শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারে কোনো সমন্বয় নেই : মির্জা আলমগীর

  |   সোমবার, ১৬ জুন ২০১৪ | প্রিন্ট

সরকারে কোনো সমন্বয় নেই : মির্জা আলমগীর

fokrul islam alamgir

ঢাকা, ১৬ জুন : সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  সোমবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।  নুর হোসেনের গ্রেফতারের ঘটনায় সৈয়দ আশরাফের করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মির্জা আলমগীর বলেন, সৈয়দ আশরাফের কথায় প্রমাণ হয়- সরকারের মাঝে কোনো সমন্বয় নেই। তাদের একটাই লক্ষ্য কিভাবে চুরি করা যায়, লুটপাট করা যায় এবং বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও অপহরণ করা যায়। তাদের এসব কাজের একটাই উদ্দেশ্য ক্ষমতাকে এককভাবে কুক্ষিগত করা।

কালশীর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ১৩ জুন যখন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে ইবাদতে ব্যস্ত ঠিক; তখনই দুষ্কৃতিকারীরা ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়। আমরা সেখানে গিয়েছি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, তার বক্তব্য শিষ্টাচার বহির্ভূত। সরকার নিজেদের সব অপকর্ম ঢাকতে এবং জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

মির্জা আলমগীর বলেন, অবৈধ অনৈতিক সরকারের ভীত নেই, রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা ব্যর্থ। নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীর ঘটনা এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ। তাদের এসব অপকর্ম ঢাকতেই তারা একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটাচ্ছে।  ধানম-ির ৩২ নাম্বারের বাড়িতে তাকে (শেখ হাসিনা) ঢুকতে দেয়া হয়নি গত শনিবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিনি দেশে ফিরে আসার ৫ দিনের মধ্যেই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া সকল কিছু বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমি জানি না একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে কেন এত অস্ত্র থাকতে হবে।

খালেদা জিয়া এরশাদের কাছ থেকে বাড়ি এবং টাকা নিয়েছেন এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়ার শাহাদাতের পরে তার পরিবারের ব্যয় নির্বাহের জন্য অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভা ১২ জুন ১৯৮১ ও ১৯ মার্চ ১৯৮২ তারিখে খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্রের অনুকুলে বাড়ি, নগদ টাকা এবং আরো কিছু সুযোগ সুবিধা অনুমোদন করে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রেসিডেন্টের  পক্ষে মিলিটারি এস্টেট অফিসার ৬ নং শহীদ মইনুল রোডের বাড়িটি রেজিস্টার্ড দলিলের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেন ৮ জুলাই ১৯৮১। তৎকালীন সময়ের পার্লামেন্টে বিল পাশের মাধ্যমে সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবারকে এ অনুদান দেয়া হয়। খালেদা জিয়া এরশাদের কাছ থেকে বাড়ি নেননি।

বিএনপি কখনোই এরশাদকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করেনি দাবি করে মির্জা আলমগীর বলেন, এরশাদ সব সময় আওয়ামী লীগের সাথেই ছিল। এবং আওয়ামী লীগও এরশাদের সাথে ছিল। শেখ হাসিান ১৯৮৬ নির্বাচনে যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েও পরে অর্থের বিনিময়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। আর এখন এরশাদ নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েও ৫ জানুয়ারির পাতানো নির্বাচনে গিয়ে গৃহপালিত বিরোধী দল সেজেছেন। ৫ জানুয়ারিতে খালেদা জিয়া সামরিক অভ্যুথানের চেষ্টা করেছিলেন সরকারের মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি সব সময় সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে। তাই সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার প্রশ্নই আসে না। তিনি এসব অপপ্রচার থেকে সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরত থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, জাতি এখন চায় একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। তাই অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করারও আহ্বান জানান তিনি।  সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা সেখানে গিয়েছিলাম এবং এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কাউকে দায়ী করিনি। কিন্তু গণমাধ্যম এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে এখন বলছি- স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লা এ ঘটনার জন্য দায়ী।

তিনি আরো বলেন, বিহারি ক্যাম্পের বিদ্যুতের বিল সরকার বহন করে থাকে। আর তাই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে পাশের বস্তিতে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা নিতে তাদের চাপ দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় এমপি নিজে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাদের দেখে নেয়া হুমকি দেন এবং এর পরেই এ পৈচাশিক ঘটনা ঘটে।  তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি এবং হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন- বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি প্রমুখ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৭:০০ | সোমবার, ১৬ জুন ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com