বুধবার ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

বাংলাদেশকে আত্মঘাতী সিন্ধান্তের খেসারত দিতে হবে

  |   শুক্রবার, ০৮ মে ২০২০ | প্রিন্ট

বাংলাদেশকে আত্মঘাতী সিন্ধান্তের খেসারত দিতে হবে

মোঃ হাফিজুর রাহমান

নির্গাত আত্মঘাতী একটি সিন্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আগামী ১০ই মে থেকে দোকান-পাট ও শপিং মল শর্ত সাপেক্ষে খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সরকার হটাৎ করে এমন ভুল নীতি কেন নিল আমাদের বোধগম্য নয়। তাও আবার সবচেয়ে সংকটাপন্ন সময়ে যে সময়টাকে আমি পিক হিসাবে ধরে নিয়েছে। মানলাম আমাদের অর্থনীতির ওপর খুব চাপ যাচ্ছে, কিন্তু যদি জনগণ না থাকে তাহলে অর্থনীতি কিভাবে সচল থাকবে? সরকার কী বুঝে শুনে এগুচ্ছে? তাহলে কী সরকার দিশেহারা? মুজিবের মেয়ে হাসিনা এবার সত্যি পাগল হয়ে গেছে। দেশের মানুষকে মেরে ফেলার পায়তারা করছে।

যারা ভাবছেন কভিড-১৯ এই মুহূর্তে কিছুটা মন্তর গতিতে চলছে তারা ভুল করছেন। মনে রাখা উচিত করোনার গতি মানবিক চিন্তার চেয়েও দ্রুত। সহজে কাউকে করুণা করবে না, অপ্রতিরোধ্য গতি চলবে যতদিন প্রর্যন্ত এর প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিস্কৃত না হয়েছে বা মানুষের মধ্য ইমিউনিটি গড়ে না ওঠেছে। বিষয়টি আর সহজ করে দিয়েছে মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রের মিনেসোতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইনফেকশান ডিসিজ রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের গবেষকরা, তাদের সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে বলছেন, আগামী দুবছর পর্যন্ত এই রাক্ষুসে মহামারী তাড়িয়ে বেড়াবে পৃথিবীতে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী করোনাভাইরাস যে ভাবে জীন পরিবর্তন করে একেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন রুপ নিচ্ছে তা সত্যিই ভাল ইঙ্গিত বহন করে না। করোনা ভাইরাসের পিক যে এক বার হবে তা বলা দুষ্কর, এর পিক কয়েক বার হতে পারে যেমনটা হয়েছিল স্পেনিশ ফ্লোতে। গত একশত বছরে পৃথিবীতে যত মহামারী হয়েছে তার মধ্য ১৯১৮ সালের স্পেনিশ ফ্লুো তে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কারণ ঐ মহামারী ধাপে ধাপে মানব জাতির ওপর আঘাত হেনেছে। যেমন, ১৯১৮ সালে বিশ্ব যে ভুল করেছিল তার খেসারত দিয়েছে মার্মান্তিকভাবে। স্পেনিশ ফ্লো বসন্তে প্রথম আঘাত হানার পর হয়ত পৃথিবী ধরেনিয়েছিল এর ধ্বংসালীলা শেষ এবং সবাই স্বাভাবিক কর্মব্যাস্ততাময় নেমে পড়ে। কিন্তু মহামারীটি আগের চেয়ে ভয়ংকর রুপ নিয়ে ব্যাপক পরিসরে শরৎ ঋতুতে তান্ডবলীলা চালায় পৃথিবীতে।

ইতিহাস বলার যতেষ্ট যুক্তিযোক্ততা রয়েছে কারণ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ইতিহাসের যদি পুনরাবৃত্তি ঘটে তবে তা বিভিষিকাময় হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ হয়ত করোনার ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য। আর যদি দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশ পিকে হাবুডুবু খায় তাহলে চিত্র হবে লোমহর্ষক এককথায় “কনটাজিয়নে” আমরা আমেরিকার যে চিত্র দেখেছি তা বিপরীত একচুলও হবে না।

