বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি

  |   মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট

সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ। চলমান বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে রাজধানীতে গণপরিবহন ছাড়া প্রায় সব ধরনের গাড়ি সড়কে চলতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিন পুলিশের চেকপোস্টে কড়াকড়ি দেখা গেলেও আজ দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র।

 

রাজধানীর কোনো কোনো সড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপও দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে সরেজমিনে গাবতলী, শ্যামলী, আসাদগেট, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ধানমন্ডি, মালিবাগ, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন ও মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট নেই। কোনো কোনো মোড়ে চেকপোস্ট থাকলেও তাতে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

 

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে দুজন এবং রিকশায় ২-৩ জনও চলাচল করছে। মোটরসাইকেলে দুজন চলাচল করলেও পুলিশ তাদের দেখে অনেকটা নিশ্চুপ অবস্থায় রয়েছে। এমনকি মোটরসাইকেলে ডেকে ডেকে যাত্রী তুলতেও দেখা যায় অনেক রাইডারকে।

 

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় প্রায় ৩০ মিনিটের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত কয়েকদিন যেখানে পুলিশের চেকপোস্ট ছিল সেখানে আজ পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

এছাড়া রাজধানীর কিছু কিছু সড়কে যানজট না থাকলেও কোথাও কোথাও সিগন্যাল লক্ষ করা গেছে। পুরো সড়কজুড়েই ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা আর মোটরসাইকেলের আধিপত্য চলছে। সড়কে মানুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কারওয়ান বাজারে কর্তব্যরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট  বলেন, ‘রাস্তায় চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও অনেকে বিনা প্রয়োজনেও রাস্তায় বের হচ্ছেন। আমরা এমন ক্ষেত্রে জরিমানা করছি। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। তবে জরুরি সেবায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা অবাধে চলাচল করতে পারছেন।

 

এ বিষয়ে রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. রেফাতুল ইলসলাম বলেন, ‌‘রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেও দিনের পর দিন সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে মাঠে থেকে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ২টা থেকে সড়কে যতক্ষণ গাড়ির চাপ থাকে ততক্ষণ দুটি শিফটে কাজ করছে। বৃষ্টির জন্য ট্রাফিক সদস্যদের রেইন কোট ও ছাতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘‌মানুষ নানা অজুহাত দিয়ে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও সবারই জরুরি কাজের অজুহাত। সকালে অফিস টাইমে গাড়ির চাপ কিছুটা বেশি থাকে। এরপর ১১টার পর সেই চাপ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আবার বিকেল ৪টার পর কিছুটা চাপ থাকে। তবে সব সময়ই পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করেন সড়কে থাকার জন্য।’

 

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামাল উদ্দীন  বলেন, ‘বাসা থেকে রাস্তায় বের হলেই চারদিকে মানুষ আর মানুষ। এতো মানুষের ভিড় তাতে বিধিনিষেধ মনেই হচ্ছে না। রিকশা ভাড়া দিতে দিতে গত কয়েকদিনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বাসটাই শুধু চলছে না। বাস চললে অন্ততপক্ষে যাতায়াতে কিছু টাকা খরচ কম হতো।’

বাংলামোটর সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা শফিকুল ইসলাম নামে একজন  বলেন, ‘এটার নাম বিধিনিষেধ! সড়কে দেখেন কত গাড়ি চলছে। পুলিশের কোনো বাধা নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা না করে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। কষ্টে পড়ে মানুষগুলো সড়কে নামছে। তাই পুলিশ কিছুই করতে পারছে না। এভাবে টানা লকডাউন থাকলে মানুষ না খেয়ে মরে যাবে।’

সকালে বৃষ্টির মধ্যে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন নাজমুন নাহার। তিনি  বলেন, ‘অফিসের কাজে উত্তরা যেতে হবে। সেখানে একটি জরুরি মিটিং। কিন্তু একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে বিধিনিষেধ। রাস্তায় গণপরিবহন নেই। কীভাবে যাবো বুঝতে পারছি না।

 

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে চতুর্থ দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হাতে গ্রেফতার হন ৫৬৬ জন। আর ১৬৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয় এক লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা।

 

এছাড়া ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক ৪৪৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলায় জরিমানা করা হয় ১০ লাখ ২২ হাজার টাকা। চার দিনে রাজধানীতে মোট গ্রেফতার হয়েছেন এক হাজার ৯৩৯ জন।

 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।সূএ:জাগো নিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:১৮ | মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com