বুধবার ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

হামলা ভাংচুরের নির্দেশ দাতা এমপি রতন সহ সেই ঘটনায় জড়িতদের কারন দর্শানোর নোটিশ

  |   রবিবার, ০১ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট

হামলা ভাংচুরের নির্দেশ দাতা এমপি রতন সহ সেই ঘটনায় জড়িতদের কারন দর্শানোর নোটিশ


সিলেট প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতির অফিসে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপির নির্দেশে গত ২৭ মার্চ এমপি বলয়ের নেতাকর্মীদের দ্বারা সংগঠিত সেই হামলা ভাংচুর , জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেয়াল থেকে টেনে ছিড়ে ভাংচুর করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীমীগেড়র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্থ , জেলা এমনকি সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিব্রতবোধ হয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন।’

২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্য্যন্ত তিন দিনে এমপি রতন বলয়ের নেতাকর্মীদের দ্বারা প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারন সম্পাদককে জেলা আ’লীগের পক্ষ্য থেকে ইতিমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। ’ জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ব্যরিষ্টার এম এনামুল কবীর ইমন রোববার দুপুরে গণমাধ্যমকে ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।’

ধর্মপাশার ঘটনায় জেলা আ’লীগ’র পক্ষ্য থেকে দলীয় শৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে তদন্ত করে দ্রুত সময়ে মধ্যে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এমপি রতন সহ ওই ঘটনায় জড়িতদের কারন দর্শাণোর নোটিশ প্রেরণ করা হচ্ছে। ২৯ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধায় সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগের কার্যালয়ে কার্যকরী কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা পরদিন ৩০ মার্চ প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যকে জানানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন জেলা আ’লীগের অ্যাডভোকেট নুরে আলম সিদ্দিকী উজ্জল ।

জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার আ’লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের সুত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন এমপি ও তার ব্যাক্তিগত অনুসারীরা নির্বাচনী এলাকায় একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড ঘটিয়ে যাবার পর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের দিন ২৬ মার্চ অনুষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে এসে এমপি রতন নিজেই ধর্মপাশা জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে খেলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় ক্যান্টেন নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে দলীয় নেতাকর্মী বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র -ছাত্রী অভিভাবক ও প্রশাসের সামনেই লাঞ্চিত করার পর দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন।’

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগণ এমপির রতনের অসদাচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেন।’ একই ঘটনায় প্রতিবাদ করায় পরদিন ২৭ মার্চ দলীয় সহ সভাপতির অফিসে এমপির রতনের অনুসারীরা ডুকে হামলা চালিয়ে টিভি, ফ্রিজ আসবাবপত্র ভাংচুর করার পাশাপাশী অফিনেসর দেয়ালে টাঙ্গানো জাতীরজনক ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টেনে নামিয়ে ভাংচুর করে বেরোয়া তান্ডব চালিয়ে বীরদর্পে এমপির অনুসারীরা বেড়িয়ে আসে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক থানা পুলিশকে অবহিত করলেও ওসি অফিস পরিদর্শন করে ভাংচুর ও ছবি ছিড়ে ভাংচুর করার আলাম দেখেতে পেয়ে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় আলামত জব্দ না করেই থানায় ফিরে যান। পরদিন এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলেও ধর্মপাশা থানার ওসি এমপির রতনের ভয়ে মামলাও নেননি। ওই ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে ২৮ মার্চ রাতে একদল দুবৃওদের দ্বারা এমপি রতন অনুসারী এক নেতার অফিস ভাংচুর করিয়ে এ ঘটনায় দায় আলমগী কবির ও দলের অপরাংশের নেতাকর্মীদের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করেন।’

জেলা আ”লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্জ নুরুল হুদা মুকুট সহ দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী রোববার নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন,‘ দলীয় একজন রাজনৈতিক নেতার অফিস ভাংচুর এবং জাতীর বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের ঘটনা অতিমাত্রায় দৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয় ,বিষয়টি কোনভাবেই কাম্য নয়।’

শিক্ষক লাঞ্চিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে গত ২৭ মার্চ সুনামগঞ্জ -১ আসসের এমপি রতনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ওই দিন গণমাধ্যমের নিকট শিক্ষক লাঞ্চিত করার অভিযোগ অস্¦ীকার করে বলেছিলেন, আমি কী পাগল, প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করব? আমি ওই শিক্ষককে ডেকে এনে শুধু বিদ্যালয়ের মাঠটি নষ্ট করে ক্যান্টিন নির্মাণ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। ’

ধর্মপাশায় আ’লীগ নেতার অফিস ভাংচুরের নির্দেশ প্রদানের অভিযোগ ও জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেয়াল থেকে নামিয়ে টেনে ছিড়ে ভাংচুর করার প্রসঙ্গে ২৮ মার্চ রাতে ফের এমপি রতনের বক্তব্য জানতে চাইলে ওই রাতে তিনি ওই রাতে ফের গণমাধ্যমেকে বলেন, হামলা -ভাংচুর করার জন্য আমি কাউকে নির্দেশ দেইনি। জনতা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর কবির বিদ্যালয়ের মাঠ নষ্ট করার পরিকল্পনা করেছেন। তার স্বার্থ হাসিল করতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলো ঢাকতেই সে আমার বিরুদ্ধেএ ধরণের মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলমগীর কবির রোববার বলেন,‘২৭ মার্চে সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপির নির্দেশে তার অনুসারীগণ আমার অফিস ভাংচুর, বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেয়াল থেকে টেনে নামিয়ে ছিড়ে ভাংচুরের ঘটনার বিষয়ে আমি কোন মিথ্যা কথা বলিনি।’ আমার কাছে ওই দিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজও আছে, যা দলের জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃৃন্ধের নিকট প্রমাণ সরুপ পাঠাব শ্রীঘই।’ থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা নেননি জানিয়ে ওই নেতা আরো বলেন ,এ ঘটনার জন্য আমি ও দলীয় নেতাকর্মীরা থানায় গেলে মামলা না নেয়ায় দলের জেলা ও কেন্দ্রিয় আ’লীগ নেতৃবৃন্ধের নিকট ঘটনার তদন্ত ও বিচারপ্রার্থী হয়েছি।’

ধর্মপাশা উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিছ রোববার বলেন, যারা আ’লীগ করেন তারা কোনদিন জাতীর জনক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করতে পারেন না।’ তিনি আরো বলেন , আমি সহ সভাপতি আলমগীর কবিরের মুখেই ওই ঘটনাগুলি শুনেছি কিন্তু নিজের চোখে দেখিনি এরপরও এসব ঘটনার নেপথ্যে যারা জড়িত তাদের ব্যাপারে সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ’

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন রোববার গণমাধ্যমকে বলেন,‘ ধর্মপাশার ঘটনা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ও সাধারন সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকেও জানানো হয়েছে , উনারা বলেছেন দায়িদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশী প্রয়োজেনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করতে। তিনি আরো বলেন, ধর্মপাশায় উপজেলা আ’লীগের সহ সভাপতির অফিস ভাংচুরের সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের অভিযোগ ওঠায় জেলা আ’লীগের সকলেই ব্যথিত হয়েছেন।

যারা ছবি ভাংচুর করে দৃষ্টতা দেখিয়েছেন প্রথমে তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া এমনকি ঘটনার ইন্দন দাতা ও জড়িতদের খুব দ্রুতই কারন দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করে ৭ দিনের ভেতর জবাব চাওয়া হবে।’ পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির সকল সদস্যকে চিঠি দিয়ে ওই সিদ্ধান্ত জানিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।’

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২৩:২৬ | রবিবার, ০১ এপ্রিল ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com