বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হতাশ হাসিনা, মোদি বিচলিত

  |   মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭ | প্রিন্ট

হতাশ হাসিনা, মোদি বিচলিত

ভারত মনে করছে, তিস্তা নিয়ে একেবারে খালি হাতেই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে৷ গতকাল সকালে নয়াদিল্লির এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘মোদিজি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ কিন্তু দিদিমণি কী করবেন, তা আমি জানি না৷ আমার সঙ্গে কথা বলার সময় তো অন্য অবস্থানই নিলেন।’ প্রধানমন্ত্রী স্বভাবসুলভ হাসির ছলে হিন্দিতে কথাগুলো বলেছেন বটে , কিন্তু স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী মোদির কথায় আশ্বস্ত হওয়ার পর মমতার আপত্তিতে হতাশ তিনি।

ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণ এই সময় তাদের এক প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই ধাক্কা এল এমন একটা সময়ে, ঠিক যার পরের বছর বাংলাদেশে ভোট।’

এদিকে তিস্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব খারিজ করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গতকাল মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই বৈঠক ছিল নেহাতই রাজ্যের আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত। কিন্তু বিজেপি সূত্রে জানা যায়, তিস্তা প্রসঙ্গও সেখানে উঠেছিল এবং আগের অবস্থান থেকে একটুও সরে আসেননি মমতা৷

মমতা সাফ জানিয়ে দেন, ‘যা প্রস্তাব দেওয়ার, তা তো দিয়েই দিয়েছি৷ এ বার কেন্দ্রীয় সরকার সমীক্ষা করে দেখুক।’

এদিকে এটা তো স্পষ্ট যে, তোর্সা নিয়ে মমতার বিকল্প প্রস্তাবে সম্মতি নেই কেন্দ্রের ও বাংলাদেশ সরকারের।

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এই অবস্থায় তো কেন্দ্রীয় সরকারের সামনে একটা রাস্তাই খোলা রয়েছে। সেটা হলো, রাজ্যের আপত্তি উপেক্ষা করে চুক্তি সম্পাদনের পথে এগিয়ে যাওয়া৷ তিস্তা হল আন্তর্জাতিক চুক্তি৷ সেই ক্ষেত্রে এই চুক্তি করার অধিকার কেন্দ্রের রয়েছে৷ কিন্তু সেটা করতে গেলে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।

ফলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করার পরেও তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিচলিত হওয়াটা স্বাভাবিক৷ এছাড়া ক্ষমতায় আসার পর থেকে মোদি নিজেকে বাংলাদেশবান্ধব দেখানোর চেষ্টা করেছেন এবং অনেকাংশে সফলও তিনি। কিন্তু তিস্তা চুক্তি না হলে তার এই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে৷

অন্য দিকে, বাংলাদেশে বিরোধিদের অভিযোগ শেখ হাসিনা আসলে নয়াদিল্লির হাতের পুতুল৷ তার সাম্প্রতিক সফরে তিস্তা চুক্তি না এগুনোয় বিরোধিরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন যে, পুতুল হয়েও তো লাভের লাভ কিছুই হল না।

বিজেপি নেতারা মনে করেন, তিস্তা চুক্তি না হলে শেখ হাসিনা বিপাকে পড়বেন৷ আগামী বছর ভোটে এর জন্য তিনি যদি হেরেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে আবার শরণার্থীদের ঢল নামতে পারে৷ বাংলাদেশে মৌলবাদী রমরমাও হবে৷

এছাড়া ভারতের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ চীন। বাংলাদেশকে বড়সড় আর্থিক সাহায্য ইতিমধ্যে দিচ্ছে চীন। এর মধ্যে যদি তিস্তা চুক্তি ঘিরে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনতি ঘটে, তা হলে সেই সুযোগটা পুরোমাত্রায় নেওয়ার চেষ্টা করবে বেজিং৷

এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই ভারত ছেড়ে যাওয়ার আগে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভারত-বাংলাদেশ এই দু&ই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে দু&ই দেশের মধ্যে সাধারণ পানির উৎস (কমন ওয়াটার রিসোর্সেস) দুই দেশকে ঐক্যের বন্ধনে বাঁধতে পারে৷ পানি বণ্টন হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের সুসম্পর্কের মূল চাবিকাঠি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:২১ | মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com