বাংলাদেশের সামরিক তন্ত্র এবং সাম্প্রদায়িকতা দুই জমজ শয়তান বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, সামরিকতন্ত্রের হাত ধরে এ দেশে সাম্প্রদায়িকতার পূর্ণ আগমন হয়েছে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ব্রডকাস্ট প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবিধানিক ধারার ভেতরে একটি রাজনৈতিক যুদ্ধ চলছে উল্লেখ করে ইনু বলেন, যুদ্ধটা কি? যুদ্ধটা হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মূল নীতির ভিত্তিগুলো মীমাংসিত বিষয় রক্ষা করার একটি পক্ষ। আর অন্য পক্ষ হলো বিবেচিত বিষয়গুলো অস্বীকার করা। মীমাংসিত বিষয় কি? মীমাংসিত বিষয় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মূল সংবিধানের চার নীতি, স্বাধীনতা ঘোষণা ২৬ তারিখ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, পতাকা, জাতীয় সংগীত ইত্যাদি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এসময় গণমাধ্যম আইন সম্পর্কে হাসানুল হক ইনু গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যে কাজটি করেন সেই কাজগুলো সংজ্ঞায়িত হলে গণমাধ্যমকর্মীদের যে সুযোগ সুবিধা তাদের সেভাবে চিহ্নিত করা যাবে। সংজ্ঞায়িত না থাকলে তাহলে সব অসুবিধা হয়। সংজ্ঞায়িত না হলে এর ফাঁকফোকর দিয়ে মালিকপক্ষ সুবিধা খোঁজার চেষ্টা করে। এজন্য সংজ্ঞায়িত হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি সংসদে উত্থাপিত হওয়া গণমাধ্যম কর্মী আইন নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, তথ্য ও গণমাধ্যম প্রসারিত হলে স্বৈরাচারী প্রবণতা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা সব পক্ষ মিলে আলোচনার ভিত্তিতে একটা সমাধানে আসতে পারব।
‘একটি দল জাতীয় ঐক্যের ছাতার নিচে রাজাকার ও জামায়াত হালাল করার চেষ্টা করছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে ইনু বলেন, এ দুটি নির্বাচন আমি যুদ্ধের চোখে দেখি। রাষ্ট্রের মীমাংসিত বিষয় সুরক্ষা এবং রাজাকারী রাজনীতির মাঝে চলমান যুদ্ধ যতদিন অব্যাহত থাকবে, ততদিন নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেও দেশে শান্তি আসবে না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) উপদেষ্টা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দীপ্ত টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান বিপিএর নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এর আগে ২৬ মার্চ বিপিএ নির্বাচনে এনটিভির সিনিয়র ম্যানেজার (অনুষ্ঠান) জাহাঙ্গীর চৌধুরী সভাপতি এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের সিনিয়র প্রযোজক স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।