| মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক ১৮ জন আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিদেশে কে কোথায় আছেন, তা আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি। তাদের ফিরিরে আনতে সরকার আইনি এবং কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি নেতা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শেষ হয়েছে।
আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ‘ল’ পয়েন্টে উত্তর ও যুক্তিতর্ক খ-ন শেষে মামলার রায় ও আদেশের দিন ধার্য করবেন আদালত।
সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এই ৩ আসামি হলেন- জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শহীদুল আলম বিপুল। এখন ৪৯ আসামির বিচার চলছে।
এর মধ্যে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন এখনো পলাতক। লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, সাবেক তিন আইজিপি ও পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন নেতা আব্দুল মাজেদ বাটসহ ২৩ জন আসামী কারাগারে ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন। এ মামলায় ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পলাতক আসামিদের মধ্যে বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। এছাড়া, মাওলানা তাজউদ্দিন আহমেদ ও তার ছোট ভাই রাতুল বাবু দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন।
সাবেক বিএনপি সংসদ সদস্য কাজী মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সৌদি আরবে আছেন এবং হারিস চৌধুরী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেছেন বলে জানা গেছে। তবে বর্তমানে কোথায় আছেন সে সম্পর্কে গোয়েন্দা সূত্র সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি।
দু’জন শীর্ষস্থানীয় সন্দেহভাজন-সাবেক মেজর জেনারেল এটিএম আমিন এবং সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। এছাড়া, মোহিবুল মুস্তাকিন ও তার ভাই আনিসুল মুরসালিন বর্তমানে ভারতে তিহার জেলে রয়েছেন।
জঙ্গি নেতা শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর, ইকবাল, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর, মাওলানা লিটন ওরফে রেজাবাইর ওরফে দেলোয়ার, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তদানিন্তন উপ-কমিশনার (পূর্ব) এবং উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ওবায়দুর রহমান এবং খান সাঈদ হাসান বিদেশে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে উল্লেখ করে সূত্র জানায়, তাদের বেশির ভাগই পাকিস্তানে রয়েছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এইদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
এই হামলায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন নেতা সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।
এছাড়াও এই হামলায় আরো ৫শ’ জন নেতা-কর্মী আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। বাসস।
Posted ২০:৪৭ | মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain