বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস

  |   রবিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট

৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস

এ কে কুদরত পাশা, সুনামগঞ্জ থেকে : ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এই দিনে সুনামগঞ্জ হানাদার মুক্ত হয়েছির। সুনামগঞ্জ শহরকে পাস্তানী হানাদার মুক্ত করার জন্য মেজর মোত্তালিব, ক্যাপ্টেন যাদব, ক্যাপ্টেন রগুনাথ, ভাটনগর একটি পরিকল্পনা তৈরী করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি কোম্পানীতে বিভক্ত করা হয়। ”এ”কেম্পানীকে যোগীরগাঁও, ”বি”কোম্পানীকে হালুয়ারঘাট, ”সি”কোম্পানীকে  হাসননগর, ”ডি”    কোম্পানীকে ভাদেরটেক, ”ই” কোম্পানীকে মল্লিকপুর, ”এফ” কোম্পানীকে বেরিগাঁও কৃষ্ণতলা অবস্থান গ্রহন এবং তাদের যাবতীয় রসদ সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়াহয় এ,ডি এম কোম্পানীকে।

এছাড়া অতিরিক্ত এক দল মুক্তিযুদ্ধাকে বনগাঁও সদর দপ্তরে রাখা হয়। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে যৌথ নেতৃত্বে মুক্তি যোদ্ধারা নতুন প্রভাত ছিনিয়ে আনার হিরন্ময় নেশায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বুকে চুরান্ত আঘাত হানতে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে আসে। পরিকল্পনা মেতাবেক ক্যাপ্টেন ভাটনগর ছিনাকান্দি থেকে গৌরারং, ক্যাপ্টেন যাদব বনগাঁও থেকে আমবাগী এবং মেজর মোত্তালিব যোগীরগাঁও অভিমূখে প্লাটুন সহ আক্রমন শুরু করেন। অন্ধকার রাতে কাদা পানি ভেঙ্গে কখনো ন্যেকায় নদীনালা পাড়ি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছার জোর তৎপরতা চালায়।

৬ ডিসেম্বর খুব ভোরে মেজর মোত্তালিব ও ক্যাপ্টেন ভাটনগর তাদের প্লাটুন সহ শহরে প্রবেশ করেন। কিন্তু শহরে কোথাও কোন শত্রæর দেখা পাওয়া যায়নি। পাক হানাদার বাহিনী তথা শত্রæরা মধ্য রাতেইশাহর ছেড়ে পালিয়েছে। এ সংবাদ মুহুর্তে গোঠা শহর ছড়িয়ে পড়লে চারদিক হতে ”জয় বাংলা” শ্লোগানে আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত হয়ে উঠে। ঠিক এমন সময়ে  সাময়িক ভূল বুঝাবুঝির কারনে ”হরিচে বিষাদের” মতো একটি ঘটনা ঘটে। পলায়ন তৎপর পাকসেনারা তিনজন মুক্তিযুদ্ধাকে ধরে নিয়ে যায়। ঐ দিন তিন মুক্তিযুদ্ধার মৃতদেহ সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কের জয়কলস নামক স্থানে পাওয়া যায়। পাক বিজয় মুহুর্তে শহীদ তিনজন মুক্তিযুদ্ধাকে সমাহীত করা হয় জয়কলস উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসকে স্মরনীয় করে রাখতে শহরের কেন্দ্রস্থলে ট্রাফিক পয়েন্টে (বর্তমান আলতাফ স্কয়ার) সংলগ্ন ডি,এস রোডের উত্তর পাশের খোলা জায়গায় নির্মান করা হয় শহীদ মিনার ”যাদের রক্তে মুক্ত এ দেশ”। শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক দিরাই থানার গচিয়া গ্রামের কৃতী সন্তান মুক্তিযুদ্ধা সাংবাদিক ছালেহ চৌধুরী।

সুনামগঞ্জ মুক্ত ঘোষনার পর আরম্ভ হয় ত্রান ও পূর্নবাসনের কাজ। শহর ও পার্শ্ববর্ত্তী অঞ্চল তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় মেজর মোত্তালিবকে। এছাড়া যুদ্ধ বিধস্থ সুনামগঞ্জ এর সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরী এম,এন,এ কে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন আব্দুল হেকিম চৌধুরী এম,পি,এ, আব্দুর রইছ এম,পি,এ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এম,পি,এ শামছু মিয়া চৌধুরী এম,পি,এ আব্দুজ জহুর এম,পি,এ আলতাফ উদ্দিন আহমদ, হোসেন বখত, এডভোকেট আলী ইউনুছ। উল্লেখ্য যে, এরা সবাই ছিলেন সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ সুনামগঞ্জ কমিটির সদস্য। যুদ্ধত্তর নানা সমস্যা সমাধানে তারা ছিলেন সদা সচেষ্ট, ফলে ৬ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের সঙ্গে এদের কৃতিত্ব স্থানীয় ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরনীয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৩৯ | রবিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com