| শনিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আহসান খানকে দায়িত্ব থেকে ছয় মাসের অব্যাহতির সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেছেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সত্যটা তুলে ধরার জন্য সিপিবি নেতা মঞ্জুরুল আহসান খানকে ছয় মাসের জন্য অব্যাহতি দেয়া হয়েছে দল থেকে। আমি অবাক হই, আপনারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, এটা কি গণতন্ত্র? এখানে স্বাধীনভাবে কথা বলার কি সুযোগ নেই?
শনিবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন হানিফ।
হানিফ বলেন, তিনি তো (মঞ্জুরুল আহসান খান) সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের অসত্য বা বিভ্রান্তিমূলক কোন তথ্য দেন নাই। উনি যেটা সঠিক, চোখে দেখছেন, যেটা দৃশ্যমান সেই উন্নয়নের কথা বলেছেন। এতে সিপিবির নেতারা নাখোশ হয়ে তাকে ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এটা হলো আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের চরিত্র। তারা সরকারের উন্নয়ন চোখে দেখে না। তারা সরকারের বিরুদ্ধাচার করে যাচ্ছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর একটি পত্রিকায় মঞ্জুরুল আহসান খানের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি লেখেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যমুনা সেতু ও পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। দেশ ক্রমেই উন্নত দেশের পর্যায়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সমাজতান্ত্রিক শোষণমুক্ত বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর মানচিত্রে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
গত শুক্রবার সিপিবি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবির) উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আহসান খান কর্তৃক একটি দৈনিক পত্রিকায় লিখিত প্রবন্ধের একটি অংশ ও অন্য একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে বক্তব্য বর্তমান সরকার সম্পর্কে পার্টির দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যায়ন ও রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম সভায় তাকে ৬ মাসের জন্য উপদেষ্টাসহ পার্টির অন্যান্য দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিএনপির সমালোচনা করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আপনারা কথায় কথায় দুর্নীতির কথা বলেন। দুর্নীতি সারা পৃথিবীতে কম বেশি রয়েছে। আমাদের এখানে যে নেই, সেটা বলব না। কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। যার বিরুদ্ধে যখন কোন অভিযোগ উপস্থাপিত হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দেয় না। আপনারাতো দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। হাওয়া ভবন বানিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারা দেশে অপকর্ম করেছিলেন। পার্থক্য এটাই আমরা দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিষয়ে কঠোর। সেই দুর্নীতি সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতা–কর্মী বা যে কেউ হোক না কেন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতার কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করছে। তারা আজ উন্নয়ন দেখে না। অথচ অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি অর্থনীতিকে পঙ্গু করে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিএনপি নেতা মেজর আখতার কয়েক দিন আগেই বলেছেন বিএনপির বর্তমানে যে নেতৃত্ব বিদ্যমান রয়েছে, তারা সরকারে যাওয়ার চেয়েও শেখ হাসিনার সরকার হাজার গুণ ভালো। এটা আমাদের কথা নয়, ওনাদের দলের নেতার কথা।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল, পঙ্কজ দেবনাথ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
Posted ২১:৪৮ | শনিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain