
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০২ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো যোগাযোগ প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো যোগাযোগ নেই, যোগাযোগের প্রয়োজনও নেই। জামায়াতে ইসলামী যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল, তারা সমাবেশ করতে চেয়েছে বলে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আজ (২ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগাযোগ স্পষ্ট’ বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা জামায়াত অস্বীকার করেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, জামায়াতে ইসলামী বিএনপি জোটে রয়েছে। জোটের প্রধান শরিক তারা। আর দলটি সম্পর্কে যে বক্তব্য মির্জা ফখরুল দিয়েছেন, তা তো জামায়াতে ইসলামী অস্বীকার করেছে। আমাদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো যোগাযোগ নেই, যোগাযোগের প্রয়োজনও নেই। জামায়াতে ইসলামী যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল, তারা সমাবেশ করতে চেয়েছে বলে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারের পদত্যাগ ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না, বিএনপি মহাসচিবের এমন হুঁশিয়ারি মার্কিন ভিসা নীতির পরিপন্থী কি না— জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি কিছুদিন পরপর কৌশল পরিবর্তন করে। কোনো কোনো সময় তারা হাঁটা কর্মসূচি, কোনো সময় বসা কর্মসূচি দেয়। তাদের মূল কৌশল দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং নির্বাচন ভণ্ডুলের অপচেষ্টা করা। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে তা স্পষ্ট। মার্কিন ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে। তাহলে যারা নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করবে, তাদের ওপরও এটি বর্তাবে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে, বর্তমানে ৩১ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্সও বেড়েছে, যা জুনে এসেছে ২০২ কোটি ডলার। পাশাপাশি জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দুই হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগেই বলা হয়েছিল যে দ্রুতই আমাদের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। সেটির প্রতিফলন হয়েছে গত মাসে। আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এক মাসে ২০২ কোটি ডলার এসেছে, মানে দুই বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে জাইকা দুই হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অর্থনীতি যে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে, তারই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এ সূচক। সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে।
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করলে জনগণের ভোগান্তি তৈরি হবে বলে যে বক্তব্য সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, এ বিষয়ে এক প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, অনেক পণ্যের মূল্য বেড়েছে। আবার কোনো কোনো পণ্যের মূল্য কমেছেও। তবে ভোগ্যপণ্য অনেকগুলোর দাম বেড়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক যে, আমাদের দেশে যখন কোনো উৎসব হয়, তখন কিছু কিছু ব্যবসায়ী নিজেদের যোগসাজশে সিন্ডিকেট করে, তারা বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বাড়ায়। অথচ অন্য দেশগুলোতে উৎসবকালীন পণ্যের দাম কমানো হয়। এ অবস্থা অবশ্যই আমাদের জনগণের জন্য ভোগান্তি তৈরি করে। যা আমরা অবশ্যই স্বীকার করি।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, যারা এটি (সিন্ডিকেট) করে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী কী বলেছেন, তা নিয়ে আমি বলতে চাই না। তবে আমরা মনে করি, যারা এই অসাধু ব্যবসায়ী, মানুষের ভোগান্তি তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সরকার সময়মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আগের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকারি সংস্থাগুলো। এফবিসিসিআইও বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যারাই এটি করবে, তাদের বিরুদ্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সামনেও নেওয়া করা হবে।
আইপি টিভির বিরুদ্ধে অভিযান কতদিন চলবে, এমন কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করিনি। সময়টা নির্ধারণ করবে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি, অবৈধভাবে পরিচালিত আইপি টিভি ও ইউটিউবের নামে চাঁদাবাজি ও মানুষের চরিত্র হরণ করা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোনো কোনো জেলা প্রশাসন ঈদের আগেই অভিযান পরিচালনা করেছে, বাকিরাও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পশু কোরবানি বেশি হয়েছে। কোরবানির পশুর দামও বিশেষ করে শেষ দিকে কম ছিল। যে পরিমাণ কোরবানি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ছিল কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা। ঈদযাত্রাও অত্যন্ত ভালো হয়েছে। বাড়ি থেকে সবাই যেন নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন, সে প্রত্যাশা করছি। কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে, তবে তা বিগত বছরগুলোর তুলনায় কম। চালক ও যাত্রীরা আরেকটু সচেতন হলেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
Posted ১৩:২০ | রবিবার, ০২ জুলাই ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain