| বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট
বাসস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাগুলোকে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান রোধে আরো অধিক মনোযোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে জোরালো সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কোনো সরকারের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভূমিকাই পূর্বশর্ত। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে মন্ত্রণালয়ের অধীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আন্তরিক সেবার কারণে তার বিগত সরকারের শাসনকালে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল। তিনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পন্ন ও দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগ স্বীকারের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সমর্থন, নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করে আমরা আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। তিনি সামাজিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টে অস্ত্র এবং মাদকের অবৈধ চোরাচালানকে প্রধান সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই সমস্যা
সমাধানে আরো মনোযোগী হতে হবে। সন্ত্রাসী ও পাচারকারীদের কোনো সীমারেখা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, অস্ত্র ও মাদক দ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্যের বেআইনি বাণিজ্য রোধে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ এবং শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিকিউ মুসতাক বক্তৃতা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা চোরাচালান ও অবৈধ কার্যক্রমসহ যে কোনো ধরনের সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, তার বিগত মেয়াদের সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর হস্তে এসব পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বাংলাদেশ অনেক সময় মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ে আক্রান্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অনেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এসব বিপর্যয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, সরকারের ভেতর থেকেই এসব সন্ত্রাসীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তারা দেশের নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের দেশের উন্নয়ন যেমন বাধাগ্রস্ত হয়, তেমনি কিছু মানুষের কার্যকলাপ কখনও কখনও দেশের জন্য বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে দেশের অগ্রগতির জন্য এগিয়ে যেতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে তিনি তার পূর্ববর্তী সরকারের সাফল্য ধরে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সবার যৌথ প্রচেষ্টায় উন্নতি লাভ করতে সক্ষম হবে।’
বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের বিভিন্ন সময় মারাত্মক গ্রেনেড ও সিরিজ বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সে সময়ে দু’জন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যসহ অংসখ্য মানুষকে হত্যা করেছে এবং আমিসহ আরো অনেককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার লক্ষ্যে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত তখন পুরো দেশকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে এবং অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের জন্য দেশের অধিকাংশ অঞ্চল খুলে দেয়। তিনি বলেন, সে সময় তারা পাচারকারীদের উত্সাহিত করেছে আর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটক করায় পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দিয়েছে। এ কারণে তাদের শাসনামলে দেশ এগিয়ে যায়নি, কিন্তু সে অবস্থা থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করেছে। তাই এ পার্টির দায়িত্ব কোনো ব্যক্তিগত সুবিধা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছাড়াই দেশের উন্নয়নে কাজ করা।
Posted ১৮:৩৩ | বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin