শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হয়রানির শিকার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা

  |   মঙ্গলবার, ১২ জুন ২০১৮ | প্রিন্ট

হয়রানির শিকার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা

নগদ অর্থ বহনের ঝামেলা এড়ানো ও বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার কারণে দেশে কার্ডে লেনদেনের পরিমান কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা। গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হয়েছে এমন ১০ টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার অভিযোগ রয়েছে। এরুপ পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর অতি মুনাফার প্রবণতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদাসীনতা এর জন্য দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নগদ অর্থ বহনের ঝামেলা এড়ানো, কেনাকাটায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে সুদবিহীন ঋণ পাওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধার কারণে এক শ্রেণির গ্রাহকদের মাঝে বাড়ছে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে বর্তমানে দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংগুলোর সরবরাহ করা কার্ডের সেবার আওতায় রয়েছে প্রায় ১০ লাখ গ্রাহক।

তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, সুদের উচ্চ হার, নামে-বেনামে অদৃশ্য ফি আদায়সহ নানা কারণে অনেকের কাছে এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রেডিট কার্ড। এতে প্রতি বছরই ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন কৌশলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণারও অভিযোগ বাড়ছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই উচ্চহারে বাৎসরিক ফি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বেসরকারি সিটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী একজন বলেন, ‘তারা বলেছিলো, আমি যদি বছরে আঠারোটি ট্রানজেকশন করি তাহলে বাৎসরিক যে চার্জ সেটা আসবে না। কিন্তু কিছুদিন পরেই আমি দেখলাম তারা আমার সেই কার্ডটা কেটে নিয়েছে।’

আরেক ব্যবহারকারী বলেন, ‘দেশের বাইরে পেমেন্টের ক্ষেত্রে অনেক সময় ওনারা ডিসকাউন্টের কথা বলেন। তবে পে করার পরে দেখা যায় ওর মধ্যে অনেক হিডেন চার্জ আছে। আমাকে ডিসকাউন্ট দেয়নি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গ্রাহক হয়রানির শীর্ষে থাকা ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে শুধু ২০১৬-১৭ অর্থবছরেই প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার অভিযোগ করেছে। অভিযুক্ত ব্যাংগুলোর শীর্ষে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দ্বিতীয় অবস্থানে সর্বাধিক ৩ লাখ কার্ড সরবরাহকারী বেসরকারি সিটি ব্যাংক। কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়া ও নানা প্রতারণার শিকার হয়ে এই সময় ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৮৫১টি অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। যা এর আগের বছরের অভিযোগের তুলনায় দেড় হাজার বেশি।

এছাড়া সিটি ব্যাংকের এক গ্রাহকের কার্ডের তথ্যে দেখা যায়, ৬ লাখ টাকা লিমিটেডের একটি এমেক্স ক্রেডিটি কার্ড সংগ্রহ করে কোনো লেনদেন না করা সত্ত্বেও তার নামে বিভিন্ন চার্য ও জরিমানাসহ ২৩ হাজার ৯৭৭ টাকার বিল আসে। এছাড়া জরিমানার হারও ছিলো একেক মাসে একেক রকম।

এ বিষয়ে কিছু অভিযোগের প্রমাণসহ যোগাযোগ করা হলে সব দায় গ্রাহকের উপর চাপালেন সিটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের হেড অব প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট মাসুদুল হক ভূইয়া।

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকের বুঝার কিছু সমস্যা থাকে। কার্ডে যেটা লেখা থাকে সেটা হয়তো না বুঝেই অনেক সময় অভিযোগ জানাচ্ছে। আমরা এই ব্যাপারে খুবই সচেতন। কাস্টমারের অভিযোগগুলো আমরা সিরিয়াসলি দেখি।’

তবে বাংলাদেশে ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলছেন, ব্যাংকগুলোর অতি মুনাফার প্রবণতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদাসীনতা এর জন্য দায়ী।

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের মুনাফা লাভ করার টেন্ডেন্সি একটু কমাতে। আমার মনে হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের খুব গভীরভাবে এবং শক্তহাতে এগুলো ডিল করা উচিৎ।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কথা বলতে রাজি হননি বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান মুখপত্র দেবাষীশ চক্রবর্তী। সূত্র: সময় টিভি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:১২ | মঙ্গলবার, ১২ জুন ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com