| রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট
রাবি প্রতিনিধি : প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পরিবহন দফতরের কয়েকজন কর্মকর্তা ও বাসচালক লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করছেন। পরিবহন দফতরের প্রশাসকের কঠোর নজরদারি উপেক্ষা করে সিন্ডিকেট তৈরীর মাধ্যমে তারা এ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। পরিবহনের জন্য মালামাল না কিনেও তার হিসেব ধরানো, মালামাল কেনার পর খালি মেমোতে নিজের মতো করে টাকার পরিমাণ বসানোসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে এই দূর্নীতি করা হচ্ছে’ এমন তথ্যই উঠে এসেছে এক অনুসন্ধানে।
অনুসন্ধানে বলছে, পরিবহনের প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের প্রকার খুচরা যন্ত্রাংশ ও মালামাল কেনার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু মালামাল কেনার সময় লিখিত মেমো না নিয়ে খালি মেমো নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে নিজের মন ইচ্ছামতো দর বসিয়ে দেয়া হয়। যা প্রকৃত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্র্ণ নয়।
অসামঞ্জস্যতাপূর্ণ দামের এই অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ ২০১৭ তারিখে ঢাকার মেসার্স লাকী মটরস থেকে ৭১-০০০৫ নং গাড়ির জন্য একটি রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন ক্রয় করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দফতর, যার ফাইল নং- পরিবহন/৫৫০। মেমোতে মূল্য উল্লেখ আছে ৭৮০০০ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে সেই দোকান থেকে এধরনের কোনো মালামাল ক্রয় করা হয়নি বলে জানা যায়। এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে চট্টগ্রামের মেসার্স আল মদিনা থেকে ০৮-০০০২ নং গাড়ীর জন্য একটি রিকন্ডিশন্ড ইঞ্জিন কেনা হয়, যার মূল্য ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এতে আরো এক লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ দেখানো হয়। যার ফাইল নং -৫৩৫। তবে এই গাড়িটি এখন পর্যন্ত ঠিকভাবে চলে না। এগুলো কেনার জন্য যে তিনটি মেমো করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি মেমোর সত্যতা পাওয়া গেলেও অন্য দুটি জালিয়াতি করা বলে জানা গেছে। আর এই তিনটি মেমোই তৈরী করা হয় ২৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে। পরিবহন দফতরে এই তিনটি মেমো নাং ৩৯৭১৭, ৩৯৭০৬ এবং ৩৯৭১৬ দেখানো হয়েছে। এছাড়াও, সম্প্রতি পরিবহন দফতরের স্টোর থেকে তিন ব্যারেল মবিল উধাও হয়ে গেছে।
এদিকে পরিবহনে গত ফেব্রুয়ারী মাসে চারটি মেকানিক পদে হাবিবুর রহমান, জাফর আলী, শফিকুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম নামের চারজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে মেকানিক নিয়োগ দেওয়ার পরও অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বাইরে থেকে মামুনুল, কেরামত আলী ও তার একজন সহকারীকে দিয়ে অধিকাংশ কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৫ সালে পরিবহন দফতরের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করে নজরুল নামের এক কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তা ছয় লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ টাকা পরিবহন দফতরের অগ্রণী ব্যাংক শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের নামে ব্রাক ব্যাংকের ঢাকার মান্ডা শাখায় স্থানান্তর করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কর্মকর্তার ব্রাক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টটি জব্দ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
এ বিষয়ে পরিবহন দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. এফ এম আলী হায়দার সময়ের আলোকে বলেন, আমি সব হিসেব পর্যবেক্ষণ করি। আর মালামাল ক্রয় করার জন্য আলাদা কমিটি করে দেয়া আছে। তাদের কাছে মাসে একবার হলেও আমি হিসেব নিই। এরপরও আমার অজান্তে কোনো অনিয়ম হতেও পারে। আমরা বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখব।’ তবে স্টোর থেকে মবিল উধাও হওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
Posted ১৯:১২ | রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin