শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৫ আসনের উপনির্বাচনে এমপি হতে চান যারা

  |   শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট

৫ আসনের উপনির্বাচনে এমপি হতে চান যারা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের পর এবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নজর জাতীয় সংসদের পাঁচটি শূন্য আসন ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩, বাগেরহাট-৪, বগুড়া-১ এবং যশোর-৬-এর উপনির্বাচনের দিকে। আওয়ামী লীগ চায় এসব আসনে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। এজন্য যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীদের সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়ে সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে এ দল।

অন্যদিকে আসনগুলোতে জয়ী হয়ে নির্বাচন ও রাজনীতির মাঠে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বিএনপি। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পেতে লবিং-তদবিরের পাশাপাশি যোগাযোগ রাখছেন লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও। নির্বাচনে জয়-পরাজয় যাই ঘটুক, দলের মধ্যে একটা অবস্থান তৈরির লক্ষ্যে তারা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি নীতিনির্ধারকরা চাইছেন, ব্যালট বাক্সে জয়-পরাজয় যেটাই হোক, রাজনীতির মাঠে তা দলগতভাবে কাজে লাগাতে।
গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ ছাড়াও ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে আগামী ২১ মার্চ উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এ তিন আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ ফেব্রুয়ারি। বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে।

এ অবস্থায় শূন্য হওয়া ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩, বাগেরহাট-৪, বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আবেদনপত্র বিতরণ ও জমা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। গত সোমবার থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার পর্যন্ত চলা এই কার্যক্রম শেষে আগামী শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডাকা হতে পারে। ওই বৈঠকেই চূড়ান্ত হবে কোন পাঁচজন এসব আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়বেন। বিএনপি এখনও দলীয় মনোনয়নের ফরম বিতরণের কাজ শুরু করেনি। তবে ভেতরে ভেতরে উপনির্বাচনগুলোতে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে।

 

ঢাকা-১০: ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে আসনটি ছেড়ে দেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে নৌকার টিকিট শেষ পর্যন্ত আবারও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ পাবেন, নাকি অন্য কাউকে দেয়া হবে- তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- তাপসের বড় ভাই যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, তাপসের সহধর্মিণী আফরিন তাপস।

এছাড়া এই আসনে আলোচনায় রয়েছেন- বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। বঙ্গবন্ধুর এই দৌহিত্র আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। এই আসনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বাইরে আরও কয়েকজন পরিচিত মুখের নাম শোন যাচ্ছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। তবে, এবার এই আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নে পরিবর্তন হচ্ছে। দলটির বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আবদুল মান্নান বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত। তিনি ঠিকমতো হাঁটাচলাও করতে পারেন না। তাই উপনির্বাচনে তাকে প্রার্থী করা হবে না।

 

জানা গেছে, ঢাকা-১০ আসন উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হতে চান দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ধানামন্ডি থানা বিএনপির সভাপতি শেখ রবিউল আলম ও আবদুল মান্নানের মেয়ের জামাই দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম। এর মধ্যে শেখ রবিউল একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নও পেয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে তিনি গ্রেফতার হওয়ার তাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ব্যারিস্টার অসীম দীর্ঘদিন বিদেশে রয়েছেন। তবে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অসীমের ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলেও দলীয় সূত্র দাবি করে।

গাইবান্ধা-৩: গত ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইউনুস আলী সরকার মারা গেলে গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসন শূন্য হয়। উপনির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের দুই ডজনের বেশি প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতি, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাজেদার রহমান দুলু, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট জারিদুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. মাহাবুব আলম, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর প্রধান, সাধারণ সম্পাদক সামিকুল ইসলাম লিপন, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মণ্ডল, সাবেক সহসভাপতি ফজলুল করিম, সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়ার খান বিপ্লব, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও গাইবান্ধা জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ এমএস রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি তোফাজ্জল হোসেন সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হক, সদ্যপ্রয়াত এমপি ইউনুস আলী সরকারের বড় ছেলে ড. ফয়সাল ইউনুস, জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও ঢাকা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শাহ মো. ইয়াকুব উল আজাদ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও দড়ি জামালপুর রোকেয়া সামাদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজার রহমান খান বিএসসি, ওমর ফারুক, শিল্পপতি মফিজুল হক সরকার, গোপাল চন্দ্র বর্মণ, সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ ওয়াহেদ মিয়া, সাদুল্যাপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেহেনা বেগম, পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম খন্দকার মতলুবর রহমান নান্নুর মেয়ে খন্দকার তামান্না শারমিন প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী উম্মে কুলসুম স্মৃতি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী তিনি। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার মানুষের কল্যাণ ও প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকবেন তিনি।

এই আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টিআই ফজলে রাব্বিকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয়। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে তিনি মারা যাওয়ায় আসনটির নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের ডা. ইউনূস আলী সরকার নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

এবারের নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) কোনো প্রার্থী নেই। তিন মাস আগে ড. টিআই ফজলে রাব্বির ছেলে মাইনুল রাব্বি রুমন জাতীয় পার্টিতে (এরশাদ) যোগ দিয়েছেন। তিনি মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এ আসনে প্রার্থী হতে চান।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এ আসনে আলোচনায় রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক, উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম রফিক, সদস্য ড. মিজানুর রহমান মাসুম এবং সাদুল্যাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন।

ডা. মইনুল হাসান সাদিক বলেন, গত উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও দল পরে নির্বাচন বয়কট করায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন তিনি। এবারও মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

মিজানুর রহমান মাসুম বলেন, নির্বাচন করতে তিনি প্রস্তুত। সরকারবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করায় দল তাকে মূল্যায়ন করবে বলে তার বিশ্বাস।

বাগেরহাট-৪: গত ১০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের এমপি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসন শূন্য হয়। এ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে বেশ কয়েকজন মাঠে নেমেছেন। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন।

আসন্ন উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এএইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি অধ্যাপক আবদুর রহিম খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মিজানুর রহমান জনি, বাগেরহাট জেলা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ড. আবদুর রহিম খান, মোরেলগঞ্জ উপজেলা কমিটির সদস্য প্রবীর রঞ্জন হালদার প্রমুখ।

অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে তার। এএইচএম বদিউজ্জামান সোহাগও একই আশাবাদ ব্যক্ত করে জানান, দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জিততে পারলে এলাকা ও এলাকাবাসীর সার্বিক কল্যাণে সচেষ্ট থাকবেন তিনি।

বাগেরহাট-৪ আসনটি গত নির্বাচনে বিএনপি ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীকে ছেড়ে দেয়। জেলা জামায়াত নেতা অধ্যাপক আবদুল আলিম তখন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। বর্তমান সরকার ও ইসির অধীনে জামায়াতে ইসলামী আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে উপনির্বাচনে লড়তে বিএনপিতে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাজী খায়রুজ্জামান শিপন এবং জাতীয়তাবাদী মৎস্য দলের কেন্দ্রীয় নেতা ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির।

অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম বলেন, দল মনোনয়ন দিলে তার নির্বাচন করার যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে। এলাকায়ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কাজী খায়রুজ্জামান শিপন বলেন, উপনির্বাচনে দলের প্রার্থিতার একজন শক্ত দাবিদার তিনি। ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে তিনি একাধিকাবার কারাগারে গেছেন। তার পরও নেতাকর্মীদের পাশে রয়েছেন তিনি। এসব মূল্যায়ন করে দল তাকে মনোনয়ন দেবে বলে তার বিশ্বাস।

যশোর-৬: ২০ জানুয়ারি সরকারদলীয় এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুতে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসন শূন্য হয়। এ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এএইচকে সাদেকের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

এবারের উপনির্বাচনে এ আসনে প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদিক দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করায় আলোচনার ঝড় বইছে। ওয়াহিদ সাদিক প্রয়াত এমপি ইসমাত আরা সাদেকের চাচাতো দেবর। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে উপনির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওয়াহিদ সাদিক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে উপনির্বাচনে অংশ নিতে বলেছেন। এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করতেই প্রার্থী হতে চান তিনি। দলীয় মনোনয়ন পেলে যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দিয়ে তিনি ঢাকায় চলে আসবেন এবং প্রতি সপ্তাহেই কেশবপুরে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে প্রয়াত ইসমাত আরা সাদেকের মেয়ে নওরীন সাদেকও সংবাদ সম্মেলন করে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার, কেশবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এইচএম আমির হোসেন, কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জীবন বীমা করপোরেশনের পরিচালক শেখ রফিক আলম এবং সাংবাদিক শ্যামল সরকার এই আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে তৎপর।

গত নির্বাচনে যশোর-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আবুল হোসেন আজাদ। কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজাদ এবারও ভোটে লড়তে চান। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু এবং কেশবপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুস সামাদ বিশ্বাসও প্রার্থী হতে নানা মাধ্যমে দৌড়ঝাঁপ করছেন।

বগুড়া-১: ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত টানা তিনবারের এমপি আবদুল মান্নান মারা গেলে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসন শূন্য হয়। উপনির্বাচনে আবদুল মান্নানের স্ত্রী ও সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহদারা মান্নানের নাম জোরালো আলোচনায় রয়েছে। তাদের একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সজল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। উপনির্বাচনে তাকেও প্রার্থী হিসেবে ভাবছেন অনেকে।

এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আরও আলোচনায় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আবদুল মান্নানের ভায়রা সিদ্দিকুর রহমান, সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র আলমগীর শাহী সুমন এবং আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মোজাহেদুল ইসলাম বিপ্লব।

গত নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম। এবারও মনোনয়ন চান তিনি। এ ছাড়া জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন চৌধুরী এবং সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকিরও ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী। পূর্বপশ্চিমবিডি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:৪৪ | শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com