বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

রাষ্ট্রের হেফাজতে মুশতাকের মৃত্যু কেন?

  |   শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট

রাষ্ট্রের হেফাজতে মুশতাকের মৃত্যু কেন?

মোঃ হাফিজুর রাহমান

কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, লেখক মুশতাকের অপরাধ কি? সে অনলাইনে লেখালেখি করে, সেটা নাকি আবার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে! আদালত তাকে জামিন দেয়নি, বিনা বিচারে দিনের পর দিন জেলের প্রকোষ্টে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয়েছে মুশতাককে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হলো ডিজিটাল সিকিউরিটিজ এক্ট মামলা, অদ্ভুত ব্যাপার! কিন্তু রাষ্ট্র যে নিরাপত্তা আইনে অপরাধী বানিয়ে তাদের হেফাজতে নিল, সেই রাষ্ট্রই আবার তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারল না। কি অদ্ভুত নিরাপত্তা আইন?

এই মূহুর্তে যে বিষয়টি সামনে চলে আসে তা হলো মুশতাক রাষ্ট্রের হেফাজতে মারা গেছেন। রাষ্ট্র কি দায়িত্ব এড়াতে পারে?

না, রাষ্ট্র কেন দ্বায় এড়াবে; দ্বায় ত আমাদের। রাষ্ট্র তো আর রাষ্ট্র নেই, মাফিয়া শাসক দ্বারা ঘেরাও চতুরদিক। কাকে দোষ দিব? মাফিয়া শাসকরা সবসময় মুস্তাকের মত এক্টিভিষ্টদের দমণপীড়ন করতে চায়। এরা এক্টিভিষ্টদের এত ভয় পায় কেন?

রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী যাই ভাবুক না কেনো তাদের ক্লিয়ার একটি বার্তা আমাদের মগজে দেওয়া হলো, রাষ্ট্র উন্নয়ন ও গঠনে কোনো লেখালেখি করা যাবে না, সমালোচনা করা যাবে না, যা শুনবা তা বলবা না, যা দেখবা তা চোখ বন্ধ করে পাশ কাঠিয়ে চলা যাবা। কিন্তু মাফিয়া শাসকের সেই হুমকি বার্তা আমার কানে কি পৌছেছ?

না, কখোনো না; এক্টিভিষ্টরা আরও বেপরোয়া হবে। রাষ্ট্র যে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে তা নিছক ছাই মাত্র। কিসের ভয়? মুশতাকের ত আর জামিনের প্রয়োজন নেই, সে বিনা জামিনে চলে গেল। এই হচ্ছে বাংলাদেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতা।

১৯৫২ সালে পাকিস্তানি হায়েনারা আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল; আর ২০২১ সালে এসে নিজ ঘরের শাসকরা আমাদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। দেশে চলছে মাফিয়াতন্ত্র, একনায়কতন্ত্রের অবিলাস, বাহ।

হাসিনা আর জেনারেল আইয়ুব খান এর শাসন ব্যাবস্থার মধ্য পার্থক্য কোথায়? এই দুইজন চেতনাবাদী ব্যাবসায়ী, জাতিকে ধোঁকা দিয়ে দেশের মানচিত্র বিক্রি করে ফেলে দালালদের কাছে। দুজনেরই ক্ষমতার লোভ, সিংহাসন না ছাড়ার পায়তারা।

রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তায় খুন হোন লেখক ও এক্টিভিষ্ট মুশতাক। ডিজিটাল সিকিউরিটিজ এক্টের দোহাই দিয়ে বিনা বিচারে তীলে তীলে শীকলবন্দী অবস্থায় নির্মম হত্যা করা হয় মুশতাককে।

মাফিয়া শাসকরা খুবই ভয় ও আতঙ্কে রয়েছে এক্টিভিষ্টদের নিয়ে, এরা তো হাসিনার লাগাম টেনে ধরে। ক্ষমতাচূত্য হওয়ার ভয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মুখের কথা এখন কেড়ে নিচ্ছে মাফিয়া রাণী শেখ হাসিনা।

তবে হ্যাঁ, মনে রাখা উচিত, মাফিয়াদের উদ্দেশ্য একটা থাকে রাষ্ট্রের জণগণের মধ্য ভয় ও ভীত সৃষ্টি করা। যাতে করে তার গুন্ডা বাহিনী দেখলে মানুষ দৌড়ে পালায়। হাসিনার গুন্ডাবাহিনী তো পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই ও আওয়ামী লীগের মুর্খ গন্ডার জানোয়ারগুলো। কিন্তু এভাবে কতদিন?

চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার নিখোঁজ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর বার বার বলছিলেন, ‘আমি আর নিউজ করব না, আমাকে মারবেন না প্লিজ।’ এই হচ্ছে মাফিয়া হাসিনার শাসনের নমুনা। মানুষের বাকস্বাধীনতায় টুঁটি চিপে ধরে আছে মুজিবের মাফিয়া মেয়ে। মুজিবের মেয়ে কি মানুষের ’ক্ষোভ’ নামক শব্দটি জানে?

ক্ষোভ বা জনরোষ ধীরে ধীরে পুঞ্জিভূত হচ্ছে, একদিন এটার গণবিষ্ফোরণ হবে। সময় এসেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কবর দেওয়ার। এই শুধু মুখের ভাষা কেড়ে নিচ্ছে না, আইনের ফাঁদে ফেলে নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে। মুশতাক হত্যার দায় রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিতে হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রাষ্ট্রের জনগণের বিরুদ্ধে অপব্যবহার করে ক্ষমতাসীনরা উল্লাস করছে। ক্ষমতাসীনদের জগন্য ফ্যাসিবাদী আক্রমণ দেশের মানুষ রুখে দিবে। মুশতাকের পরিবারের কাছে রাষ্ট্র জবাব কি?


Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:৩৪ | শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com