শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কবরস্থানের গাছের ফল খাওয়া যাবে কি?

  |   মঙ্গলবার, ০৭ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট

কবরস্থানের গাছের ফল খাওয়া যাবে কি?

পারিবারিক কবরস্থান কিংবা সবার জন্য উন্মুক্ত কবরস্থানে লাগানো গাছের ফল অনেকেই খেতে চায় না। কবরস্থানের জিম্মাদাররা অনেক সময় এ ফল গরিব দুঃখীর মাঝে বিতরণ করে দেয়, অনেকে আবার তা বিক্রি করে সে টাকা কবরস্থানের কাজে লাগায় বা দান করে দেয়। নিজেরা কবরস্থানের ফল খায় না। আসলেই কি কবরস্থানের ফল খাওয়া যাবে না? এ সম্পর্কে ইসলামের বিধানই বা কী?

মানুষের মৃত্যু অবরাধিত। কেউ মৃত্যু থেকে বাঁচতে পারবে না। আরবের এক কবির লেখা কবিতায় তা ফুটে উঠেছে-
‘ওহে! আল্লাহ ছাড়া যা কিছু সবই মরণশীল। আর আনন্দের সব কিছুই নিঃসন্দেহে ধ্বংসশীল।

প্রিয়জন মারা গেলে আপন আগ্রহে কবরের পাশে বা কবরস্থানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগায় মানুষ। এসব গাছের মধ্যে থাকে ফুল, ফল ও বণজ গাছ। কবরস্থানে লাগানো এসব গাছের কাঠ, ফুল ও ফল ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিকভাবে খেতে বা ব্যবহার করতে মনে খটকা লাগে। অনেকেই সন্দেহে থাকে যে, এ ফল খাওয়া যাবে কি না? আবার এ কাঠ ঘরের কাজে লাগানো যাবে কি না?

ইসলামিক স্কলারদের মতে, কবরস্থানে খালি জায়গায় যেখানে কোনো কবর নেই, সেখানে অন্য কোনো কাজ করা জায়েজ নেই। তবে খালি স্থানে বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ লাগানো বৈধ। আর তা খাওয়াও বৈধ। বিক্রি করে কবরস্থানের উন্নয়ন করাও বৈধ।

তবে এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে যে-
তাতে লাশ দাফনে এসব গাছ যেন প্রতিবন্ধক হয়ে না দাঁড়ায়। আর এসব গাছের কাছে যাওয়ার জন্য যেন কবরের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে না হয়।

সুতরাং কবরস্থানে লাশ দাফনে অসুবিধা না হলে এবং কবরের উপরের দিয়ে যাতায়াত করতে না হলে, সে কবরস্থানের ফল খাওয়ায় কোনো অসুবিধা নেই। যার যার কবরস্থানের গাছের ফল খাওয়া হালাল এবং বৈধ। কবরস্থানে হওয়ার কারণে এ ফল খাওয়া বা গাছ ব্যবহার করা যাবে না, এটা অযথা কথা। এমন বিশ্বাস পোষণ করা কুসংস্কার ব্যতিত কিছুই নয়। তবে অন্যদের কবরস্থানের ফল অনুমতি ছাড়া খাওয়া যাবে না।

কারণ কবরস্থান ব্যক্তি মালিকানাধীন হলে কিংবা ওয়াকফকৃত হলে-
– কবরস্থান যদি কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন হয়, তবে মালিকের অনুমতি ব্যতিত কবরস্থানের ফুল, ফল ও গাছ ব্যবহার করা যাবে না। কবরস্থানের মালিক এর ফলমূল খেতে পারবে।

– আর যদি কবরস্থান ওয়াকফকৃত হয় তবে ওয়াক্ফকৃত কবরস্থানের গাছপালা ও ফলমূল ওয়াক্ফের সম্পত্তি। এর ফলে কবরস্থানের ফলমূল এবং গাছ খাওয়া বা ব্যবহার করা যাবে না।

কেননা রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত কবরস্থান কিংবা ওয়াক্ফকৃত কবরস্থান উভয়টির সব উৎপাদন কবরস্থানের নিজস্ব সম্পদ। কবরস্থানের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলোকে বিক্রি করে কবরস্থানের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের কাজে লাগাবেন। এলাকাবাসীর জন্য বিনামূল্যে এ ধরনের কবরস্থানের ফলমূল ভোগ করা জায়েয নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি, ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া)

তবে কবরস্থানের ফলমূল খাওয়া যাবে না, ঢালাওভাবে এ ধারণা সঠিক নয়। ব্যক্তিমালিকানাধীন কবরস্থানের মালিকরা এর ফল খেতে পারবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষেল অনুমতি সাপেক্ষেও ফল খাওয়া যাবে। আবার কবরস্থানের ফল বিক্রি করে এর উন্নয়ন করা যাবে। বিক্রি করা ফল কিনে নিয়েও খাওয়া যাবে এতে কোনো অসুবিধা নেই।

কবরস্থানের ফল এমনিতে কিংবা কিনে নিয়ে খাওয়া যাবে না মর্মে এ কথাটি একটি কুসংস্কারমূলক কথা। এ কথার কোনো ভিত্তি নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত কুসংস্কার থেকে হেফাজত করুন। কবরস্থানের উন্নয়নে এর ফল কিনে খাওয়ায় সহযোগিতা করাও সাওয়াবের কাজ। তাতে অংশগ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।জাগোনিউজ২৪.কম,

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:১৯ | মঙ্গলবার, ০৭ জুলাই ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com