শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় ১৯ দলের নেতারা : অবৈধ সরকার হটাতে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে এগিয়ে এসো তরুণ, যুদ্ধজয়ের কৌশল দেবো : অলি আহমদ

  |   মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০১৪ | প্রিন্ট

swadhinota-dibosher-aloc

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান অবৈধ সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে উল্লেখ করে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা বলেছেন, অবৈধ এ সরকারকে সরাতে বৃহত্তর গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। তাই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে দিতে। এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঘরের মধ্যে স্লোগান দিয়ে কাজ হবে না। তাদের পতন ঘটাতে হলে সবাইকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। এই সরকারের কাছে মিথ্যা গণতন্ত্র প্রত্যাশা করে লাভ হবে না। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে। তারা বলেন, আদালতের রায়ে এদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, স্বাধীনতা আসেনি। মুক্তিযুদ্ধ করেছি গণতন্ত্রের জন্য। অথচ আজ সেই গণতন্ত্রের ভাগ্যে ঘনঘটা।

তারা বলেন, দেশের প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। তারা সরকার পতনে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করার হুমকি দেন। বলেন, এমন পরিবেশ তৈরি করা হবে যাতে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকলেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও নজরুল ইসলাম খান, এলডিপি সভাপতি কর্নেল অলি আহমেদ বীর বিক্রম, ১৯ দলের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন-নবী খান সোহেল, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মো. মালেক প্রমুখ।
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না। রাজপথে জনতার ঢল নামতে হবে। তাহলেই এই সরকারের পতন ঘটানো যাবে, অন্যথায় নয়। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে এদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। আদালতের রায়ে স্বাধীনতা আসেনি। যে জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি সেই গণতন্দ্রের ভাগ্য এখন কোথায়।
আওয়ামী লীগ সংসদ নির্বাচনেও উপজেলার মতো আচারণ করত বলে দাবি করেন ১৯ দলীয় জোটের শরিক দল এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। তিনি বলেন, প্রমাণ হয়েছে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং জাতীয় নির্বাচনে ১৯ দলের অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল। আর আওয়ামী লীগের চরিত্র তরুণ প্রজন্মের জানা দরকার ছিল। উপজেলায় অংশ নেয়ায় তারা সে সুযোগ পেয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের ঘরের মধ্যে স্লোগান নয়, রাজপথের আন্দোলনে নামতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কর্নেল (অব.) অলি বলেন, ‘আমরা রণাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে এনেছিলাম। যুদ্ধে জয়লাভের কৌশল আমরা জানি।’ তিনি তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আজকে তোমরা যারা যুবক-তরুণ, এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এগিয়ে এসো। আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার কৌশল আমরা তোমোদের দেবো।’

আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ বলেন, ‘শেখ মুজিব স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। এ কারণে তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। তাকে যদি জাতির পিতা বলা হয়, তবে মওলানা ভাসানী জাতির পিতামহ। কারণ, তিনি স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, চর দখলের মতো সরকার এবং তার অনুগত নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচন দখল করেছে। এটাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে যারা কেন্দ্র দখল করছে, তাদেরই বিজয়ী ঘোষণা করা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্র নয়। তিনি বলেন, স্বাধীনতার চেতনা, গণতন্ত্রে বিশ্বাস এবং জিয়াকে নেতা মানি। আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। তাই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করে সেই চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণাই দেননি, তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপতি দাবি করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনের জন্য সারা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও শহীদ জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, যতদিন বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে থাকবে ততদিন শত চেষ্টা করেও জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা যাবে না। কারণ, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত। ১৯৭১ সালে শেখ মুজিব দেশের জনগণকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে না পারলেও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু তার আগেই তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। এরপর মেজর জিয়া দেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়ে নিজ জীবন বিপন্ন করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণার ফলেই দেশ-বিদেশের মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা জানতে পারেন। বন্ধু রাষ্ট্রগুলো আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৮:০৭ | মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com