫ | বুধবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
This newspaper (Swadhindesh) run by Kabir Immigration Ltd
যোগাযোগ

Bangladesh Address : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217, Europe Office: 552A Coventry Road ( Rear Side Office), Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

ফোন : 01798-669945, 07960656124

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com