শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসিনার হাতে দেশ একমুহূর্তও নিরাপদ নয়: বি চৌধুরী

  |   বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | প্রিন্ট

হাসিনার হাতে দেশ একমুহূর্তও নিরাপদ নয়: বি চৌধুরী
b chowdhury
নিজস্ব প্রতিবেদক, 

ঢাকা : সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের মানুষ একমুহূর্তও শেখ হাসিনার হাতে নিরাপদ নয়। তার অঙ্গুলি হেলনে দেশে আগুন জ্বলছে। জনগণের দাবির কোনো গুরুত্ব তিনি দেন না। প্রতিটি ধর্মের মানুষ এই সরকারের কাছে লাঞ্ছিত ও চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছে।”

বুধবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন, ঘোষিত তফসিল বাতিল এবং পেশাজীবী ও জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবী’ শীর্ষক এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চলমান আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশ বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে বি চৌধুরী বলেন, “প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসা হাসিনার সরকারকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী ঢাকার সরকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ রাজধানী ঢাকার বাইরে দেশের আর কোথাও সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণই এখন নেই। আন্দোলনে দেশের মানুষের একাত্মতার কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। আর শেখ হাসিনার প্রতি জনগণ এতটাই ক্ষুব্ধ যে প্রয়োজনে আরো রক্ত দিতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
তিনি বলেন, “বাংলার মাটি, দুর্জয় ঘাঁটি’ একথা শেখ হাসিনা উপলব্ধি করতে পারেননি বলেই আজ দেশে এত অশান্তি। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নিজের একক ইচ্ছায় সংবিধান পরিবর্তন করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি সংবিধান থেকে একচুল নড়বেন না, সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেনকে তিনি ধমক দেন। স্বৈরাচারি মনোভাবের এ এক অভূতপূর্ব নিদর্শন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তার একদলীয় সরকার গঠনের ষড়যন্ত্রের কথা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে।”
প্রধানমন্ত্রী সংবিধান পরিবর্তন না করলে এত আন্দোলন হতো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জনগণ মাঠে নামলে তাদের ঠেকাবে এমন কোনো শক্তি নেই। আর প্রধানমন্ত্রী জনগণের সামনে নতি স্বীকার না করলে তারা অচিরেই মাঠে নামবে।”
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্যাতনের নিন্দা করে তিনি বলেন, “আল্লাহ্‌-রাসুলের বিরোধিতা করা নাস্তিকদের জামিন হয় এদেশে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতা করলে তার সাত বছরের জেল হয়ে যায়। শেখ হাসিনা কি সৃষ্টিকর্তার চাইতেও বড়? অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় তিনি পেশাজীবীদের নেতা মাহমুদুর রহমানের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন বহুদিন ধরে।”
এরশাদকে ‘রাজনীতির কলঙ্কিত অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “এরশাদ, ইনু, মেনন নৌকা প্রতীকের অধীনে নির্বাচন করছেন। নিঃসন্দেহেই এটা একতরফা একদলীয় নির্বাচন। এখন এরশাদ যদি নির্বাচন প্রত্যাহার করে তাহলে কার্যত সব শেষ হাসিনার।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “দেশের সামনে নতি স্বীকার করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন, আমরা সব দল সানন্দে অংশগ্রহণ করব। জনগণও আনন্দের সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবে। কিন্তু তা না হলে জনগণের মাধ্যমে যে বিদ্রোহ শুরু হবে তা ঠেকানোর ক্ষমতা আপনার নেই। আপনি ভুলে যাবেন না, সবার আগে দেশ আর দেশের মানুষ, আপনি বা আপনার ক্ষমতার লোভ নয়।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরো বলেন, “আপনার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমেই সব সংঘাতের শুরু। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। ইতিহাস অত্যন্ত নির্মম। ইতিহাস কোনো ভুল ক্ষমা করে না।”
অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যাব)-এর সদস্য সচিব ও কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সঞ্চালনায় এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর একাংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজীর সভাপতিত্বে পেশজীবীদের এই সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিএফইউজে’র (একাংশ) মহাসচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, কাদের গণি চৌধুরী, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ডক্টরস্‌ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সভাপতি অধ্যাপক ডা: আজিজুল হক, সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন আহমেদ, জাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বারী, ঢাকা বার আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া প্রমুখ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:৫৬ | বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com