বাংলাদেশে এখন প্রর্যন্ত কতজন লোক কভিড-১৯ এ আক্রান্ত তার কোনো সঠিক হিসাব নেই এমনকি সরকারীভাবে যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তার যুক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া সরকার যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তার একটিও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আধুনিক চিন্তাচেতনার বাইরে গিয়ে সেই পুরোনো মন্দা আমলের ত্রুটিপূর্ণ এন্যালগ পদ্ধতিতে শেখ হাসিনা অগ্রহসর হচ্ছেন যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। প্রণোদনার নামে যে বিনোদন দেওয়া হচ্ছে তাতে কে লাভবান হচ্ছে?

আমি বিষ্মিত ও আশ্বর্য হয়েছি বাংলাদেশ সরকারের কৌশলগত পদ্ধতি দেখে, যেখানে নেই কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বা ফরমুলা যা নিয়ে তারা এই মহামারী অন্তত্যপক্ষে পক্ষে মোকাবেলা করতে পারে। মহামারীর কঠিন এই সময়ে শেখ হাসিনার বৈজ্ঞানিক একটি বিশেষজ্ঞ দল থাকা উচিত ছিল যাদের পরামর্শকর্মে তিনি ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নিতে পারতেন। যা না করে নিজ দলের অনভিজ্ঞ উপদেষ্টা ও অযোগ্য গুঠিকয়েক মন্ত্রীদের পরামর্শ নিচ্ছেন। এই দেশ কীভাবে করোনা নামক যুদ্ধে বীরের বেশে জয়লাভ করবে? শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের পাগল ছাগল মন্ত্রীদের নিয়ে জাতি হতাশ।

সরকার শর্ত সাপেক্ষ মানুষের জনসমাগন করতে যাচ্ছে ভাল কথা। কিন্তু কোটি টাকার প্রশ্ন হলো সেই শর্ত কয়জন মেনে চলবে। এখন ধরুণ বসুন্ধরা শপিংমলে সকাল দশটা থেকে বিকাল চারটা প্রর্যন্ত মানুষ কেনাকাটা করতে পারবে, তাও আবার সামনে আগমনী ঈদকে কেন্দ্র করে। ফলে এই সল্প সময়ের মধ্য ঈদের শপিং করার জন্য মানুষের জটলা যে বাঁধবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা সরকার দিতে পারবে? ক্রেতা এবং বিক্রেতা মধ্য ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য যে হৈইহূলস্ত হবে তাতে গুরুচরণ অবস্থা হবে। তখন মানুষের অস্বাভাবিক আচরণের কাছে সামাজিক দুরত্ব হার মানাবে।

সরকার কৌশল অবলম্বন করে অন্তত্যপক্ষে মে মাসটা কঠিন মেজারের মধ্য রাখতে পারত কিন্তু তা না করে দেশের মানুষকে ভয়াবহ একটি সংকটের মধ্য নিয়ে যাচ্ছে। পুরো মে মাস আমাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সময়। ইতিমধ্যে অর্থনীতি রক্ষায় গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে যার ফলে ভাইরাসটি সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়েছে নিংসন্দেহে বলা যায়।

পৃথিবীর সব রাষ্ট্র জনসাংস্থ্য ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কভিড-১৯ মোকাবেলা করছে, আমরা কেন পারি না? সময় এখনও ফোরিয়ে যায়নি, দক্ষ বিশেষজ্ঞ দল নিয়োগ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবস্থান করে রাক্ষুসে ভাইরাসটি প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি সরকারের সদিচ্ছা ও মহৎ উদ্দেশ্যে থাকে। একটি ভুল একটি ধ্বংসালীলা, কাজেই বুঝে শুনে সামনে এগুতে হবে। জনগণ হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিক এই জনগণকে রক্ষা করা রাষ্ট্র প্রধানের দায়িত্ব।

মোঃ হাফিজুর রাহমান, অনলাইন এক্টিভিষ্ট
যুক্তরাজ্য প্রবাসী

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৩:১৪ | শুক্রবার, ০৮ মে ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com