
শাহরিয়ার মিল্টন | শুক্রবার, ০৭ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
শেরপুর : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাটাখালি-রাঙামাটিয়া যুদ্ধ দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকালে দিবসটি উপলক্ষে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত শহীদ কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান ও সহযোদ্ধাদের স্মরণে আলোচনা সভা ও বই বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ও শহীদ কোম্পানি কমা-ার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসানের স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
ঐতিহাসিক কাটাখালি সেতুর পাশেই ‘নাজমুল চত্বর’ এ উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংগঠন ‘আমরা ১৮ বছর বয়স’ আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। স্থানীয় সংগঠন ‘আমরা ১৮ বছর বয়স’ এর আহ্বায়ক তুষার আল নূরের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুক্তাদিরুল আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমা-ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ মো. নুরুল ইসলাম হিরো, শেরপুর প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. রফিকুল ইসলাম আধার, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির, উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক একেএম ছামেদুল হক, মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক প্রমুখ। পরে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও মুুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ৩০টি বই বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই অপারেশন শেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে হাজী নঈমুদ্দিন ও হাজী শুকুর মামুদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ৬ জুলাই সকালে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই গ্রামে ঢুকার এক মাত্র কাঁচা সড়কে দুইদিক থেকে ব্যারিকেড দেয় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার, আলবদররা। মুক্তিযোদ্ধারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে করতে পিছু হটে।
এ সময় পাকহানাদারদের বেপরোয়া গুলিতে কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, তার চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও ভাতিজা আলী হোসেন শহীদ হন। বাকি মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেলেও, বর্বরোচিত হামলার শিকার হন রাঙামাটি খাঠুয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের ৬০ থেকে ৭০ জনকে কোমরে দড়ি বেঁধে নির্যাতন করা হয়। তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সম্ভ্রমহানি করে কয়েকজন নারীর। পরে অমানবিক নির্যাতন করে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় গ্রামবাসী আয়াতুল্ল্যা, সামেছ মিস্ত্রি, মহেন্দ্র অধিকারী, আব্বাছ আলী, আমেজ উদ্দিন ও বাদশা আলীকে। ওই সময় আহত হন অনেকেই। দালালদের বাঁধার মুখে সেদিন লাশও দাফন করতে পারেননি শহীদদের স্বজনরা। কলার ভেলায় স্বজনরা সেই লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নদীতে।
Posted ১৩:৪৬ | শুক্রবার, ০৭ জুলাই ২০২৩
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin