শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

শীতে ফাটা ঠোঁট মসৃণ করার ঘরোয়া উপায়

  |   মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

শীতে ফাটা ঠোঁট মসৃণ করার ঘরোয়া উপায়

ফাটা ঠোঁটকে মসৃণ করার জন্য কিছু সাধারণ জিনিস আমরা সবাই জানি। ঠিক যেমন রোদে বেরোনোর সময় ঠোঁটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা সবসময় বজায় রাখার জন্য এস.পি.এফ যুক্ত লিপ-বাম লাগিয়ে নিই, তেমনই ঠোঁট ফাটা আটকাতে ব্যবহার করে থাকি ভেসলিন জাতীয় কিছু পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন যা ঠোঁটের আর্দ্রতা ও পুষ্টির যোগান দেয়। কিন্তু এসব ছাড়াও কিছু সহজ, ঘরোয়া পদ্ধতি আছে যার সাহায্যে আপনি আপনার ফাটা ঠোঁটকে মসৃণ ও নরম করে তুলতে পারেন, পুষ্টি যোগাতে পারেন আপনার খসখসে ঠোঁটে। আসুন ঘরে বসে ঠোঁটের যত্ন নেবার জন্য কিছু সহজ, সস্তা ও প্রাকৃতিক উপায়ের কথা জেনে নেওয়া যাক।

মধু: মুখের ত্বক খসখসে হয়ে গেলে মধু লাগিয়ে উপকার নিশ্চয়ই পেয়েছেন। মধু কিন্তু আপনার ফাটা ঠোঁটকে মসৃণ করে তার পুরনো আর্দ্রতা, ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনতেও সাহায্য করে। মধু আসলে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে। রোজ রাতে ঘুমোতে যাবার আগে ঠোঁটে হালকা করে মধুর একটা প্রলেপ লাগিয়ে ঘুমোতে যান। সকালে উঠে নিজেই তফাৎ লক্ষ্য করতে পারবেন।

চিনি: চিনিও প্রাকৃতিকভাবে আমাদের ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। ঠোঁট ফাটলে অনেকসময় ঠোঁটের পাতলা চামড়া শুকিয়ে উঠে ঠোঁট খসখসে হয়ে যায়। এই সমস্যার হাত থেকে চটজলদি মুক্তি পেতে এক চামচ চিনি ও হাফ চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে একটি স্টিকি স্ক্রাব বানান ও ঠোঁটে সেটা ভালো করে সার্কুলার মোশনে লাগান, এবং খানিক পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার ঠোঁটের মরা চামড়া তুলে ঠোঁটকে মসৃণ বানাবে ও ঠোঁটের আসল ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনবে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন।

মিল্ক ক্রিম: মিল্ক ক্রিমে ফ্যাট থাকে যা আপনার ঠোঁটকে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে ও ঠোঁটকে ফাটার হাত থেকে রক্ষা করে তেলতেলে ও মসৃণ করে। ফ্রেশ ক্রিম নিয়ে আপনার ঠোঁটে ১০-১৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। তারপর তুলো দিয়ে হালকা গরম জলের সাহায্যে আস্তে করে ঘষে ক্রিমটা তুলে ফেলুন। ফাটা ঠোঁটকে তাড়াতাড়ি মসৃণ করে তুলতে হলে এই পদ্ধতিটি রোজ ব্যবহার করতে পারেন।

গোলাপ ফুলের পাপড়ি: গোলাপ ফুলের কয়েকটা পাপড়ি ভালো করে ধুয়ে অল্প দুধে সেগুলিকে ঘণ্টাখানেক ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ফুলের পাপড়ি ও দুধের মিশ্রণটি একসাথে পেস্ট করে নিন ও সেটিকে ঠোঁটে ভালো করে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রাখার পর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। রোজ এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে পারেন। গোলাপের পাপড়ির মধ্যে থাকা ভিটামিন ই আপনার ঠোঁটের পুষ্টি জোগাবে, ঠোঁটের স্বাভাবিক গোলাপি রঙ বজায় রাখতে সাহায্য করবে, ঠোঁটকে নরম রাখবে আর দুধে থাকা স্নেহ পদার্থ ঠোঁটকে মসৃণ ও তেলতেলে রাখতে সাহায্য করবে।

নারকেল তেল

চুলের পুষ্টি যোগাতে যে নারকেল তেলের বিকল্প নেই তা আপনারা সবাই জানেন। কিন্তু জানেন কি যে নারকেল তেল ফাটা ঠোঁটকে মসৃণ করার অব্যর্থ ওষুধ হিসেবেও কাজ করে? বিশুদ্ধ নারকেল তেল নিয়ে আপনার ফাটা ঠোঁটে দিনে ২-৩ বার করে অ্যাপ্লাই করুন। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন। নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন আপনার ঠোঁটের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে। নারকেল তেলের জায়গায় আপনি আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করলেও একই উপকার পাবেন।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যা ফাটা ঠোঁটকে তার স্বাভাবিক পুষ্টির যোগান দেয় ও তার খসখসে ভাব কাটিয়ে তাকে মসৃণ করে তোলে। একটি অ্যালোভেরা পাতাকে কেটে তার মধ্যের জেলির মতো পদার্থটিকে বের করে আপনার ঠোঁটে লাগান। ১৫-২০ মিনিট জেলটিকে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।  অ্যালোভেরা জেল আপনার রুক্ষ ঠোঁটের মরা কোষকে সরিয়ে ঠোঁটের আর্দ্রতা ও ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তাড়াতাড়ি উপকার পেতে রোজ ঠোঁটে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন।

শসা

আপনার ঠোঁট কি শুকিয়ে যাচ্ছে বা ফাটছে ঘন ঘন? এই সমস্যার থেকে সহজে মুক্তি পাবার জন্য একটা শসা নিয়ে তাকে গোল করে একটা স্লাইস কাটুন। এরপর ওই স্লাইসটিকে ভালো করে ঠোঁটে ঘষে নিন। শসার রস আপনার ঠোঁটকে আর্দ্রতা প্রদান করবে এবং গরমের দিনেও আপনার ঠোঁটকে ঠাণ্ডা, মসৃণ রাখবে। দিনে বেশ কয়েকবার এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন, দেখবেন কয়েক দিনের মধ্যেই উপকার পাচ্ছেন।

গ্রিন টি ব্যাগ

গ্রিন টি খাওয়া যে স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী তা সবাই জানেন। কিন্তু গ্রিন টির মধ্যে যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ট্যানিন থাকে, তা আপনার ঠোঁটের শুকনো, ডি-হাইড্রেটেড চামড়াকে আবার আগের মতো নরম ও মসৃণ করে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়া ঠোঁট ফাটলে যে জ্বালা হয়, তার থেকেও গ্রিন টি আপনাকে আরাম দিতে পারে। এর জন্য একটি গ্রিন টি ব্যাগকে গরম জলে খানিকক্ষণ ভিজিয়ে রেখে আপনার ঠোঁটে মিনিট পাঁচেক রেখে দিন। রোজ এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়িই আবার আপনার ফাটা ঠোঁটকে আগের মতো মসৃণ অবস্থায় ফিরে পাবেন।

তাহলে আমরা আমাদের ফাটা ঠোঁটকে মসৃণ ও নরম করে তোলার জন্য বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নিলাম। কিন্তু ঠোঁটের পরিচর্যার জন্য বা ঠোঁটকে তার স্বাভাবিক কোমল অবস্থায় রাখার জন্য শুধুমাত্র এগুলি মেনে চললেই হবে না। তার সাথে আপনাকে খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমানে জল, যা আপনার শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখবে। এছাড়া আপনার যদি বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট চাটা বা ঠোঁট কামড়ানোর বদ অভ্যেস থাকে, তাহলে তা আজই ত্যাগ করুন। কারণ এর ফলে ঠোঁটের চামড়া শুকিয়ে যায় ও খসখসে হয়ে যায়। রাস্তায় বেরোলে লিপ বাম ব্যবহার করুন। সব দিক দিয়ে ঠোঁটের যত্ন নিলে তবেই আপনার ঠোঁট ফাটা বন্ধ হবে ও তা মসৃণ থাকবে।  পরিবর্তন

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:১১ | মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com